পিকে রুখতে পারছেন না তৃণমূলের ভাঙন, মুকুলের মাস্টারস্ট্রোকে দেখছেন সিঁদুরে মেঘ
২০১৯-এর মতোই ভাঙন লাগতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেসে। প্রশান্ত কিশোরকে ভোট কৌশলীর দায়িত্ব দিয়েও শেষ রক্ষা হচ্ছে না তৃণমূলের। মুকুল রায়ের কূট-কৌশলের কাছে ফের ধাক্কা খেতে চলেছে তৃণমূল। মুকুল-কলাশ-দিলীপের ত্রিফলা তৃণমূলকে ছিন্নভিন্ন করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। তা থেকে রক্ষার কোনও বিকল্প নেই প্রশান্ত কিশোরের হাতে।

প্রশান্ত কিশোর নিস্পৃহ, তৃণমূল ভাঙার খেলায় মগ্ন মুকুল
টানা তৃতীয়বার জিতে হ্যাটট্রিক করতেই প্রশান্ত কিশোরকে ভোট কৌশলী করে এনেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আসার পরই ২০১৯-এর ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছিল তৃণমূল। মুকুল রায় যেভাবে ভাঙছিলেন তৃণমূলকে, তা রুখে পাল্টা ঝটকা দিয়েছিলেন প্রশান্ত কিশোরও। তারপর কিছু দিন মুকুল রায় নিস্পৃহ থাকলেও আবার তিনি পুরনো সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে তৃণমূল ভাঙার খেলায় মগ্ন।

একুশেও ভাঙন যন্ত্রণা বেগ দিতে শুরু করেছে তৃণমূলকে
বর্তমানে যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে স্পষ্ট যে, ২০২১-এর লক্ষ্যপূর্ণ বাধার পাহাড় হয়ে তৃণমূলের শত্রু হয়ে উঠেছেন তৃণমূলীরাই। ২০১৯-এর মতোই একুশেও ভাঙন যন্ত্রণা বেগ দিতে শুরু করেছে তৃণমূলকে। প্রশান্ত কিশোর এখনও পর্যন্ত কোনও বিকল্প পন্থা বের করতে পারেননি এই ভাঙন রোখার।

দিলীপ ঘোষের স্লোগান অর্ধেক সাকসেসফুল, বাকিটা.
বিজেপি ২০১৯-এ তৃণমূলকে ভাঙিয়ে যুদ্ধ জয় করেছিল। ২ থেকে বেড়ে ১৮ হয়েছিল। আর তৃণমূল সেই ধাক্কায় ৩৪ থেকে কমে ২২। অর্থাৎ দিলীপ ঘোষের স্লোগান অর্ধেক সাকসেসফুল। উনিশে হাফ। আর একুশে সাফ করতে তিনি পারবেন কি না সেটা ভবিষ্যৎ বলবে। তৃণমূল কিন্তু আদতে বাঁচার রাস্তা খুঁজে পাচ্ছে না।

মুকুলের পর শুভেন্দু! অর্ধেক কাজ সারা বিজেপির
ঊনিশের মতো একুশেও সেই একই পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে বিজেপি। তৃণমূলকে ভাঙিয়েই তাঁরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে খাঁড়া করতে চাইছে। শুভেন্দু অধিকারীর মতো নেতাকে ভাঙাতে হাত বাড়িয়েছে বিজেপি। তা যদি সম্ভব হয়, তৃণমূল যে বেকায়দায় পড়বে তা বলাই যায়। মুকুলের পর শুভেন্দুকে ভাঙিয়ে নিলে তৃণমূলকে হারানোর অর্ধেক কাজ সারা হয়ে যাবে।

তৃণমূলের প্রধান দুই অস্ত্র চলে যাবে বিজেপির তূণে!
মুকুল রায় বিজেপিতে গিয়ে তৃণমূল ভাঙার কাজ করছিলেন। উপরতলা থেকে নিচুতলায় তিনি তৃণমূলকে ভেঙে শক্তিশালী করে তুলেছেন বিজেপিকে। মুকুল অনুগামীরা প্রায় সবাই এখন বিজেপিতে। এবার শুভেন্দুকে দিয়ে যদি তাঁর অনুগামীদের টেনে নিয়ে আসা যায়, তবে তৃণমূলকে হারানোর রাস্তা পরিষ্কার হয়ে যাবে। তৃণমূলের প্রধান দুই অস্ত্র চলে যাবে বিজেপির তূণে।

মুকুলের কথায়, শুভেন্দু দলে যাঁরা রয়েছেন
মুকুল রায় কিছুদিন আগেই বলেছেন, শীলভদ্র দত্ত-সহ অনেকেই শুভেন্দুর সঙ্গে রয়েছেন। শুভেন্দু দল ছাড়লে তাঁরাও ভিড়বেন। মুকুলের এই বার্তার পর পরিষ্কার শুভেন্দু দলবল নিয়েই তৃণমূল ছাড়ছেন। তাঁরা সবাই বিজেপিতে এলে তৃণমূল কংগ্রেস প্রশান্ত কিশোরকে দিয়েও কিছু করতে পারবে না।

তৃণমূলের অস্ত্র ভোঁতা করে দিয়েছেন মুকুল-দিলীপরা
তৃণমূলে ভাঙন রুখতে সবথেকে বেশি ভরসা করেছিলেন পিকের উপর। কিন্তু বর্তমানে পিকেই তৃণমূলে ভাঙনের কারণ হয়ে উঠেছেন। ফলে তৃণমূলের অস্ত্র ভোঁতা করে দিয়েছেন মুকুল-দিলীপরা। ২০১৯-এ বিজেপির কাছে ধাক্কা খাওয়ার পর প্রশান্ত কিশোরকে দলের ভোট কৌশলী করে যে সাফল্য তৃণমূল পেয়েছিল, এবার তার আশা দেখছেন না মমতা।

দল ভাঙছে, একুশের কুরুক্ষেত্রের আগে বিপাকে তৃণমূল
একুশের কুরুক্ষেত্রের আগে তৃণমূলকে বিপাকে ফেলে অনেক নেতা লাইন দিয়ে দিয়েছেন দল ছাড়ার। অনেকে দল ছেড়ে বিজেপিতে চলে গিয়েছেন। একুশের ভোট যত সামনে আসছে, ততই তৃণমূলের নেতারা বিগড়ে যাচ্ছে। বিদ্রোহী হয়ে উঠছেন। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির দিকে ঝুঁকছেন কোচবিহার দক্ষিণের মিহির গোস্বামী। শুভেন্দু অধিকারীরও বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা প্রবল।

শুভেন্দু দল ছাড়লে পতন অবশ্যম্ভাবী, তৃণমূল দিয়ে তৃণমূল বধ
শুভেন্দু অধিকারী যদি তৃণমূল ছাড়েন বা বিজেপিতে যোগ দেন তবে তৃণমূলে আরও বড় ভাঙন আসন্ন। সেক্ষেত্রে সেই ভাঙন যদি তৃণমূল না রুখতে পারে তবে পতন অবশ্যম্ভাবী হয়ে যাবে। তৃণমূলের নেতারাই বিজেপিতে গিয়ে তৃণমূলের সর্বনাশ করে দেবে। ২০২১-এ তৃণমূলকে দিয়েই তৃণমূল বধ করে ছাড়বে বিজেপি।
উত্তরবঙ্গে পৌঁছেই গুরুংদের কড়া বার্তা মমতার, কী বললেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী