নয়াদিল্লি: দেশে ফিরেছেন অভিনন্দন। প্রশংসা কুড়িয়েছে ভারত সরকার। অনেকেই জানেন পাকিস্তানে আটকে থাকা আর এক ভারতীয় কুলভূষণের কথা। তিনি কবে ফিরবেন জানা নেই। ফেরা হয়নি সরবজিতেরও। তালিকায় রয়েছেন অনেকেই। তাঁদের ভোলেনি কেউ। আজও তাঁদের অপেক্ষায় দিন গুনছে তাঁদের পরিবার, তথা গোটা দেশ।
১৯৭১-এর যুদ্ধ। ১৪ দিনের লড়াই শেষে ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তান। তৎকালীন পাক লেফট্যানেন্ট জেনারেল এ কে নিয়াজির আত্মসমর্পণ চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করার সেই দৃশ্য দেশবাসীর কাছে আজও অমলিন। আর এটা সম্ভব হয়েছিল অনেক ভারতীয় সৈন্যের প্রাণের দাম দিয়ে। দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন তাঁরা। শুধুমাত্র জওয়ানদের মৃত্যুই নয়, ভারতকে আরও অনেক মূল্য দিতে হয়েছিল। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, নিখোঁজ হয়ে যান অন্তত ৫৪ জন সেনা জওয়ান। তাঁরা আর কোনোদিনও ফিরে আসেননি।
ভারত সরকার এই ৫৪ জনকে ‘missing in action’-এর তকমা দেয়। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। এদের অস্তিত্বের প্রমাণ এসে পৌঁছতে থাকে ভারতীয় গোয়েন্দাদের হাতে। জানা যায়, ওইসব সেনা জওয়ান পাকিস্তানের বিভিন্ন জেলে বন্দি রয়েছেন।
TIME ম্যাগাজিনে প্রকাশিত একটি ছবিতে দেখা যায় মেজর একে ঘোষ বন্দি রয়েছেন গারদে। অন্যদিকে, মেজর অশোক সুরির বাবার কাছে ছেলের একটি চিঠি এসে পৌঁছয়। দেশে ফেরার জন্য ভারত সরকারকে অনুরোধ করতে বলে লিখেছিলেন সেই চিঠি। কিন্তু, কোনও লাভ হয়নি। পাকিস্তান কোনোদিন এইসব প্রমাণ স্বীকার করেনি। ৪৫ বছর কেটে গিয়েছে। হয়ত তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ আজও গারদে তাঁদের শেষ জীবন কাটাচ্ছেন।
তাঁদের পরিবারও আজও বিশ্বাস করে, হয়ত কোনও একদিন হঠাৎ ফিরে আসবেন তাঁদের প্রিয়জন।
তাঁদেরকে ভোলেনি ভারতীয় সেনাবাহিনীও। সেইজন্যই ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমির ডাইনিং হলে আজও তাঁদের অপেক্ষায় রয়েছে সাজানো টেবিল-চেয়ার। কোনোদিন যদি ফিরে আসেন তাঁরা! একটা ছোট টেবিল আর একটি চেয়ার। টেবিলে রাখা একটি গোলাপ।
নিখোঁজ মেজর অশোক সুরির বাবার একটি ডায়েরি থেকে পাওয়া গিয়েছিল দুটি লাইন- “If the cause be just and mind be strong, no force is great, no distance is long. If selfless souls with such a strength, face hazards all, they win at length.”