টোকিও: সিরিয়াল কিলিং-এর ঘটনা বিশ্বের ইতিহাসে নতুন নয়। এমন উদাহরণ রয়েছে ভুরি ভুরি। আর মঙ্গলবার এমনই এক সিরিয়াল কিলারকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে জাপানে। তবে এই ক্ষেত্রে পন্থাটা অভিনব।

একটা-দুটো নয়! পরপর ৯ টা খুন করেছে জাপানের Twitter Killer নামে পরিচিত তাকাহিরো শিরাইশি। এদিন তার সাজা ঘোষণার দিন আদালতে উপচে পড়েছিল ভিড়। আমজনতার জন্য যেখানে বরাদ্দ মাত্র ১৬টি আসন, সেখানে উপস্থিত ছি‌ল ৪৩৫ জন।

জানা যায়, তাকাহিরো নাকি নিজেই স্বীকার করেছিল এইসব খুনের কথা। নিজের অ্যাপার্টমেন্টেই রেখেছিল সেসব মৃতদেহ। মানসিক বিকারগ্রস্ত ভয়ঙ্কর এই সিরিয়াল কিলারকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিল টোকিওর এক আদালত।

কে এই তাকাহিরো শিরাইশি?

#২০১৭ সালে গ্রেফতার করা হয় এই ব্যক্তিকে। তারপর থেকেই চলছিল বিচারে প্রক্রিয়া। অবশেষে ২০২০ সালে সাজা দেওয়া হল তাকে।

#তার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ৮ মহিলা ও ১ জন পুরুষের দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। তারপরই তাকে গ্রেফতার করা হয়।

#অবসাদে ভুগতে ভুগতে অনেকেই আত্মহত্যা প্রবণ হয়ে পড়েন। মৃত্যুকেই বেছে নেওয়ার চেষ্টা করেন। সেরকম লোকজনকেই বেছে নিত তাকাহিরো। কেউ আত্মহত্যার ইচ্ছা প্রকাশ করলেই তাঁরা হয়ে উঠতেন তার ‘টার্গেট’।

#কেউ যখন সোশ্যল মিডিয়ায় আত্মহত্যার ইচ্ছা প্রকাশ করতেন, তাদেরকে বাড়িতে ডেকে আনত এই ব্যক্তি। তাই তাকে Twitter Killer-এর তকমা দেওয়া হয়।

#তাকাহিরো ওইসব লোকজনকে বলত যে, সে তাঁদের সাহায্য করতে পারে নিজের জীবন শেষ করার ক্ষেত্রে। কখনও এমনও বলত, সেও আত্মহত্যা করবে তাঁদেরই সঙ্গে। তার সেই ফাঁদে পা দিলেই সর্বনাশ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকাহিরোর নাম Hangman.

#বাড়িতে ডেকে ওই ৮ কিশোরী ও তরুণিকে ধর্ষণ করে হত্যা করে এই তাকাহিরো। মৃতদের বয়স ১৫ থেকে ২৬-এর মধ্যে। আর এক তরুণির বয়ফ্রেন্ডকেও চুপ করাতে হত্যা করে এই ব্যক্তি।

#অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেটে তাঁদের খুন করত তাকাহিরো। তাদের যুক্তি ছিল, নিহতরা সকলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় জীবন শেষ করে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। তাই তাদের সাহায্য করত তাকাহিরো।

#বিচারপতি জানিয়ে দেন, আক্রান্তদের কেউই তাকাহিরোকে খুন করার অনুমতি দেননি। এবং নীরব সম্মতিও নয়। এরপরই আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনায়।

#গত মাসে বিচার চলাকালীন আদালতে উপস্থিত ছিলেন এক নিহত তরুণীর বাবা। নিজের ২৫ বছরের মেয়ের মৃত্যুতে শোকাহত সেই ব্যক্তি জানিয়ে দিয়েছিলেন, ”ওই লোকটাকে আমি ওর মৃত্যুর পরেও ক্ষমা করতে পারব না।” তাঁর এই আক্ষেপ যেন নতুন করে বুঝিয়ে দেয় তাকাহিরোর বীভত্‍স অপরাধের গভীরতা।

উল্লেখ্য, জাপানে ক্রাইম বা অপরাধের সংখ্যা কম হলেও আত্মহত্যার সংখ্যা বিশ্বের মধ্যে সবথেকে বেশি। আর অতিমারীতে সেই সংখ্যা আরও বেড়েছে।

অতিমারীর এক বছর কেটে গেলেও অমানবিকতার ছবি আজও সামনে আসছে ।সচেতন ও মানবিক হওয়ার বার্তা দিচ্ছেন কারডিওলজিস্ট বিনায়ক দেব।