ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আরও অবনতির সাক্ষী ২০২০!
২০১৯ সালের পুলওয়ামা আক্রমণ থেকে শুরু। তারই প্রেক্ষিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শুরু হওয়া রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক অস্থিরতা চরম পর্যায়ে পৌঁছয়, যখন জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা তুলে নেয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকার। তারপর থেকে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্কের বরফ গলার কোনও সুযোগই দেখতে পাচ্ছেন না রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বরং ২০২০ সালে করোনা ভাইরাসের আবহে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দূরত্ব আরও বেড়েছে বলা চলে।

দুই দেশের কথার লড়াই
শত শত আলোচনা, পর্যালোচনা, প্রতিশ্রুতির পরেও ভারতে চলতে থাকা একের পর এক অনুপ্রবেশকারী জঙ্গিদের হামলার পিছনে পাকিস্তানেরই হাত দেখছে ভারত। তা নিয়ে ২০২০-তেও দুই দেশের মধ্যে কথার লড়াই অব্যাহত। এর ফল স্বরূপ গত জুনে দিল্লি-স্থিত পাকিস্তান দূতাবাস ও ইসলামাবাদ-স্থিত ভারতীয় দূতাবাসে কর্মচারী সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়।

আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের ছক্কা
আন্তর্জাতিক স্তরে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে সরব হয়ে ভারতকে কোণঠাসা করার মরিয়া চেষ্টা করেছে পাকিস্তান। কিন্ত ভূস্বর্গ থেকে ৩৭০ ধারা বতিলকে অভ্যন্তরীন ঘটনা বলে আখ্যা দিয়ে উল্টে ইমরান খানের দেশকে দূরে থাকার বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকার।

লাগাতার অস্ত্র বিরতি চুক্তি লঙ্ঘন
ভাতে মারতে না পেরে লাগাতার হাত চালিয়ে যায় পাকিস্তান। বছরভর জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে যায় পাকিস্তানি রেঞ্জার্সরা। পাল্টা জবাব দেন ভারতীয় সেনাও। হতাহতের কবলে পড়েন দুই দেশের জওয়ানই। উল্টে ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে অস্ত্র বিরতির নিয়ম লঙ্ঘন করার অভিযোগ তুলে পকিস্তান। প্রতিবেশী দেশে কর্মরত ভারতীয় কূটনীতিকদের এই ইস্যুতে বারবার ডেকে বিরক্ত করতে থাকে পাক বিদেশ দফতর।

পাওয়া এবং না-পাওয়া
আন্তজার্তিক চাপে ২০০৮ মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী হাফিজ সাঈদকে চারটি মামলায় ২১ বছরের জন্য লোক দেখানো করাদণ্ডের নির্দেশ দিলেও, ভারতীয় বন্দী কুলভূষণ যাদবের মৃত্যুদণ্ড রোধে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি পাকিস্তান। করোনা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে সার্ক-ভূক্ত দেশগুলি এক ছাতার নিচে এলেও, সংগঠনের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে কাশ্মীর ইস্যুকেই বারবার প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা করে পাকিস্তান। তা নিয়ে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে নতুন করে কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়। যা এখনও অব্যাহত।

চিনের পাশে পাকিস্তান
চলতি বছর লাদাখে সীমান্ত অস্থিরতা নিয়ে বিতর্ক সমাধানের জন্য শান্তিপূর্ণ বৈঠকের নামে নিরস্ত্র ভারতীয় সেনার ওপর হামলা চালায় চিনা ফৌজ। ঘটনায় ২০ জন ভারতীয় জওয়ান শহিদ হন। ঘটনায় গোটা বিশ্ব যখন চিনের সমালোচনায় সরব, তখন বেজিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে নিজেদের আরও খেলো বানিয়ে ফেলেন ইমরান খানের দেশ।