হাওড়াঃ “আমাকে কিভাবে ডিপ্রাইভ (বঞ্চনা) করা হয়েছে, ডোমজুড়ের মানুষ দেখেছেন।” সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমনটাই মন্তব্য করলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার ডোমজুড়ে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, “অনেকে অনেক কিছু হয়তো পায়। অনেকে অনেক জায়গায় অনেক রকমভাবে গুরুত্ব পান না। তারপরেও সেখানে মান অভিমান হয়। বাংলার মানুষ দেখেছেন আমাকে কিভাবে ডিপ্রাইভ করা হয়েছে। ডোমজুড়ের মানুষও দেখেছেন। সেই জায়গা থেকে আমি বলেছি। আমার নিজের দুঃখ, ডোমজুড়ের মানুষের দুঃখের কথা। বাংলার মানুষের কাছে কিছু প্রশ্ন ছিল সেটাই আমি বলেছি। এর বাইরে আর কিছু বলতে চাই না। “
এদিন ডোমজুড় বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত একটি অনুষ্ঠানে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। আগামী তিন বছরে রাজ্যের সরকারি চাকুরির পরীক্ষায় লক্ষ লক্ষ শূন্যপদের কথা মাথায় রেখে দুস্থ ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এক অভিনব উদ্যোগ নেন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুধুমাত্র ডোমজুড় বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য সমস্ত রকম সরকারি চাকরির পরীক্ষায় বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে দুস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের। সেখানে অভিজ্ঞ শিক্ষক দ্বারা তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
সেই অনুষ্ঠানে এসে রাজীববাবু আরও বলেন, “আমরা রাজ্যে সেইরকম চাকরির সুযোগ করে দিতে পারিনি। রাজ্যে যে ভাবে প্রশাসনিক কাজকর্ম চলছে সেখানে সরকারি চাকরির সুযোগ ছোটো হয়ে যাচ্ছে।”
মঙ্গলবার বিকেলে ডোমজুড়ের পাকুরিয়া অফিসে চাকুরি প্রার্থীদের জন্য একটি ফ্রি কোচিং সেন্টার উদ্বোধন করে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাম আমল থেকেই রাজ্যে চাকরির খরা চলছে। বেকার যুবক যুবতীরা হতাশ এবং দিশাহীন।
তিনি তাদের দিশা দেখানোর জন্যই ডোমজুড় বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে এই ফ্রি কোচিং সেন্টার উদ্বোধন করেন। এই সেন্টারের যাবতীয় সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ মিলবে। তাঁর এহেন মন্তব্যে রীতিমত চাপে শাসকদল তৃণমূল। উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরেই বসুরো রাজ্যের এই মন্ত্রী।
যদিও রাজীবের ক্ষোভ প্রশমনে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ সেই বৈঠক থেকে বেরিয়েই রাজীব জানান, ‘‘ক্ষোভ থাকতেই পারে। ক্ষোভ থাকলে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটবে। ভবিষ্যতে আরও আলোচনা হবে। আমায় আবার ডাকা হলে আসব।’’
উল্লেখ্য, শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে সমঝোতার প্রক্রিয়া ভেস্তে গিয়েছে। এ বার দলের আরও এক বিক্ষুব্ধ নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিরোধ মেটানোর চেষ্টায় তৃণমূল নেতৃত্ব। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভ প্রশমনে বৈঠকে ডাকা হয় প্রশান্ত কিশোরকেও। রুদ্ধদ্বার বৈঠক বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরেই চলে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
রাজীব–সমস্যার সমাধান সূত্র বের করতে মরিয়া তৃণমূল। কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে? রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন,‘‘পার্টির মহাসচিব ডেকেছিলেন এসেছি।আগামী দিনের একাধিক রণনীতির বিষয়ে এ দিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।কীভাবে আগামী দিনে দল পরিচালনা করা হবে, সেই বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে বৈঠকে।’’ কিন্তু এই বৈঠকে সত্যিই রাগ প্রশমন হয়েছে? তাঁর এই মন্তব্যে সেই প্রশ্নটাই এখন লাখ টাকার!