শুভেন্দু ‘দল’ করছেন তৃণমূল বিধায়কদের নিয়ে! শীলভদ্র প্রসঙ্গে জল্পনা বাড়ালেন মুকুল
নন্দীগ্রামের মুক্তিসূর্যের মহানায়ক শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলে ছেড়ে দিতে চলেছেন, তা প্রায় পাকা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তিনি তৃণমূল ছেড়ে কোথায় যাবেন তা এখনও অস্পষ্ট রয়ে গিয়েছে। তবে এরই মধ্যে বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায় জল্পনা বাড়ালেন শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তায়।

শুভেন্দুকে নিয়ে জল্পনার শুরু মুকুল বিদায়ের পর থেকেই
মুকুল রায় বিজেপিতে যাওয়ার পর থেকেই শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে জল্পনার বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল। যদিও শুভেন্দুর কোনওদিনও মুকুল রায়ের সঙ্গে সখ্যতা ছিল না। তা সত্ত্বেও শুভেন্দুকে দলে টানতে তৎপর ছিল বিজেপি। তারপর তিন বছরেরও বেশি সময় কেটে গেলেও শুভেন্দু তৃণমূলেই রয়ে গিয়েছেন।

ভাঙনের শেষ সীমায় এসে দাঁড়িয়ে রয়েছে তৃণমূল
সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসে রদবদলের পর থেকেই শুভেন্দু দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেছেন। প্রশান্ত কিশোরের এন্ট্রি তিনি ভালোভাবে নেননি। সেখান থেকে ফাটল তৈরি। তা বাড়তে বাড়তে এখন ভাঙনের শেষ সীমায় এসে দাঁড়িয়ে রয়েছে। মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন শুভেন্দু। প্রাতিষ্ঠানিক সমস্ত পদ থেকেই প্রায় ইস্তফা দিয়েছেন তিনি।

শুভেন্দু বেঁকে বসতেই আরও নেতা-মন্ত্রী-বিধায়করা সরব
তৃণমূল শেষ চেষ্টা করেও ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে শুভেন্দুকে। এমতাবস্থায় শুভেন্দুর গতিবিধি নিয়ে নানা গুঞ্জন ছড়াচ্ছে। শুভেন্দু একা নয়, তিনি বেঁকে বসতেই তৃণমূলে আরও নেতা-মন্ত্রী-বিধায়করা সরব হতে শুরু করেছেন। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তার মধ্যে অন্যতম। মুকুল-ঘনিষ্ঠ বিধায়ক শীলভদ্র দত্তকেও মাঝেমধ্যে উল্টো সুর গাইতে শোনা যাচ্ছে।

মুকুল রায়ের মন্তব্যে চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার জোগাড়
এরই মধ্যে রটে যায় বারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত গিয়েছেন মুকুল রায়ের বাড়িতে। এ প্রসঙ্গে মুকুল রায় যা বললেন, তাতে চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার জোগাড়। মুকুল প্রথমে শীলভদ্র সম্পর্কে বলেন, ও তো রোজই আসে আমার সঙ্গে দেখা করতে। আমার সঙ্গে গল্প করে যায়। তবে এদিন আসেনি শীলভদ্র। আমার সঙ্গে দেখাও হয়নি।

শুভেন্দুর দলে রয়েছে শীলভদ্র, মুকুল ফাটালেন বোমা
মুকুল বোমাটা ফাটান তারপরেই। মুকুল বলেন, কীসের জল্পনা। বেশ কিছু বিধায়ক শুভেন্দুর সঙ্গে আছে। শীলভদ্রও তাদের সঙ্গেও আছে। এটুকু আমি জানি। এর বাইরে আমার কিছু জানা নেই। শুভেন্দু বিধায়ক হয়ে আছে তো কি হয়েছে, এই যে অনেক বাম-কংগ্রেস বিধায়ক তৃণমূলের জায়গায় বসছে, তারা কি কেউ বিধায়ক পদ ছেডে়ছে?

শুভেন্দু গণ আন্দোলনকে সম্মান জানিয়েই সিদ্ধান্ত নেবে
মুকুল রায় বলেন, শুভেন্দু অধিকারী বিধায়ক পদ না ছাড়লেও মন্ত্রিত্ব ছেড়েছে, এটা স্পষ্টষ শুভেন্দু একজন গণ আন্দোলনের ফসল। আমার বিশ্বাস শুভেন্দু গণ আন্দোলনকে সম্মান জানিয়েই নিজের সিদ্ধান্ত নেবে। তৃণমূল বলে কিছু নেই এখন। পার্টিতে যারা দল তৈরি করেছে, দলের জন্য রক্ত দিয়েছে, তারা উপেক্ষিত। যেদিন দল ছেড়েছিলাম, বলেছিলাম শেষের শুরু, এখনও বলছি শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূলে।

শুভেন্দু তৃণমূলের বিক্ষুব্ধদের নিয়ে একটা দল তৈরি করছেন!
মুকুল রায়ের এই কথায় অনেকটাই স্পষ্ট যে তৃণমূল ভাঙতে চলেছে। এবং শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের বিক্ষুব্ধদের নিয়ে একটা দল তৈরি করছেন। সেই দলে মুকুল ঘনিষ্ঠ তৃণমূল বিধায়করাও রয়েছেন। ফলে একুশের আগে অন্য সমীকরণের গন্ধ থাকছে এই বার্তায়। হয় শুভেন্দু সদলবলে বিজেপিতে যোগ দেবেন, নতুবা শুভেন্দু দল তৈরি করবেন এবং সেখানে মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠরাও থাকছেন। অর্থাওৎ মুকুল রায়ের জ্ঞাতসারেই ঘটছে সবকিছু!