স্টাফ রিপোর্টার, জলপাইগুড়ি: আর রাখঢাক না করে শুভেন্দু অধিকারীর উদ্দেশ্যে বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়ে দিলেন, বিক্ষুব্ধ নেতাদের দলে বরদাস্ত করা হবে না। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির সভা থেকে তৃণমূলনেত্রী বললেন, “১০ বছর পার্টির খেয়ে, সরকারের খেয়ে এখন এর ওর সঙ্গে বোঝাপড়া হচ্ছে। আমি সহ্য করব না।”
মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার হেলিপ্যাড ময়দানে তৃণমূলকে আক্রমণ করে শুভেন্দু বলেন, সংবিধানে রয়েছে ফর দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল, অফ দ্য পিপল, কিন্তু এখন ফর দ্য পার্টি, বাই দ্য পার্টি কেন থাকবে? এটা গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকারক, এ রাজ্যে গণতন্ত্র নেই, সেই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
এরপরই জলপাইগুড়ির সভা থেকে মমতা বলেন, ‘আমি বড় বা ও বড়— দলে এর কোনও প্রয়োজন নেই। ১০ বছর পার্টির হয়ে খেয়ে, ১০ বছর সরকারে থেকে সরকারের সবটা খেয়ে, ভোটের সময় এর সঙ্গে ওর সঙ্গে বোঝাপড়া? আমি এদের সহ্য করব না।’
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের টিকিটে কাঁথি দক্ষিণ বিধানসভা থেকে জয়লাভ করেন।২০০৯ সালে তমলুক থেকে লোকসভা নির্বাচনে জয়যুক্ত হয়ে শিল্প দফতরের স্থায়ী কমিটির সদস্য বন। ২০১৪ সালেও নিজের আসনে জয়ী হন শুভেন্দু। ২০১৬ সালে পদত্যাগ করে নন্দীগ্রাম থেকে লড়াই করেন। সেখানেও জয়ী হন। পরিবহণ, সেচ দফতরের মত গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মন্ত্রী ছিলেন তিনি। আগামী ১৯ ডিসেম্বর রাজ্যে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ৷
রাজ্য সফরে এসে ওই দিনই তাঁর শুভেন্দুর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে যাওয়ার কথা৷ অমিত শাহের উপস্থিতিতেই শুভেন্দু গেরুয়া শিবিরে যোগ দিতে পারেন বলে সূত্রের খবর। এমনকি বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়ও দাবি করেছেন, আমাদের সঙ্গে শুভেন্দুর কথা হয়েছে৷ দু’-চারদিনের মধ্যেই তিনি বিজেপি-তে যোগ দেবেন৷
ইতিমধ্যেই নন্দীগ্রামের বিধায়ককে জেড বা জেড প্লাস নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সেইসঙ্গে তাঁকে দেওয়া হবে বুলেটপ্রুফ গাড়িও। তাই শুভেন্দুর বিজেপিতে যাওয়া একপ্রকার সময়ের অপেক্ষা বলেই দাবি করছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা।
এদিন দলের কর্মীরাই তৃণমূলের আসল সম্পদ বলে মমতার বার্তা, ‘যারা এই ১০ বছর ৩৬৫ দিন মানুষের জন্য কাজ করে এসেছেন তাঁরাই এই ভোটে আসল পরীক্ষা দেবেন। আর ২০২১–এ এমন পরীক্ষা দেবেন যাতে বিজেপি আর পরীক্ষায় বসতেই না পারে।’
তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপির দুর্নীতির অভিযোগের পাল্টা দিতে গিয়ে এদিন মমতা বলেন, ‘শুধু কানে কানে বলে, এ খেয়েছে, ও খেয়েছে। বিজেপি–র মতো বড় চোর কোথায় আছে? এত বড় ডাকাত সর্দার সব। চম্বলের বড় বড় ডাকাত।’