ফিরে দেখা ২০২০ : মোদী ম্যাজিকে 'অপয়া' বছরেও দেশজুড়ে পদ্ম ফুটিয়েছে বিজেপি
করোনা আবহে ২০২০ সালটিকে 'অপয়া' আখ্যা দিয়েছে এনেকেই। তবে এই বছরও মোদী ম্যাজিকে দেশজুড়ে গেরুয়া ঝড় দেখেছে দেশ। করোনা আবহেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে দেশে। বিহার বিধানসভা নির্বাচন ছাড়াও মধ্যপ্রদেশের উপনির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে বিজেপি। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচনে পদ্ম ফুটেছে করোনা আবহে। একনজরে ফিরে দেখা যাক করোনা আবহে বিজেপির জয় যাত্রা।

বিহারে বিজেপির জয়জয়কার
করোনা আবহে অনুষ্ঠিত বিহার বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয় এনডিএ জোট৷ তখনও তিনটি আসেন ফল ঘোষণা হওয়া বাকি৷ কিছু সময় পর ওই তিনটি আসনেরও ফলাফলও সামনে আসে৷ তিনটিতেই জয়ী হয় এনডিএ জোট৷ সবমিলিয়ে এনডিএর দখলে আসে ১২৫টি আসন, আর মহাজোট থমকে যায় ১১০টি আসনেই৷ বিজেপি এককভাবে জিতেছে ৭৪টি আসন৷ নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড জিতেছে মাত্র ৪৩টি আসন৷

উপনির্বাচনে ফুটেছে পদ্ম
এদিকে বিহার নির্বাচনের পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হয় ১১ রাজ্যের উপনির্বাচন। দেশজুড়ে উপনির্বাচনে ভালো ফল করে বিজেপি। ১১ রাজ্যের মোট ৫৯টি আশনের মধ্যে ৪১টিতে জেতে গেরুয়া শিবির। এর মধ্যে ৩১টি তারা ছিনিয়ে নিয়েছে কংগ্রেসের থেকে। ১১টি রাজ্যে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও মূলত সবার নজর ছিল মধ্যপ্রদেশের উপর।

মধ্যপ্রদশে ক্ষমতায় দখল বিজেপির
কুর্সি ধরে রাখেন শিবরাজ সিং চৌহান। মধ্যপ্রদেশে ২৮টি আসনে উপনির্বাচনে ১৯টিতেই জয় পেল তারা। কংগ্রেস পেয়েছে ৯টি আসন। উল্লেখ্য, ক্ষমতা ধরে রাখতে বিজেপির প্রয়োজন ছিল ৮টি আসন। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১০ মার্চ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর রাজনৈতিক মহলে সিন্ধিয়া-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত আরও ২২ জন কংগ্রেস বিধায়ক গত সপ্তাহে ইস্তফাপত্র জমা দেন৷ এর জেরে ১৫ মাসের মধ্যেই সংকটের মুখে পড়ে কমল নাথের সরকার।

গুজরাতে বিজেপির ক্লিনসুইপ
এদিকে মধ্যপ্রদেশ ছাড়াও গুজরাতে উপ নির্বাচনেও কংগ্রেসকে নাস্তানাবুদ করেছে বিজেপি। সেই রাজ্যের ৮টি বিধানসভা কেন্দ্রেই জয়লাভ করেছে পদ্ম শিবির। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি উপনির্বাচনের ফলকে ২০২২ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ট্রেলার হিসেবে উল্লেখ করেন। উল্লেখ্য, রাজ্যসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস বিধায়করা দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়াতে এই আসনগুলি ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল।

মণিপুরেও জয় বিজেপির
এদিকে মণিপুরের ৫টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন হয়। এর মধ্যে সিংঘাট আসনে আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী জিনসুয়ানহু। এছাড়া সাইতু, ওয়াংগোই, ওয়াংজিং তেনথা আসনে জয়ী হন বিজেপি প্রার্থীরা। এছাড়া কর্নাটকেও দুটি আসনের মধ্যে দুটিতেই জয়ী হয় বিজেপি।

উত্তরপ্রদেশে মোদী ম্যাজিক
উত্তরপ্রদেশেও মোদী ম্যাজিক অব্যাহত ছিল। সেরাজ্যের ৭টি বিধানসভার উপনির্বাচনে ৬টিতে জিতেছে বিজেপি। নওগাওয়া সদত, বুলন্দশহর, তুণ্ডলা, বাঙ্গেরমাউ, ঘটমপুর ও দেওরিয়া কেন্দ্রে জয়লাভ করে বিজেপি। এছাড়া উত্তরপ্রদেশের আইনসভার নির্বাচনে লখনউ, মেরঠ সহ একাধিক আসনে জেতে বিজেপির প্রার্থী।

বড়োল্যান্ড নির্বাচনে বিজেপির বাজিমাত
এদিকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের এক বছর পূর্তির মাঝেই অসমের বড়োল্যান্ড স্বশাসিত পরিষদে নির্বাচন-পরবর্তী জোটে বাজিমাত করল বিজেপি। গণ সুরক্ষা পার্টি এবং ইউনাইটেড পিপলস পার্টি লিবারেলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বড়োল্যান্ড টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল দখল করতে চলেছে গেরুয়া শিবির।

হায়দরাবাদে পদ্মের উত্থান
এদিকে নিজামের শহরে পদ্মের উত্থান হল এবছরই। যা দেখে হতবাক গোটা দেশ। নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গে ফলাফল প্রকাশের পর দেখা গিয়েছে, টিআরএস-কে কড়া টক্কর দিয়ে কেসিআর-এর চিন্তা বাড়িয়েছে পদ্ম শিবির। টিআরএস এই নির্বাচনে জিতেছে ৫৬টি আসনে। এরপরেই তালিকায় রয়েছে বিজেপি। তাদের ঝুলিতে গিয়েছে ৪৯টি আসন। এদিকে ওয়েইসির মিম পায় ৪৩টি আসন। কংগ্রেস পেয়েছে দুটি আসন।

রাজস্থানে কংগ্রেসকে ধরাসায়ী করে বিজেপি
এদিকে উত্তর ভারত জুড়ে কৃষি আইন বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন অনুষ্ঠিত হয়ে রাজস্থানের পঞ্চায়েত নির্বাচন। রাজস্থানের পঞ্চায়েত সমিতিগুলিতে বিজেপি পেয়েছে ১৮৩৩টি আসন, যেখানে কংগ্রেসের ঝুলিতে ১৭১৩টি আসন। জেলা পরিষদে বিজেপি পেয়েছে ২৬৫টি আসন, কংগ্রেস পিছিয়ে রয়েছে ২০১টি আসন জিতে। মোট ২০টি জেলা পরিষদের মধ্যে ১২টিরে প্রধান বসাতে সক্ষম হয় বিজেপি। তবে সেই হারের পাল্টা জবাব দেওয়ার চেষ্টায় এবার কংগ্রেস ঘর সাজাচ্ছে।

সরকারে চাকরি প্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করুক মমতা! তৃণমূলের আসন সংখ্যা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী মুকুলের