নয়াদিল্লি : কৃষক বিক্ষোভ চলবে। বৃহস্পতিবার এক শুনানিতে এমনই রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়েছে যতক্ষণ কোনও আন্দোলন হিংসাত্মক হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত সেই আন্দোলন চালানো যায়।

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে কোনও বিক্ষোভে বা প্রতিবাদ আন্দোলনে যদি সম্পত্তি হানি বা প্রাণহানি না হয়, তবে সেই বিক্ষোভ আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার অধিকার মানুষের রয়েছে। এই আন্দোলনে কেন্দ্র কোনও ভাবেই বাধা দিতে পারে না। বৃহস্পতিবারের এই সুপ্রিম রায়ে স্বভাবতই অস্বস্তিতে কেন্দ্রের মোদী সরকার।

নতুন বিতর্কিত কৃষি বিলের বিরুদ্ধে কৃষকদের দিল্লি জুড়ে বিক্ষোভের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করা হয়। সোই মামলার শুনানিতেই এই রায় দিয়েছে আদালত। পিটিশনে জানানো হয় এই বিক্ষোভের জেরে দিল্লি ঢোকার ও বেরোনোর সবকটি রাস্তা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। অবিলম্বে তা তুলে নেওয়া উচিত। তবে সেই আবেদনে সাড়া দেয়নি শীর্ষ আদালত।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস এ বোরদের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে আলোচনার পথ তৈরি করুক কেন্দ্র। যেখানে কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করা যাবে, তাদের দাবি দাওয়া নিরপেক্ষভাবে শুনতে পারবে কেন্দ্র। এই প্রেক্ষিতে একটি স্বতন্ত্র ও নিরপেক্ষ কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই কমিটির কাছে দুই পক্ষই নিজেদের বক্তব্য পেশ করতে পারবে। এতে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে ও সহজে সমাধান বেরিয়ে আসবে।

নিজের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশে প্রতিটি মানুষের বিক্ষোভ বা প্রতিবাদ জানানোর অধিকার রয়েছে, যতক্ষণ না তা কারোর কোনও ক্ষতি করছে। এই অধিকার খর্ব করার কোনও প্রশ্ন ওঠে না।

তবে এদিন সুপ্রিম কোর্ট কৃষকদের রাস্তা আটকে না রাখার পরামর্শ দিয়েছে, এতে সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়ছেন বলে পর্যবেক্ষণ আদালতের। তবে শীর্ষ আদালত কৃষকদের দাবি দাওয়ার প্রতি সহানুভূতিশীল বলেও এদিন মন্তব্য করেছে।

এদিকে, কৃষক আন্দোলনের জন্য প্রতিদিন ৩০০০-৩৫০০ কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে। অভিমত প্রকাশ করেছে বণিকসভা অ্যাসোচেম। তাই এই প্রেক্ষিতে কেন্দ্র এবং কৃষক উভয়ের কাছে আর্জি জানিয়েছেন দ্রুত সমস্যা মেটানোর জন্য। এই মর্মে তাদেরকে চিঠি দিয়েছে অ্যাসোচেম। এই বিক্ষোভের ফলে সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খাচ্ছে পঞ্জাব, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশের মতো দিল্লির আশপাশের রাজ্যগুলি।

অ্যাসোচেমের সভাপতি নিরঞ্জন হিরানান্দনি জানিয়েছেন, পাঞ্জাব হরিয়ানা হিমাচল প্রদেশ এবং জম্মু কাশ্মীরের সম্মিলিত অর্থনীতির পরিমাণ ১৮ লক্ষ কোটি টাকা। এদিকে এই কৃষক আন্দোলনের ফলে রাস্তা টোল প্লাজা এবং রেলপথ অবরোধের ফলে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ।

অতিমারীর এক বছর কেটে গেলেও অমানবিকতার ছবি আজও সামনে আসছে ।সচেতন ও মানবিক হওয়ার বার্তা দিচ্ছেন কারডিওলজিস্ট বিনায়ক দেব।