সরকারের সঙ্গে সংঘাত হোক বা কৃষি আইন বিতর্ক! ২০২০ সালে খবরের দুনিয়ায় নয়া ইতিহাস রবীশ কুমারের
সুশান্ত সিং মৃত্যু রহস্য হোক বা টিআরপি কেলেঙ্কারি, একাধিক ইস্যুতে যখন বারংবার বিতর্ক দানা বেঁধেছে ভারতের 'বিখ্যাত’ সাংবাদিক তথা রিপাবলিক টিভির এডিটর ইন চিফ অর্ণব গোস্বামীর ভূমিকা নিয়ে, তখন অন্যদিকে নির্ভিক সাংবাদিকতার ধারা বজায় রেখেছেন আর এক প্রখ্যাত সাংবাদিক রবীশ কুমার। ২০২০ সালে একাধিকবার উঠে এসেছেন খবরের শিরোনামেও।

নির্ভীক ও সাহসী সাংবাদিকতার জন্য জিতেছেন রামন ম্যাগসেসে পুরস্কার
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নির্ভীক ও সাহসী সাংবাদিকতার জন্য রামন ম্যাগসেসে পুরস্কার পেয়েছেন এই এনডিটিভি খ্যাত সাংবাদিক রবীশ কুমার। এদিকে কোনও এশীয় ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া সর্বোচ্চ এই পুরস্কারকে এশিয়ার নোবেল পুরস্কার হিসেবেও বর্ণনা করা হয়। এর আগে এই সম্মানে ভূষিত হয়েছেন আরকে লক্ষ্মণ, পি সাইনাথ, অরুণ শৌরী, কিরণ বেদী ও অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মতো ব্যক্তিত্বরা।

রাজনৈতিক খবরের দুনিয়ায় নতুন ইতিহাস রবীশের
এদিকে স্থিতধী ব্যক্তিত্ব, ক্ষুরধার সাংবাদিকতা, তীক্ষ্ণ মেধা ও সময়ে সময়ে সরকারের একাধিক পদক্ষের সমালোচনার ক্ষেত্রে রবীশের আক্রমণাত্মক ভূমিকা বিগত কয়েক বছরে রবীশকে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে দেয়। একই সঙ্গে প্রতিটি খবরের গভীরে গিয়ে অনুসন্ধান বা সহজ কথায় ইনভেস্টিগেটিং ও পলিটিক্যাল জর্নালিজমের জন্যও ২০২০ সালে একাধিকবার নজর কাড়েন রবীশ।

তুলে নেওয়া হয় রবীশ কুমারের ফেসবুক পেজ
এদিকে চলতি বছরেই ফেসবুক-বিজেপি আঁতাতের অভিযোগে একাধিকবার সরগরম হয় ভারতের রাজ্য-রাজনীতি। ফেসবুকের ‘প্রত্যাশিত মান লঙ্ঘন' ও ‘সত্যে খবর' প্রচারের অভিযোগে এর আগে সবুক ইন্ডিয়ার কাছে ৪৪টি পেজের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায় বিজেপি। তারপর থেকেই ‘উই হেট বিজেপি', ‘দ্য ট্রুথ অফ গুজরাট' নামে একাধিক পেজ তুলে নেয় ফেসবুক। বাতিল করা হয় সাংবাদিক রবীশ কুমারের ফেসবুক পেজও। যা নিয়েও তুমুল জলঘোলা হয় রাজনৈতিক মহলে।

কৃষি আইন নিয়ে ‘ভুয়ো খবর’ ছড়ানোর অভিযোগ রবীশের বিরুদ্ধে
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০২০ সালের শেষ লগ্নে এসে কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে ফুঁসছে গোটা দেশ। প্রায় ১ মাস ধরে দিল্লি সীমান্তে আন্দোলন করছেন পাঞ্জাব, হরিয়ানা সহ একাধিক রাজ্যের একটা বড় অংশের কৃষক। এমতাবস্থায় কৃষি আইন নিয়ে রবীশ কুমারের মন্তব্য ঘিরে তুমুল বিতর্ক দেখা যায় রাজনৈতিক মহলে। চলতি মাসেই রবীশ কুমারের একটি টিভি শো কৃষি আইন নিয়ে ‘মিথ্যা খবর' ও ‘ভুয়ো তথ্য' প্রচারের অভিযোগ ওঠে। যেখানে রবীশ দাবি করেন নয়া কৃষি আইনের হাত ধরে পাঞ্জাব ও বিহারে পায়ের তলার মাটি আরও শক্ত করছে একাধিক বেসরকারি কর্পোরেট সংস্থা। পুরনো পরিকল্পনা থেকেই লাভ ওঠাচ্ছে দেশের অন্যতম বড় শিল্প সংস্থা আদানি গ্রুপ।

কৃষক আন্দোলনের মাঝেই বিরিয়ানি খেতে মত্ত রবীশ ?
অন্যদিকে চলমান কৃষক আন্দোলনের মাঝেই রবীশ কুমারকে নিয়ে বিতর্ক বাড়তেই থাকে। সম্প্রতি কৃষকদের মাঝে রবীশের একটি ছবি ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে দাবি করা হয়, চলমান কৃষক আন্দোলনের মাঝেই গাজিপুরের কৃষকদের সঙ্গে বিরিয়ানি খাচ্ছেন রবীশ কুমার। তাঁর কাণ্ড জ্ঞান ও দায়বব্ধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয় শাসক শিবিরের তরফে। যদি পরবর্তীতে জানা যায় এই দাবি কার্যত মিথ্যা। এই ছবি তোলা হয়েছিল ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে। সেই সময় দিল্লিতে কিষান মুক্তি মার্চে রিপোর্টিং-র কাজে গিয়েছিলেন রবীশ। এই ছবিটি সেই সময়েই তোলা।

আরও একটি ভাইরাল ভিডিও ঘিরে শোরগোল
এদিকে কিছুদিন আগেই একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায় কার্যত মাটিতে শুয়ে লুটোপুটি খেতে খেতে রিপোর্টি করছেন এক সাংবাদিক। অনেকেই দাবি করেন ওই সাংবাদিক আদপে রবীশ কুমার। ভিডিওটি শেয়ার করে একই দাবি করেন মধ্যপ্রদেশের পানগরের বিজেপি মালা ইন্দু তিওয়ারি। যদিও গুগগুলের অর্ন্ততদন্তের রিপোর্টে জানা যায় এই দাবি আদপে ভুয়ো।

কংগ্রেসের টিকিটে বিহারে নির্বাচনী লড়াইয়ে রবীশ কুমারের ভাই
এদিকে গোটা দেশেই নিরপক্ষে সাংবাদিক হিসাবে যথেষ্টই সুখ্যাতি রয়েছে রবীশ কুমারের। অনেকই তার বিরুদ্ধে বাম-কংগ্রেস যোগের তত্ত্ব খাড়া করলেও বরাবরই কোনও রাজনৈতিক দলের ছাতার তলায় যাওয়া থেকে বিরত থেকেছেন রবীশ কুমার। কিন্তু ২০২০ সালেই তার সেই ভাবমূর্তিতে বড়সড় ধাক্কা দেন তাঁরই সম্পর্কে ভাই ব্রজেশ পান্ডে। সদ্য সমাপ্ত বিহার বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন ব্রজেস। বিহারের পূর্ব চম্পরান জেলার গোবিন্দগঞ্জ কেন্দ্র থেকেই লড়াই দেন তিনি। যা নিয়েও তুমুল শোরগোল পড়ে যায় রাজনৈতিক মহলে।
২০২০ নিউজ মেকার: অর্ণব গোস্বামী সম্পর্কে কিছু ঘটনা একনজরে