কাভরাত্তি : কে বলবে দেশ জুড়ে তান্ডব চালাচ্ছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। ভারতের এই প্রান্তে গেলে বোঝাই যাবে না করোনা নামে কোনও আতঙ্ক বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়েছে। ভারতে এখন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৯৭.৩৫ লক্ষ ছাড়িয়েছে। বুধবার সকাল পর্যন্ত যে তথ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রক দিয়েছে, তাতে এমনই পরিসংখ্যান মিলেছে। এই অবস্থায় ভারতের প্রায় প্রত্যেকটি রাজ্যেই কম-বেশী করোনা সংক্রমণের শিকার। আর এই মারণ ব্যাধির দাপট ঠেকাতে কার্যত যখন নাজেহাল দশা সরকারের তখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এখনও ছুঁতে পারেনি ভারতের একটি রাজ্যকে।
লাক্ষাদ্বীপ। ভারতের এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে থাবা বসাতে পারেনি করোনা। ফলে এখানে জনজীবন স্বাভাবিক। রাস্তায় বেরোলে দেখা মিলবে না মাস্কের, প্রয়োজন পড়বে না স্যানিটাইজারের। এমনকী সংক্রমণ রুখতে যে সব বিধি নিষেধ ছড়িয়ে রয়েছে গোটা দেশে, এখানে তার কোনও বালাই নেই।
শুধু তাই নয়, এখানে বিয়ে বা সামাজিক যেকোনও অনুষ্ঠান সাড়ম্বরে হচ্ছে। ফলে করোনা সচেতনতার নিরিখে ভারতের এই রাজ্য হতে পারে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। কিন্তু কীভাবে সেটা সম্ভব হয়েছে। একটা মাত্র নিয়ম মেনেই সেখানে সাফল্য এসেছে করোনার বিরুদ্ধে। ভারতের ক্ষুদ্রতম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাক্ষদ্বীপ। এটি হল একটি দ্বীপপুঞ্জ যা ৩৬ টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত। এই দ্বীপপুঞ্জের মোট আয়তন মাত্র ৩২ বর্গ কিলোমিটার।
এর রাজধানী কাভরাট্টি এবং এটি এই দ্বীপের প্রধান শহরও বটে। সমস্ত দ্বীপপুঞ্জ তথা উপকূলীয় শহর কোচির ২২০ থেকে ৪৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই লাক্ষাদ্বীপ।
সূত্রের খবর, অবস্থানগত দিক থেকে এটি কেরলের কাছাকাছি অবস্থিত হওয়ায় সংক্রমণ রোধে প্রথম থেকেই কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল কেন্দ্রশাসিত এই অঞ্চলটি। অতিমারী ঠেকাতে গত ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে এই রাজ্যে প্রবেশের ক্ষেত্রে পর্যটক সহ যে কোনও ব্যক্তিকেই মানতে হচ্ছে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যাবতীয় সর্তকবিধি।
এই দ্বীপের সাংসদ মহম্মদ ফয়জল জানিয়েছেন বছরের শুরু থেকেই কড়া ব্যবস্থা নিয়েছিল লাক্ষাদ্বীপ। ফলে ৮ই ডিসেম্বর পর্যন্ত এই রাজ্যে কোনও করোনা আক্রান্তের খবর মেলেনি। সাংসদ জানিয়েছেন এই দ্বীপে প্রবেশ করতে গেলে যে কোনও পর্যটককে কোচিতে সাত দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। এই নিয়ম যে কোনও সাধারণ মানুষ, প্রশাসনিক আধিকারিক সহ সবার জন্য প্রযোজ্য। এখানে স্বাভাবিকভাবেই সব স্কুল কলেজ খোলা, ক্লাস চলছে সাধারণ নিয়ম মেনেই।