স্টাফ রিপোর্টার, বর্ধমান : আকাশে-বাতাসে শীতের আমেজ। সেভাবে নেই ঝলসানো রোদের তেজ। ত্বকেও যেন হালকা টান,টান ভাব। সেভাবে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে শীত না পড়লেও, খাতায় কলমে বঙ্গে ভরপুর শীতের ছোঁয়া লেগে গিয়েছে।
আর এই শীতকাল পড়তেই যেমন ঘরে মন টেকেনা অনেকেরই, তেমনই চা-প্রেমী মানুষদের কাছে এই শীত মানেই ঘনঘন চা পান। শীতের সকাল হোক বা সন্ধ্যা এই চা-পানের মধ্যে রয়েছে অন্য এক স্বর্গীয় অনুভূতি। যা হয়ত চা না পসন্দ মানুষকে বলে বোঝানো সম্ভব নয়।
তবে সম্প্রতি চা পিপাসুদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তন্দুরী চা। কলকাতা ছাড়িয়ে এখন তন্দুরী চায়ের স্বাদ পাচ্ছেন বাংলার জেলাবাসীরাও। বাদ নেই খোদ বর্ধমান শহরের বাসিন্দারাও। কিন্তু এবার তন্দুরী চায়ের সঙ্গে ট্ক্কর নিতে শুরু করল লঙ্কা চা। লঙ্কা চায়ের নাম শুনেই অনেকেই আঁতকে উঠলেও চলতি সময়ে রীতিমত বর্ধমান শহরের উমা মেসের নিচে অবস্থিত গোবিন্দ সাহার চায়ের দোকানে এখন লঙ্কা চা খেতে লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে।
দোকানদার গোবিন্দ সাহা জানিয়েছেন, ১৯৮৩ সাল থেকে তিনি চায়ের ব্যবসা করে আসছেন। একসময় তাঁর তিনকোনিয়া বাসস্ট্যান্ডে দোকান ছিল। ২০১১ সাল থেকে দোকানের স্থান বদলে মিউনিসিপ্যাল স্কুলের পাশে উমা মেসের নিচের মার্কেটে দোকান খোলেন তিনি (জিটি রোড)। এরপর কেটে গিয়েছে অনেক গুলি বছর।
কিন্তু চলতি করোনা আবহে হঠাৎই মাস ছয়েক আগে তাঁর মাথায় আসে নতুন কিছু করার ভাবনা। এমনিতেই খদ্দেরদের দুধ চায়ের পাশাপাশি লিকার চায়ের চাহিদা বেড়েছে। তিনি আদা দিয়েই লিকার চা করেন।
কিন্তু পুজোর পর থেকেই লঙ্কা চা শুরু করেন। আর সেই চায়ের কদর এতটাই বেশি যে এক কাপ চা খেয়ে অনেকেরই পরিতৃপ্তি হচ্ছে না। বর্তমানে তাঁর দোকানে আসা খদ্দেররা এক কাপে চায়ে নয়, দু’কাপ করে চা খাচ্ছেন।
লঙ্কা চা’য়ের আবিস্কারক গোবিন্দ সাহা আরও জানিয়েছেন, আদা, কাঁচালঙ্কা ছাড়াও তিনি আরও কিছু মশলা ব্যবহার করছেন। এই সমস্ত মশলার বিষয়ে যদিও তিনি বিস্তারিত কিছু জানাতে রাজি হননি। জানালেই তাঁর হাত শুন্য হয়ে যাবে। এটা সম্পূর্ণ তাঁর মনোপলি বলে জানিয়েছেন তিনি।
গোবিন্দ সাহা জানিয়েছেন, তবে লঙ্কা , আদা ছাড়া যে সব মশলা ব্যবহার করছেন তা চলতি শীতকালে শরীরের পক্ষে ভীষণ উপকারী। চা বানাতে বানাতে তিনি আরও জানান, এখন তো খদ্দের সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। অনেক রাত পর্যন্ত দোকানে খদ্দের আসছেন।
৫টাকার লঙ্কা চা খেতে এখন গোবিন্দবাবুর দোকানে লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে চা পিপাসুদের। প্রতিদিন শুধুমাত্র লঙ্কা চা ৩০০ কাপ বিক্রি হচ্ছে। দুপুর ১২ টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত দোকান খোলা। তাহলে কী ভাবছেন? অনেক রকম ‘চা’ ই তো জীবনে খেয়েছেন। এবার কী একটু স্পেশাল ‘লঙ্কা চা’ চেখে দেখবেন নাকি?