ব্রিটেন ফেরত যাত্রীদের অর্ধেকের শরীরেই নয়া করোনা স্ট্রেন? আশঙ্কার কথা শোনাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা
জিনসজ্জায় প্রায় ১৭ রকমের বদল ঘটিয়ে আগের থেকেও প্রায় ৭০% অধিক সংক্রমক হয়ে ফিরেছে নতুন করোনা ভাইরাস। মারণ রোগের তান্ডবে ইতিমধ্যেই লকডাউনের পথে ব্রিটেন সহ ইউরোপের একাংশ। অন্যদিকে ব্রিটেনের স্ট্রেন যে ঘর ফেরত যাত্রী মারফত ছড়িয়ে পড়তে পারে সারাবিশ্বে, সে কথা আগেই জানিয়েছিলেন গবেষকরা। এখনও পর্যন্ত ভারতে ব্রিটেন ফেরত ২০ জনের শরীরে করোনা ধরা পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মত, বিলাতফেরত করোনা পজিটিভ যাত্রীদের অর্ধেকের শরীরেই রয়েছে নতুন স্ট্রেন!

ব্রিটেনের আক্রান্তদের ৬০ শতাংশের শরীরে নতুন স্ট্রেন
হায়দরাবাদের কোষ ও অণু জীববিদ্যা বা সিসিএমবি-র অধিকর্তা ডাঃ রাকেশ মিশ্র জানিয়েছেন, "ব্রিটেনে করোনা আক্রান্তদের প্রায় ৬০%-এর শরীরে করোনার নতুন রূপের দেখা পাওয়া যাচ্ছে। ফলে মঙ্গলবার ভারতে ফিরে আসা ২০ জন আক্রান্তের মধ্যে ১০ জনের শরীরে নব স্ট্রেন থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।" বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদেশফেরত প্রত্যেককে এখনই কোয়ারানটাইনে পাঠাতে হবে কারণ বি.১.১.৭ স্ট্রেনকে আটকানোর এটাই একমাত্র পন্থা।

কোন পদ্ধতিতে মোকাবিলা ?
ডাঃ মিশ্রর মতে, গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ব্রিটেনফেরত নাগরিকদের জিন সিকোয়েন্স পরীক্ষা ও কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং করাটা আবশ্যিক। যেহেতু আমেরিকার পরেই বিশ্বে সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা রয়েছে ভারতে, তাই গবেষকদের মত এখনই কড়া পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। অন্যদিকে ডাঃ মিশ্র জানাচ্ছেন, "ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মতোই আরএনএ প্রতিলিপি করে অভিযোজিত হচ্ছে করোনা। ফলে ভ্যাকসিনের ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে।"

৭০ শতাংশ অধিক সংক্রমক নয়া করোনা ভাইরাস
কোভিড গবেষকদের বক্তব্য, মানবদেহের কোষের সাথে যুক্ত হওয়ার ক্ষমতা বাড়িয়ে বর্তমানে করোনা ভাইরাস প্রায় ৭০% অধিক সংক্রমক। ডঃ মিশ্রর মতে, "করোনার এই নতুন রূপের কারণে হাসপাতালগুলিতে ভিড় বাড়বে, ফলে ভেঙে পড়তে পারে স্বাস্থ্যব্যবস্থা।" তাঁর মতে, আগে থেকে নতুন স্ট্রেনের সম্পর্কে জেনে গেলে সংক্রমণ প্রতিরোধে সুবিধা হবে প্রশাসনের। অন্যদিকে, প্রায় ৪০০০ রকমের ভাইরাসের কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকরা, যেগুলি শক্তিশালী না হওয়ার কারণে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে ভারত থেকে।

জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধির আর্জি
ডাঃ মিশ্রর মতে, "আমরা লক্ষ্যমাত্রার থেকে অনেক কম জিন সিকোয়েন্স পরীক্ষা করছি। ফলে ভারতীয় জনসংখ্যায় আদৌ নতুন স্ট্রেন মিশেছে কি না, তা বলা কঠিন হয়ে পড়ছে ক্রমশ।" তাঁর মতে, নতুন প্রকারের এই স্ট্রেন আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় ধরা পড়তেও পারে, আবার নাও পারে। তাই জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষার উপরেই ভরসা রাখছেন গবেষকরা। পাশাপাশি বড় অংশের চিকিৎসকরা আবার জানাচ্ছেন, ভ্যাকসিনগুলি একাধিক প্রোটিনকে লক্ষ্য করে এগোয়, ফলে প্রতিষেধক ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম। অন্যদিকে কিছুদিনের মধ্যেই ব্রিটেনফেরত নাগরিকদের নমুনার জিন সিকোয়েন্স করার ইঙ্গিত দিয়েছেন করোনা গবেষকরা।
ভারতে ব্রিটেন ফেরত ২৪ জন যাত্রীর শরীরে কোভিড–১৯, রয়েছেন কলকাতার ২ যাত্রী