'বিজেপি হিন্দু ভোট নিয়ে যাবে, মিম মুসলিম ভোট! আর আমি কি কাঁচালঙ্কা খাব?'
এদিন জলপাইগুড়ির অরবিন্দ ব্যায়ামাগার পাঠাগার ও ক্লাবের সভা মঞ্চে বক্তব্য রাখেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মলয় ঘটক, গৌতম দেব, অরূপ বিশ্বাস এবং আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ির বিধায়ক ও তৃণমূল নেতারা। সেই মঞ্চ থেকেই এবার বিজেপি ছাড়াও মিম-কেও আক্রমণ শানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

উত্তরবঙ্গে ওয়েইসি ফ্যাক্টর
সদ্য সমাপ্ত হওয়া বিহার নির্বাচনে দুর্দান্ত ঝোড়ো ইনিংস খেলে তেজস্বীর ম্যান অফ দ্য ম্যাচ পাওয়া আটকে দিয়েছিল আসাদউদ্দিন ওয়েইসির অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই ইত্তেহাদুল মুসলিমিন। বিহার নির্বাচনে ফলাফল ঘোষণার পর রাজনৈতিক মহলের অনেকেই বলছেন যে আসলে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করে বিজেপির সুবিধা করে দিতেই বি টিম হিসাবে মাঠে নেমেছিল এমআইএম। এবার সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখতে চলেছে বাংলাও? এই আশঙ্কাতেই এখন ঘর গোছাতে ব্যস্ত তৃণমূল কংগ্রেস। এই কথা বলেও মমতা। এদিন তিনি বলেন, 'বিহারে দেখলেন তো বিজেপিকে কীভাবে সাহায্য করে দিল হায়দরাবাদের সেই দলটি। ওদের ফাঁদে পা দেবেন না।'

বিজেপি-মিম আতাঁতের অভিযোগ
এই প্রেক্ষিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, 'বিজেপি হায়দরাবাদের একটি পার্টিকে নিয়ে এসে এখানে সংখ্যালঘুদের ভোট কাটতে চেষ্টা করছে। হিন্দু ভোট নিয়ে যাবে একটি দল, অন্য একটি দল মুসলিম ভোট নিয়ে চলে যাবে। আর আমি কি কাচালঙ্কা খাব? ওরা শুধু বিভেদের রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করে। ওদের থেকে টাকা নেবেন, কিন্তু ভোটটা গিয়ে তণমূলকে দেবেন।'

বিভেদের রাজনীতি নিয়ে সরব মমতা
এদিন মমতা আরও বলেন, 'ওরা হিন্দু পারায় গিয়ে হিন্দু বিরোধী কথা বলে। যাতে তারা রেগে গিয়ে বিজেপিকে ভোট দেয়। এদিকে মুসলিম জায়গায় গিয়ে ওরা মুসলিমদের ভালো ভালো বলে, যাতে মুসলিমরা তাদরেকেই ভোট দেয়। তবে আসল কোনও কাজই ওরা করে না। বিজেপি থেকে টাকা নিয়ে শুধু অশান্তি বাঁধায়।'

৭৫ থেকে ৮০টি আসনে মুসলিম ভোট নির্ধাণকারী হবে
বাংলার ২৯৪টি আসনের মধ্যে ৭৫ থেকে ৮০টি আসনে মুসলিম ভোট নির্ধাণকারী ফ্যাক্টর। সেই ভোট যদি তিন ভাগে হয়ে যায়, লাভ হবে বিজেপির। সার্বিক ভাবে বাংলায় মোট ২৭ শতাংশ ভোট রয়েছে। সেই ভোট যদি কোনও দল নিজেদের পক্ষে নিশ্চিত করতে পারত, তাহলে বিজেপির পক্ষে বাংলা জয় খুবই কঠিন হত। তাই বাংলায় এমআইএম-এর প্রবেশ আরও উল্লেখযোগ্য।

সিএএ-এনআরসি নিয়ে তরজা
এদিকে সিএএ, এনআরসির মতো ইস্যু তৃণমূলের থেকে হাইজ্যাক করে নিতে পারে এমআইএম। সেই ক্ষেত্রেও লাভবান হবে বিজেপি। এই আশঙ্কা থেকে এদিন সিএএ, এনআরসি বিরোধী ডাকও দেন মমতা। এদিন তিনি ফের 'আমরা সবাই নাগরিক' রব তোলেন। তবে তাতেও মমতার দল উত্তরবঙ্গে কতটা ভালো ফল করতে পারবে, তা নিয়ে চিন্তিত দলের একাংশই। লোকসভার ফল চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে তৃণমূল জমি হারিয়েছে উত্তরবঙ্গে। তৃণমূলের বাকি বেঁচে থাকা জমিতেও থাবা বসাতে চাইছে মিম।