কলকাতাঃ তৃণমূলের সঙ্গে পাকাপাকিভাবে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন শুভেন্দু অধিকারী। গত কয়েকদিন আগেই মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করেন শুভেন্দু। এরপর থেকেই জল্পনা তৈরি হয় যে, নন্দীগ্রামের বিধায়ক থেকেও ইস্তফা দেবেন হয়তো শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু ঠিক কবে তা নিয়ে ছিল হাজারো প্রশ্ন।
কিন্তু আজ বুধবার সকাল থেকেই জানা যায় যে, আজই হয়তো বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করছেন জননেতা। সেই মতো ঠিক বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ বিধানসভা পৌঁছন শুভেন্দু। এবং বিধানসভা সচিবের সঙ্গে দেখা করে তাঁর পদত্যাগ পত্র জমা দেন। জানা যাচ্ছে, ই-মেলের মাধ্যমে বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে তাঁর পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।
যদিও বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, ‘শুভেন্দুর ইস্তফাপত্র গৃহীত হচ্ছে না। কারণ, ‘ইস্তফাপত্র গ্রহণের এক্তিয়ার নেই সচিবের।’। ফলে শুভেন্দুর ইস্তফা-পত্র গৃহীত হওয়া নিয়ে ধোঁয়াশা হয়েই রইল।
প্রসঙ্গত, কেউ কেউ জোয়ারে আসে আর ভাটায় চলে যায়। কিছু যায় আসে না। কোচবিহারের জনসভা থেকে নাম না করে ফের দলের বিধায়ক তথা পদত্যাগী মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনদিনের উত্তরবঙ্গ সফরে বুধবার কোচবিহারে জনসভা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদলের ‘বেসুরো’ নেতা-মন্ত্রীদের বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কেউ কেউ জোয়ারে আসে, ভাটায় চলে যায়। তাতে কিছু যায় আসে না। যারা প্রথম থেকে ছিল তারা আছে। তারাই লড়বে। জেনে রাখবেন, তারা চরিত্র বদল করতে পারে না। জামা কাপড় বদলানো যায়। কিন্তু আদর্শ বদলানো যায় না।”
মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির জনসভা থেকে নাম না করে শুভেন্দুর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “১০ বছর ধরে পার্টির হয়ে খেয়ে, সরকারে থেকে সরকারের সবটা খেয়ে ভোটের সময় এর সঙ্গে ওর সঙ্গে বোঝাপড়া করলে কিন্তু কিছুতেই আমি মেনে নেব না, এটা মনে রাখবেন।”
প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহের শেষেই বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন নন্দীগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক। শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দিল্লি উড়ে যাবেন শুভেন্দু। শুক্রবার, বিজেপির সদর কার্যালয়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেবেন তিনি। আগামী ১৯ ডিসেম্বর অমিত শাহ আসছেন বাংলায়। শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ট মহল সূত্রের দাবি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সেদিন একমঞ্চে দেখা যেতে পারে শুভেন্দু অধিকারীকে।
যদিও, শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ মহলের আরেকটি সূত্রে দাবি, দিল্লি থেকে ঘুরে আসার পর মেদিনীপুরেই আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন শুভেন্দু। তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এদিন বিধানসভায় ঢোকার সময় দেখা যায় পুরুলিয়ার কংগ্রেস বিধায়ককে। মঙ্গলবারই দূত মাধ্যমে শুভেন্দুকে কংগ্রেসে যোগদানের বিষয়ে আহ্বান জানানো হয়।
ফলে আগামিদিনে শুভেন্দুর রাজনীতির জীবন কোনদিকে বইবে সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিকমহল।