ভোট পর্ব মিটলেও উত্তেজনা অব্যাহত কেরলে, বিরোধীদের উপর হামলা বাম আশ্রিত দুষ্কৃতীদের
ভারতব্যাপী একাধিক রাজ্যে বিজেপির জয়যাত্রার মাঝেও কেরলের পুর-পঞ্চায়েত ভোটে গলার কাঁটা হয়ে দেখা দিয়েছে বাম শিবির। ইতিমধ্যেই কেরলের ৯৪১টি পুর-পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে ৫১৪টি আসনে জিত হাসিল করে যথেষ্ট উন্মাদনার সঞ্চার হয়েছে বাম-ব্রিগেডে। যদিও সাম্প্রতিক তিনটি রাজনৈতিক হিংসার ঘটনায় আঙ্গুল উঠেছে বাম আশ্রিত গুন্ডাবাহিনীর দিকে। স্বাভাবিকভাবেই সুযোগ পেয়ে বিজেপিও নেমে পড়েছে আসরে।

কেরলে রাজনৈতিক টানাপোড়েনে বাড়ছে উত্তাপ
ভোট পর্ব মিটতেই তিনটি রাজনৈতিক সংঘর্ষের বিষয়ে বলতে গিয়ে বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র টম ভারাকখান জানিয়েছেন, "বিজেপিকে কেরলে ঢুকতে দেখে সিপিআইএম কৌশল করেই এই ঝামেলা বাধাচ্ছে।" তাঁর মতে, রাজ্য সরকার ব্যবস্থা না নিলে 'যুদ্ধকালীন' পরিস্থিতি তৈরি হবে কেরলে। যদিও 'যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি'-র কথায় বাম-ব্রিগেড ইশারা করছে আবার বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের দিকে।

আরএসএস অফিস ও বিজেপি নেতার বাড়িতে হামলা
কেরলে ভোটাভুটির ফল প্রকাশের পর থেকেই বেড়েছে রাজনৈতিক হানাহানির ঘটনা। বিজেপির অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সিপিআইএম-র গুন্ডাবাহিনী বিজেপি নেতা রথিশের বাড়িতে, সুব্রমনিয়াম মন্দির ও আলাপুজয় আরএসএস কার্যালয়ে তান্ডব চালায়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, অটোয় চেপে একদল গুন্ডা এসে সোজা রথিশের বাড়ির দেওয়ালে ধাক্কা মারে। শুরু হয় গালাগালি। এদিকে ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কেরলে। শুরু হয়ে গেছে রাজনৈতিক কাদা-ছোঁড়াছুঁড়িও।

বাম আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ
সূত্রের খবর, সিসিটিভির ফুটেজে গুন্ডাবাহিনীর হাতে পেট্রোল বোম্ব দেখা গিয়েছে। পাশাপাশি এলাকার বেশ কিছু পানীয় জলের কলও ভেঙে দেয় গুন্ডারা। অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে গুন্ডাবাহিনী সুব্রমনিয়াম মন্দির তছনছ করে রীতিমতো উল্লাসে মেতেছে। পাশাপাশি লুট হয়েছে মন্দিরের অর্থও। আর গোটা ঘটনায় অভিযোগের তীর বাম আশ্রিত দুষ্কৃতীদের উপরেই। যদিও এমন দুষ্কৃতীমূলক কাজকর্ম সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছে এলডিএফ।

কঠিন সময়ে দাঁড়িয়ে জয় এলডিএফের
এদিকে সদ্য সমাপ্ত কেরলের পুর-পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৯৪১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৫১৪টি, ৬ কর্পোরেশনের মধ্যে ৫টি ও ১৪টি জেলা পঞ্চায়েতের মধ্যে ১১টিতে জয়লাভ করেছে এলডিএফ। ২০১৬-তে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিরোধীদের নানা দোষারোপ এবং সোনা পাচারের মত ভয়ংকর অভিযোগের সম্মুখীন হয় কেরলের বাম সরকার। কিন্তু তারপরেও ক্ষমতা ধরে রাখতে সমর্থ হলেন পিনরাই বিজয়ন। এদিকে এই পুর-পঞ্চায়েতের ফলাফলেই কার্যত একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বাভাস স্পষ্ট হয়ে গেল বলেই মনে করছেন রাজনীতিবিদেরা।
অক্ষত ভারতের শেষ লালদুর্গ! একবছরের মধ্যেই বামপন্থায় বিশ্বাস ফিরল কেরলের