আগরতলা: ‘বিপ্লব হটাও’ স্লোগানে মুখরিত হচ্ছে ত্রিপুরা বিজেপি অন্দরমহল। দিল্লি থেকে পাঠানো কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক বিনোদ সোনকরের উপস্থিতিতেই ক্ষমতায় থাকা দলের বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের আস্ফালন দেখা গিয়েছে। সরকার পক্ষের প্রায় সব বিধায়কের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে বিপ্লব দেব কে না সরালে দল ভাঙবে ও ক্ষমতচ্যুত হবে।
যদিও বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক বিনোদ সোনকর ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে জানান, দলের অভ্যন্তরে কোনও বিরোধিতা নেই। কিন্তু যেভাবে প্রকাশ্যেই বিজেপি বিধায়করা মুখ খুলছেন তাতে সরকারের সংকট বাড়ছেই।
এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি আইনের বিরোধিতায় দেশ জুড়ে চলতে থাকা সাধারণ ধর্মঘটের বিরাট প্রভাব পড়ল বিজেপি ও আইপিএফটি শাসিত ত্রিপুরায়। বনধের সমর্থনে প্রধান বিরোধী দল সিপিআইএম আগেই রাস্তায় নেমেছে। ধর্মঘটের জেরে রাজধানী আগরতলা পুরো স্তব্ধ। রাজ্যের অন্যত্র বিরাট প্রভাব পড়েছে বলেই খবর।
যদিও বিজেপির দাবি, এই কৃষি আইন আসলে কৃষকদের ভালোর জন্য। সিপিআইএমের কৃষক শাখা সারা ভারত কৃষকসভার নেতৃত্বে শতাধিক কৃষক সংগঠনের প্রায় ১২ লক্ষ সমর্থক দিল্লি ঘেরাও করেছেন। এই ধর্মঘটকে সমর্থন করেছে কংগ্রেস সহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন।
আগরতলায় কংগ্রেস নেতা কর্মীরা ধর্মঘটের পক্ষে নেমে মিছিল ও অবরোধ করেন। সেখানেই এক মহিলা কংগ্রেস সমর্থকের দাপটের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। তিনি লাঠি হাতে ধর্মঘট করাচ্ছেন। পুলিশ কার্যত নিরুপায়।
কংগ্রেসের এই দাপট দীর্ঘসময় রাজ্যে দেখা যায়নি। টানা ২৫ বছর বাম শাসনে রাজ্যে প্রধান বিরোধী ছিল কংগ্রেস। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন দাপুটে নেতা সুদীপ রায় বর্মণ। সেই মুহূর্তে কংগ্রেস বিরোধী দলের মর্যাদা হারান। পরে তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি তে যোগ দেন। তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্য থেকে মুছে যায়।
সেই নির্বাচনে টানা দু দশকের বাম শাসন শেষ হয়। মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরে যান মানিক সরকার। আর নতুন মুখ্যমন্ত্রী হন বিপ্লব দেব। বিজেপির অভ্যন্তরে বিপ্লববাবু কে নিয়ে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি চলছে।