প্রতীতি ঘোষ,বনগাঁ : শিয়রে বিধানসভা নির্বাচন। আর সেই লক্ষ্যেই ভোটের প্রচারে ময়দানে নেমে পড়েছে সব দলই। এবার উওর ২৪ পরগণার বনঁগার গোপালনগরে এসে সভাস্থল থেকে ফের বিজেপির বিরুদ্ধে গর্জে ওঠেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জনসভায় তিনি বলেন,”এই বাংলায় এনআরসি করতে দেবো না। বাংলাকে গুজরাট বানাতে দেব না।” তিনি আরও বলেন, “রাজ্যে কোনও ভাবেই এনআরসি বা সিএএ করতে দেবেন না। বাংলা থেকেই বাংলার লোকজনকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বিজেপি ,আমরা বাংলাকে কিছুতেই গুজরাত হতে দেবো না।”
এরই পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন কৃষি আইন নিয়ে প্রতিবাদও করেন এবং নাম না করে বহিরাগত কিছু গুন্ডা এরাজ্যে এসেছে বলে মুখ্যমন্ত্রী তোপ দাগেন বিজেপিকে।” কেন্দ্রীয় সরকারকে তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন ”পূর্ববঙ্গ থেকে যারা এদেশে এসেছেন তারাই এদেশের নাগরিক। এর জন্য নতুন করে কারও সার্টিফিকেট দরকার নেই। এখানে কারা থাকবেন তা ঠিক করবে রাজ্য সরকার।”
এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী এদিনের জনসভা থেকে মতুয়াদের নিয়ে আগাম কিছু প্রতিশ্রুতিও শোনান। মতুয়াদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ,সরকারি পাঠ্যপুস্তকে হরিচাঁদ ঠাকুরের জীবন কাহিনী রয়েছে। গত মাসেই মতুয়াদের জন্য আলাদা উন্নয়ন পরিষদ তৈরি করে তাতে আর্থিক সাহায্য দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী এমনটাও এদিন আরও একবার উল্লেখ করেন তিনি।
শুধু তাই নয়, আগামী বছর থেকে হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্ম দিন উপলক্ষে সরকারী ছুটি ঘোষণা করা হবে তাও জানান তিনি। এদিন সবুজসাথী প্রক্লপের সাইকেল প্রাপক ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী জানান, করোনা আবহে দেরি হলেও আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই পড়ুয়ারা সবুজ সাথী সাইকেল হাতে পাবে।’
সরকারি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও ঘুষ দিতে হবে না। যদি কেউ টাকা চেয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনে এফআইআর করুন এমনটাই সভা থেকে সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্য জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পাশাপাশি বিরোধী রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এদিন প্রকাশ্যে বলেন, “যদি তার মতো কেউ কাজ করে দেখায় তাহলে একদিনেই তিনি পদত্যাগ করবেন। বাংলার নাগরিকদের জন্য যতটা পারছি ততটা করে দিচ্ছি ,বাংলার ১০ কোটি নাগরিকের মধ্যে সাড়ে ৯ কোটি মানুষেরা কোনও না কোনও সরকারী প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন।’
‘আমার মতো কাজ ভারতের কেউ করতে পারলে আমি এখনই মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেব। বিনা পয়সায় খাদ্য,স্বাস্থ্য,বাচ্চাদের পোশাক,জুতো দিচ্ছি। কন্যাশ্রী,রুপশ্রী সবই দিচ্ছি। কোন রাজ্যে এত কিছু হয় দেখান? আর কত করবো? সরকারী সাহায্যের জন্য কোন জাত,ধর্ম,জাতি দেখা হয়না। হিন্দু,মুসলমান সহ সব ধর্মের পীঠস্থানগুলোকে আমরাই সাজিয়েছি।”
তিনি আরো বলেন, “দক্ষিনেশ্বর থেকে শুরু করে তারাপীঠ,কচুয়া-চাকলায় লোকনাথ বাবার আশ্রম,অনুকূল ঠাকুরের মন্দির থেকে শুরু করে মতুয়া পীঠস্থান ঠাকুরনগর,ফুরফুরা শরিফ সবটাই করেছি। সব ধর্মের জন্য সমানভাবে কাজ করেছি। মতুয়া সমাজের জন্য যা উন্নয়ন তা আমরাই করেছি। আগামী বছরের ক্যালেন্ডার রেডি হয়ে গিয়েছে । তা সত্বেও বলছি আগামীদিন মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশীতে মতুয়া ধর্মের ঠাকুর হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মদিন উপলক্ষে সরকারী ছুটি ঘোষনা করা হলো।”