নিজের জালেই জর্জরিত চিন! চাপের মুখে ভারতের ‘করোনা ছড়ানোর তত্ত্ব’ সরিয়ে নিল চিন
করোনা সংক্রমণের বিষয়ে তথ্য গোপনের অভিযোগে এর আগেও বহুবার চিনের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছে একাধিক দেশ। এবার ফের সেই একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করল জিনপিংয়ের সরকার। এদিকে করোনা প্রাদুর্ভারের পর গোটা বিশ্বব্যাপী ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ার জেরে অবশেষে মহামারীর দায় ভারতের উপর চাপায় চিন। যা নিয়েও তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়। যদিও দাবি করার পর বর্তমানে ভিন্ন সুর শোনা যাচ্ছে চিনের গলায়।

ভিত্তিহীন দাবি ঘিরে শোরগোল
চিনের দাবি ভারত থেকে আমদানি করা সামুদ্রিক মাছের মাধ্যমেই চিনের মাটিতে প্রথম থাবা বসায় চিন। এমনকী তা নিয়ে লেখা লেখা হয়ও আন্তর্জাতিক স্তরে। সূত্রের খবর, এই নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পরও তা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে 'দ্য ল্যানসেট' মেডিক্যাল জার্নাল থেকে। আর এর জেরেই ফের প্রশ্নের মুখে চিনের গ্রহণযোগ্যতা। এদিকে চিনের দাবিকে ভিত্তিহীন বলে আগেই উড়িয়ে দিয়েছিল ভারত। চিনের বর্তমান কার্যকলাপে তাই যেন নতুন করে মান্যতা পেল।

একমাসও টিকল না চিনের অমূলক দাবি
সূত্রের খবর, গত ১৭ই নভেম্বর দ্য ল্যানসেট জার্নালের অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ভারতীয় উপমহাদেশ থেকেই চিনের উহানে পৌঁছেছে কোভিড। চিনের জাতীয় বিজ্ঞান সংস্থা (সিএএস), ফিউদান বিশ্ববিদ্যালয় ও হাউস্টনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে চিনের স্নায়ুবিদ্যা সংস্থার গবেষকরাই এই বিষয়ে গবেষণা চালান। যদিও প্রথম দাবির পর নিজেদের কার্যকলাপেই প্রশ্নের মুখে বেজিংয়ের ভূমিকা।

উহানে সংক্রমণের তিন-চারমাস আগেই ভারতে করোনা ?
চিনের গবেষণাপত্রে দাবি করা হয় যে, উহানে প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার তিন-চার মাস আগেই ভারতে করোনার আবির্ভাব ঘটেছিল। যদিও এই গবেষণাপত্র সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে চেষ্টা করেছে চিন। বেজিংয়ের এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের মতে, "এরকম ঘটনা নতুন নয়। গবেষণায় তথ্যের অভাব বা পুনর্মূল্যায়নের দরকার ধরা পড়লে এমনটা করা স্বাভাবিক।" এই প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক গবেষকদের সহায়তাও দাবি করেছেন ওই আধিকারিক।

অন্যান্য দেশের সম্মানহানির বিষয়ে উঠছে প্রশ্ন
শুধু ভারত নয়, বাংলাদেশ, পাকিস্তান সহ রাশিয়া এমনকি গ্রীসের মত দেশের দিকেও করোনা ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছিল চিন। চৈনিক গবেষকদের মতে, যেহেতু গবেষণাপত্র প্রকাশের সর্বশেষ ধাপ বাকি ছিল, তাই শেষ মূহূর্তে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়াই যায়। যদিও পুনরায় অন্যান্য দেশ থেকে করোনা ছড়ানোর সপক্ষে যুক্তি খাড়া করেছে চিন। চিনের গ্লোবাল টাইমসের বক্তব্য, ২০১৯-এর অক্টোবরে মিলানের ক্যান্সার বিষয়ক গবেষণা সংস্থা রক্তে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছিল। পাশাপাশি ২০১৯ সালের মার্চে বার্সেলোনা বিশ্ববিদ্যালয় বার্সেলোনার নিকাশি নালায় করোনা খুঁজে পেয়েছিল বলে জানা যায়।

চিনের সংক্রমণের আগেই আমেরিকায় করোনা ?
'দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে' এও দাবি করা হয়েছে , চিনে সংক্রমণের সপ্তাহখানেক আগেই নাকি মধ্য-ডিসেম্বরে আমেরিকায় নিজের উপস্থিতির কথা জানান দেয় কোভিড। অন্যদিকে, লন্ডন সহ ভারতের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষকদলের বক্তব্য মোটামুটি একই, সকলেই অপেক্ষা করছেন যে 'পিয়ার-রিভিউ' পদ্ধতিতে কবে চিনের 'আলপটকা' দাবি নস্যাৎ করা হয়।
ফের শুভেন্দুকে বার্তা মমতার, কোটি কোটি গুন্ডা আনার হুমকি তৃণমূল সুপ্রিমোর