চলতি আইএসএলে প্রথম হার এটিকে-মোহনবাগানের। জামশেদপুর এফসি’র বিরুদ্ধে সবুজ-মেরুনের ম্যাচের বিশ্লেষণে কলকাতা ২৪x৭-এ কলম ধরলেন আইএসএলের প্রাক্তন তারকা ফুটবলার রহিম নবি৷
ফুটবলে কেউ কোনওদিন প্রতিশ্রুতি দিতে পারে না কোনও টুর্নামেন্টে সব ম্যাচ জয়ের। এটিকে-মোহনবাগান আজ হয়তো হেরে গিয়েছে কিন্তু ওরা যে চেষ্টা করেছে শেষ অবধি সেটাই অনেক বড় ব্যাপার। মনবীর শেষদিক খুব চেষ্টা করেছে কিন্তু কামব্যাক করতে পারেনি। কারণ দু’গোলে পিছিয়ে থেকে এইসব ম্যাচে ফিরে আসাটা খুব সহজ ব্যাপার নয়।
তবে মোহনবাগান যে গোলটা করেছে সেটা নিয়েও একটা প্রশ্নচিহ্ন রয়ে যাচ্ছে। ধারাভাষ্যকারেরাও কিন্তু বারংবার বলছিলেন। সে যাইহোক রেফারির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এমনটা ফুটবলে হয়েই থাকে। আর সেই গোলটা যখন ম্যাচের ফলাফলে কোনও প্রভাব ফেলেনি তখন এটা নিয়ে কথা না বাড়ানোই ভালো। মোহনবাগানের জন্য এটাই বলব একটা ম্যাচ হেরে গিয়েছে বলে এতো হা-হুতাশ করার আমি কিছু দেখছি না। জামশেদপুরকে আমি বাহবা দেব এইজন্যই যে ওরা কঠিন ম্যাচটা বের করে নিতে পেরেছে।
আজকে এটিকে-মোহনবাগান কেন পয়েন্ট খোয়াল সেটা যদি আমায় বলতে বলা আমার মনে হয়ে উইনিং কম্বিনেশন ব্রেক করাটা আজ উচিৎ হয়নি। যদিও হাবাসের স্ট্র্যাটেজিটাই এমন। আমি ওনার কোচিংয়ে খেলেছি আমি জানি আন্তোনিও হাবাস প্রত্যেক ম্যাচে একই দল মাঠা নামান না। একইসঙ্গে প্রথম তিন ম্যাচে জয়ের একটা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস এটিকে-মোহনবাগান দলটায় আজ প্রথমার্ধে কাজ করেছে। তবে সেজন্য জামশেদপুরের কৃতিত্ব কোনওভাবেই খাটো করা যায় না।
আজ খেলার প্রথমার্ধে এটিকে-মোহনবাগান ন’টা কর্নার হজম করেছে, এই বিষয়টা একটা উল্লেখযোগ্য বিষয়। আর এজন্য আমি আজ জামশেদপুরের উইং-প্লে’র প্রশংসা করব। জ্যাকিচাঁদ, উইলিয়াম এবং মোবাশিরের আমি প্রশংসা করব। আর ভালস্কিসকে নিয়ে আলাদা করে কী বলব, গত মরশুমের গোল্ডেন বুট জয়ী। এবারেও ইতিমধ্যেই ৫টা গোল হয়ে গেল। আজকেও দারুণ একটা ম্যাচ খেলল। এটিকে-মোহনবাগানকে আজ সবদিক থেকেই জামশেদপুর টেক্কা দিয়েছে।
মনবীর এবং শেখ সাহিলকে এনে এটিকে -মোহনবাগান যে পরিবর্তন এনেছিল সেটা জামশেদপুর রক্ষণকে বেগ দিয়েছিল সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। মনবীর বরাবরই পরিবর্ত হিসেবে নেমে দলকে সেরাটা উজাড় করে দেয়। আজ আমার মনে হয় ওকে আরেকটু আগে নামালে বেশি ভালো হত। শেষদিকে প্রবীরের সঙ্গে মেলবন্ধনে রয় কৃষ্ণা তো আরও একটা গোল করেও ফেলেছিল। কিন্তু জামশেদপুরের ডিফেন্স আজ অনবদ্য, বিশেষ করে পিটার হার্টলের কথা বলব। সবমিলিয়ে বলব শেষদিকে সবুজ-মেরুন ফুটবলারদের মধ্যে যে প্রচেষ্টা দেখা গিয়েছে সেটা শুরু থেকে হলে ভালো হত।
কারণ আজ যখন থেকে এটিকে-মোহনবাগান ফুটবলারদের তাগিদটা লক্ষ্য করলাম তখন অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছে। সবমিলিয়ে এটাই বলব ভেঙে পড়ার কিচ্ছু হয়নি। শেষে এটাই বলব সমর্থকেরা কোচের উপর ভরসা রাখুক। এরকম দু-একটা ফলাফল হতেই পারে। এটা নিয়ে কাটাছেঁড়া করার কিছু নেই। যে দলের কোচের নাম আন্তোনিও লোপেজ হাবাস, সে দলের সমর্থকেরা ভালো কিছুর জন্য প্রত্যাশা করতেই পারে।