শুভেন্দু ঝড়ে সংগঠনে ধস, 'দাদার' বিদায়ের পরই মালদা থেকে নিশ্চিহ্ন হবে তৃণমূল?
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশে বিভিন্ন জেলাতে বঙ্গধ্বনি যাত্রা শুরু হয়েছিল। এই ইতিবাচক কর্মসূচির মধ্যেও তৃণমূলের মধ্যকার দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব বেরিয়ে এসেছিল মালদায়। সেই মালদাতেই এবার বড়সড় ভাঙনের ইঙ্গিত। শুভেন্দু অধিকারী বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন বুধবার। এরপরই তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরে ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দেয়।

কারা ইস্তফা দিলেন?
জানা গিয়েছে, মালদার বামনগোলা ব্লকের পাঁচ অঞ্চচল সভাপতি বুধবার রাতেই পদত্যাগ করেন। ইস্তফা দিলেন জগদলা অঞ্চল সভাপতি নারায়ন মন্ডল, পাকুয়াহাট অঞ্চল সভাপতি শ্যামল মন্ডল, চাঁদপুর অঞ্চল সভাপতি সাহেব হাঁসদা, বামনগোলা অঞ্চল সভাপতি তফিউর রহমান এবং গোবিন্দপুর- মহেশপুর অঞ্চল সভাপতি মানিক মাহাতো।

মালদায় দলের তরফে পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন শুভেন্দু
উল্লেখ্য, মালদায় দলের তরফে পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। দীর্ঘ পাঁচ বছরেরও বেশি সময় মালদহের সংগঠনের দেখভাল করেছেন শুভেন্দু। মালদহে নিচুতলা পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারীর বহু অনুগামী রয়েছেন। বামনগোলা ব্লক যে বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সেই হবিবপুর বিধানসভায় ২০১৬ বিধানসভা ভোটে দুই হাজারের বেশি ভোটে হেরে যায় তৃণমূল।

শুভেন্দুর পথ অনুসরণ
২০১৯ সালের বিধানসভা উপনির্বাচনে হবিবপুর বিধানসভায় ৩০ হাজারের বেশি ভোটে জেতে বিজেপি। বামনগোলা ব্লক বা হবিবপুর বিধানসভায় বিজেপির সংগঠন যথেষ্ট শক্তিশালী। এই অবস্থায় তৃণমূল নেতাদের এদিনের ইস্তফা জল্পনা আরও উসকে দিয়েছে। এই নেতারা যদি শুভেন্দুর পথ অনুসরণ করে বিজেপির পথে এগিয়ে যান, তাহলে সেখানে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস।

অভিষেক-মমতার মাথায় হাত
এদিকে শুভেন্দু অধিকারীর মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগের পর মালদা জেলার নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করতে তৎপর হয়েছিলেন দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোর। সেই মতো বৈঠকও জাকা হয়েছিল। তবে অভিষেকের ডাকা সেই বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন জেলা সভাপতি মৌসম বেনজির নূর সহ তিনজন। যা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল বিস্তর।

অস্বস্তিতে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব
কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া মৌসম বেনজির নূর-সহ অন্যান্য দলীয় নেতাদের সঙ্গে সেভাবে সমন্বয় হচ্ছে না বলে অভিযোগ। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম বেনজির নূরকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এছাড়া মালদা জেলা কমিটির অধিকাংশই শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী বলে পরিচিত। যার জেরে অস্বস্তিতে রয়েছে তৃণমূলের অন্দরেই।