লন্ডন: অতিমারীতে রুদ্ধশ্বাস অবস্থা গোটা বিশ্বের। ব্রিটেনেও প্রথমদিকে চরম আঘাত এনেছিল করোনা। খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রীই আক্রান্ত হয়েছিলেন। ইতিমধ্যেই সেখানে ভ্যাক্সিন দেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে।
তবে এরই মধ্যে নতুন চিন্তার কারণ। এক নতুন ধরনের কোভিড-১৯ ভাইরাসের দেখা মিলেছে সেদেশে। ইংল্যান্ডের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে সেই ভাইরাস থেকে দ্রুত সংক্রমণ ছড়ানোর ঘটনা সামনে এসেছে। ব্রিটেনের স্বাস্থ্য সচিব ম্যাট হ্যামক জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই বিষয়টি দেখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO। পাশাপাশি ব্রিটেনের বিজ্ঞানীরাও গবেষণা শুরু করেছেন এই নতুন ধরনের ভাইরাস নিয়ে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত এই নতুন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কবলে পড়েছেন হাজারেরও বেশি মানুষ। তাঁর কথায়, ”দক্ষিণ ইংল্যান্ডে ১ হাজারেরও বেশি মানুষ এই নতুন ধরনের ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন। স্থানীয় অন্তত ৬০টি এলাকায় আক্রান্তদের খোঁজ মিলেছে।”
হাউস অফ কমনসের এমপি-দের তিনি বলেন, লন্ডন, কেন্ট, এসেক্স ও হের্টফোর্ডশায়ারে নতুন ধরনের এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। একদিকে যখন ভ্যাক্সিন দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়ছে, তখন এভাবে নতুন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে সমস্যা বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই ভাইরাসের মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ করার কথা জানান ম্যাট। সেই সঙ্গে যেহেতু ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে, তাই তাড়াতাড়ি সংক্রমণ আটকানো দরকার বলেও জানান তিনি। লন্ডনে জারি হয়েছে ‘টিয়ার থ্রি’ সতর্কতা। বন্ধ রাখা হয়েছে সব হোটেল ও রেস্তোঁরা। পরিবারের সদস্য ছাড়া অন্যদের সঙ্গে মেলামেশাও আপাতত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
এদিকে ইংল্যান্ডের চিফ মেডিক্যাল অফিসার অধ্যাপক ক্রিস হুইট্টি সকলকে আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, নতুন ধরনের এই ভাইরাসকে অবশ্য পুরনো ও চেনা পদ্ধতির পরীক্ষাতেই চিহ্নিত করা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে সকলকে আতঙ্কিত হতেও বারণ করেন তিনি। এই ভাইরাস বেশি ভয়ঙ্কর কিংবা এটা আরও বেশি সংক্রামক, এমন কিছু এখনই বলতে চাইছেন না তিনি। এবিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে জানান ক্রিস।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবারই ব্রিটেনে শুরু হয়েছে গণ টিকাকারণ। তার আগের সপ্তাহে গণ টিকাকরণের ছাড়পত্র পেয়েছে ফাইজার (Pfizer) ও বায়োএনটেকের সম্ভাব্য কোভিড প্রতিষেধক। ভ্যাকসিন নিয়ে শরীরে ‘পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া’র অভিযোগও উঠেছে। যাঁদের অ্যালার্জির ইতিহাস রয়েছে, তাঁদের ফাইজারের করোনা প্রতিষেধক না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ব্রিটেনের স্বাস্থ্যকর্তারা।