স্টাফ রিপোর্টার, কাঁথি: আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও গেরুয়া শিবিরে যোগ দেননি নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী৷ সূত্রের খবর, ১৯ ডিসেম্বর, শনিবার তিনি দলবদল করবেন৷ তার আগেই শুভেন্দু অধিকারীর সহায়তা কেন্দ্রে বিজেপির ঝাণ্ডা উড়ল৷

দলের সঙ্গে কয়েকযোজন দূরত্ব তৈরি হলেও এখনও তৃণমূলেই রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী৷ দলবদলের আগেই তাঁর সহায়তা কেন্দ্রে উড়ল গেরুয়া পতাকা। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি এখন রীতিমত ভাইরাল৷ দাবি করা হচ্ছে এটি পূর্ব মেদিনীপুরে হেঁড়িয়ার ঘটনা৷

তবে ওই ছবির সত্যতা যাচাই কলকাতা ২৪X৭। এই ছবি ভাইরাল হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলায়৷ এখনও এব্যাপারে মুখ খোলেননি শুভেন্দুর অনুগামীরা৷

দু-দিন আগেই তৃণমূল পরিচালিত ব্যবসায়ী সমিতির অফিস রাতারাতি বদলে যায় শুভেন্দু অধিকারীর সহায়তা কেন্দ্রে। সেই সহায়তা কেন্দ্রটি সম্পূর্ণভাবে গেরুয়া রং করেন তাঁর অনুগামীরা।

এমনকী, গেরুয়া পাঞ্জাবী পরে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন শুভেন্দু অনুগামীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত তৃণমূল নেতা কনিষ্ক পণ্ডা। তিনি বলেন, “যতদিন না নবান্ন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরানো হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত এই শুভেন্দু অধিকারী সহায়তা কেন্দ্র চালু থাকবে।”

আগামী ১৯ ডিসেম্বর রাজ্যে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ৷ রাজ্য সফরে এসে ওই দিনই তাঁর শুভেন্দুর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে যাওয়ার কথা৷ অমিত শাহের উপস্থিতিতেই শুভেন্দু গেরুয়া শিবিরে যোগ দিতে পারেন বলে সূত্রের খবর।

বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়ও দাবি করেছেন, আমাদের সঙ্গে শুভেন্দুর কথা হয়েছে৷ দু’-চারদিনের মধ্যেই তিনি বিজেপি-তে যোগ দেবেন৷ ইতিমধ্যেই নন্দীগ্রামের বিধায়ককে জেড বা জেড প্লাস নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সেইসঙ্গে তাঁকে দেওয়া হবে বুলেটপ্রুফ গাড়িও।

মঙ্গলবার সরাসরি দলত্যাগের ঘোষণা না করলেও হলদিয়ার সভা থেকে এদিন শুভেন্দু অধিকারী বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি আগামিদিনে কোন পথে চলেছেন। হলদিয়ার অরাজনৈতিক সভা থেকে পরোক্ষে তৃণমূল সরকারকে ‘বহিরাগত’ তত্ত্ব এবং ‘গণতন্ত্র’ নিয়ে তীব্র আক্রমণ করলেন তিনি।

এদিন প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামী সতীশ সামন্তের জন্মবার্ষিকীর কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধীকারী। সেখানেই তিনি সরাসরি নাম না করে তৃণমূলের ‘বহিরাগত’ তত্ত্বকে আক্রমণ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘জওহরলাল নেহরু প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সতীশ সামন্তকে সব সময় সমীহ করে চলতেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভারত থেকে যে সব প্রতিনিধি দল গিয়েছিল, সে দলে সতীশ বাবু প্রতিনিধিত্ব করতেন।

সতীশ বাবু এগিয়ে গেলেই প্রধানমন্ত্রী উঠে দাঁড়াতেন। সতীশবাবু কখনও জওহরলাল নেহরুকে বহিরাগত ভাবতেন না। আর পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু কখনওই সতীশবাবুকে কখনও হিন্দিভাষী ভাবতেন না। এটাই ভারতবর্ষ।”

তার পরেই ‘দলতন্ত্র’-কে কটাক্ষ করে তাঁর আরও তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য, ‘‘কেন এখানে ফর দ্য পার্টি, বাই দ্য পার্টি, অব দ্য পার্টি ব্যবস্থা থাকবে! আমরা ভাল কাজের জন্য লড়ব। সংবিধান যে বলে গিয়েছে, গণতন্ত্র ফর দ্য পিপ্‌ল, বাই দ্য পিপ্‌ল, অব দ্য পিপ্‌ল, সেটা পশ্চিমবঙ্গে ফিরিয়ে আনতে হবে।’’

আবার কখনও সরাসরি দলকেই আক্রমণ করেন শুভেন্দু। বলেন, ‘যাঁরা আমায় ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন,বড় বড় পদে আছেন, জনতা যখন গদি উল্টে দেবে আপনাদের অবস্থাও লক্ষণ শেঠ বা অনিল বসুর মতো হবে।’

অতিমারীর এক বছর কেটে গেলেও অমানবিকতার ছবি আজও সামনে আসছে ।সচেতন ও মানবিক হওয়ার বার্তা দিচ্ছেন কারডিওলজিস্ট বিনায়ক দেব।