রাজস্থানে বিরোধী-ফাটল চওড়া করে স্লগ ওভারে বাজিমাত বিজেপির! বাংলার ভোটর আগে পদ্ম-স্ট্র্যাটেজি একনজরে
কার্যত স্লগ ওভারে ব্যাট ঘুরিয়ে পর পর ছক্কা! এই চেনা মেজাজেই হায়দরাবাদ পুর ভোটের পর এবার রাজস্থানে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেস দূর্গ ধূলিস্য়াৎ করে দিয়েছে বিজেপি। প্রথমে পিছিয়ে থেকেও, ওস্তাদের মার দিয়ে শেষ রাতে বাজি জিতে নেয় গেরুয়া শিবির। রাজস্থানে বিজেপির সুযোগের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বিরোধী শিবিরের ফাটল। এদিকে বাংলায় নির্বাচনের আগেও বিজেপির শত্রু শিবির তৃণমূলে একের পর এক ফাটল , দলীয় কোন্দল স্পষ্ট হচ্ছে। বাংলা নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে একনজরে দেখা যাক রাজস্থানে বিজেপির লাভ , কংগ্রেসকে কোন ক্ষতির মুখে দাঁড় করিয়েছে।

হায়দরাবাদের পর রাজস্থানে বিজেপির মরুঝড়!
কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানে , কার্যত কংগ্রেসের চেনা পিচে বিজেপি জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। সেখানে বিজেপির দখলে ১৮৩৬ টি আসন রয়েছে। অন্যদিকে, কংগ্রেসের দখলে ১৭১৮ টি আসন। ঠিক যেভাবে হায়দরাবাদে পুরভোটকে ফোকাস করে বিজেপি তেলাঙ্গানার ২০২৩ নির্বাচনকে নজরে রেখে এগিয়েছে। রাজস্থানেও একই বছরে বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল বিজেপিকে বাড়তি মাইলেজ দিয়েছে।

কংগ্রেসকে দুরমুশ ও বিজেপির জয়ের হাতিয়ার
এদিকে, ফলাফল বলছে, জেলা পরিষদের ভোটে বিজেপি ৩২৩ টি আসন ও কংগ্রেস ২৪৬ টি আসন পেয়েছে। এদিকে, রাজস্থানে কংগ্রেসের অন্দরে সচিন পাইলট- অশোক গেহলোট দ্বন্দ্বকে সামনে রেখেও বিজেপি খানিকটা মাইলেজে পেয়েছে। বিপক্ষের ক্রমাগত সাংগঠনিক দুর্বলতাকে সুরিণপুণভাবে বিজেপি কাজে লাগিয়েছে এককালে বসুন্ধরা রাজের দখলে থাকা রাজস্থানে। শুধু তাই নয়, এই পাইলট-গেহলোট সংঘাত যেখানে শেষ হয়েছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর আবার সেখান থেকে শুরু হতে পারে বলেও খবর উঠছে। ফলে বিজেপি সব দিকেই সুবিধার আসনে।

বাংলার ভোট ও রাজস্থানে বিজেপির স্ট্র্যাটেজি
সামনেই ভারতের ৪ রাজ্যে হাইভোল্টেজ বিধানসভা ভোট। তার আগে হায়দরাবাদ, বিহার, রাজস্থানে বিজেপির জয়, কার্যত পালে হাওয়া লাগার মতো ঘটনা! গভীরভাবে দেখলে দেখা যাবে শেষবার রাজস্থানের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসের অন্যতম কান্ডারী ছিলেন সচিন পাইলট। যাংর হাত ধরে গ্রামীন জমিতে বিজেপি কামড় শক্ত করেছে। আরসেই পাইলটের সঙ্গেই কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা তথা রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলোটের সংঘাত চাগাড় দেয়। ফলে কংগ্রেস দুর্বল হয়ে যায় রাজস্থানে। এদিকে, বাংলায় তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে শুভেন্দু অধিকারী তুলনাহীন বলে অনেকেই বিশ্বাস করেন। সেই শুভেন্দু এবার তৃণমূলের নেতৃত্বের বিরোধিতার সুর ধরেছেন। এমন এক ক্যানভাসে রাজস্থান ও বাংলার পরিস্থিতি মিলে যাচ্ছে। যেখানে রাজস্থানে পাইলট-গেহলোট টার্গেট করে দুর্বল হয়ে পড়া বিরোধীদের সহজেই স্ট্র্যাটেজি মতো মাত দিতে পেরেছে বিজেপি, সেখানে বাংলা রয়েছে গেরুয়া শিবিরের পাখির চোখ হিসাবে!

রাজস্থান ভোটের ফলাফলকে কাজে লাগানোর প্রক্রিয়া
ইতিমধ্যেই কৃষক আন্দোলনকে হাতিয়ার করে বিজেপি বিরোধিতায় মুখর তৃণমূল। শুধু তাই নয় ২০২১ সালে যে ৪ টি রাজ্য়ে ভোট আসন্ন সেই সমস্ত রাজ্যে বিজেপি বিরেধী পার্টিগুলি কৃষক আন্দোলন নিয়ে বিজেপিকে মাতদিতে চাইছে। এদিকে, রাজস্থানের গ্রামপঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির জয় সেখানে গেরুয়া শিবিরের কাছে বিরোধীদের মুখ বন্ধ কররা বড় সুযোগ। গ্রামের ভোটে রাজস্থানে বিজেপির জয়জয়কারকে তুলে ধরে বিরোধীদের কৃষক আন্দোলন নিয়ে আওয়াজকে কার্যত দমানোর চেষ্টায় লেগে পড়েছে পদ্মক্যাম্প। ইতিমধ্যেই অমিত মালব্য জানিয়েছেন, রাজস্থানে বিজেপির জয় স্পষ্ট করছে যে গ্রামের কৃষকরা আসলে কৃষিবিলের সমর্থনে রয়েছে।
এই প্রচার তারা আগামী দিনে আরও বাড়াতে পারে বলে খবর। যা কার্যত বাংলায় তৃণমূলকে মোকাাবিলা করতে হবে।

কংগ্রেস আরও এক সংঘাতের দিকে
এদিকে, রাজৈতিক পণ্ডিতরা মনে করছেন,রাজস্থান উপনির্বাচন মূলত কংগ্রেসের হার। কারণ সচিনপন্থীরা কার্যত এই নির্বাচনে সেভাবে কার্যকরী ভূমিকাই নেননি বলে দাবি সূত্রের। সচিন পন্থীরা কংগ্রেস হাইকমান্ডকে এই হারের হাত ধরে একটি বার্তা পৌঁছানোর চেষ্টাও করেছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। যা সবমিলিয়ে বড়তি সুবিধা দিয়েছে বিজেপিকে।
শহরে পা রাখতেই কালো পতাকা নাড্ডাকে, হেস্টিংসে ভিড়ের মাঝেই গো ব্যাক স্লোগান