মমতা-শুভেন্দুর পথ কি মেদিনীপুরের সভা থেকেই বেঁকে গেল দু'দিকে! বাড়ল জল্পনা
শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠকের মধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয় বলে তৃণমূল দাবি করেছিল। এমনকী তৃণমূল কংগ্রেস জানিয়েছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে মেদিনীপুরের সভায় উপস্থিত থাকতে আর্জি জানিয়েছেন। কিন্তু সেই দাবি মতো সেই আর্জি খারিজ করে শুভেন্দু দূরেই থাকলেন মমতার সভা থেকে।

মমতা ও শুভেন্দুর পথ ভিন্ন হয়ে গিয়েছে!
শুভেন্দু অধিকারী আসেননি মমতার সভায়, আসেননি অধিকারী পরিবারের কেউই। এমনকী পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি শিশির অধিকারীও আসেননি মেদিনীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভায়। অধিকারী পরিবার ছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা প্রায় স্পষ্ট করে দিল শুভেন্দুর পথ ভিন্ন হয়ে গিয়েছে।

একসঙ্গে পথ চলা আর নয়, একুশেই ইতি!
নন্দীগ্রামের আন্দোলন পর্ব থেকে শুভেন্দুর উত্থান শুরু হয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একসঙ্গে পথ চলতে শুরু করেছিলেন শুভেন্দু। তারপর ২০১১ সালে পরিবর্তন হয়েছিল। ৩৪ বছরের বাম সরকারে পতন হয়েছিল। মমতার সেই পরিবর্তনের যুদ্ধে শুভেন্দু অধিকারী ছিলেন সামনের সারিতে। কিন্তু ২০২১-এর আগে তিনি আবার সরে যান পিছনের সারিতে।

২০১৯ থেকে ২০২০, বদলে গেল আমূল চিত্র
২০১৯-এর লোকসভা শুভেন্দু একা হাতে পাঁচ জেলার দায়িত্ব সামলেছেন। মুর্শিদাবাদের মতো কংগ্রেসি জেলায় তিনি ঘাসফুল ফুটিয়েছেন। কিন্তু ২০২১-এর আগে তৃণমূলের রদবদলের পর থেকেই শুভেন্দু দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেন। বিশেষ করে তৃণমূলে পর্যবেক্ষক পদ তুলে কো-অর্ডিনেটর প্রথা চালু করার পর পাঁচ জেলার কর্তৃত্ব হাতছাড়া হয়েছে। শুভেন্দু তারপরই সমান্তরাল জনসংযোগ শুরু করেন।

একসঙ্গে পথ চলা সম্ভব নয়, জানান শুভেন্দু!
শুভেন্দু অরাজনৈতিক সভা থেকে তৃণমূলে দূরত্ব বৃদ্ধি করতে থাকেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দুকে লাইনে আনতে সৌগত রায়কে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তিনি অভিষেক-পিকের সঙ্গে শুভেন্দুকে বসিয়ে মিটমাটের চেষ্টাও করেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বৈঠক সদর্থক বলে দাবি করার পরদিনই শুভেন্দু জানিয়ে দেন এভাবে একসঙ্গে পথ চলা সম্ভব নয়।

মমতা মেদিনীপুরে, শুভেন্দু কলকাতায়! পথ আলাদা
শুভেন্দুর এরপর কোনও মন্তব্য করেননি প্রকাশ্যে। তাঁর অনুগামী বা ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে তিনি দক্ষিণ কলকাতার কোনও এক জায়গা থেকে রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে বার্তা দেবেন। তারপর পুরুলিয়ায় দাদার অনুগামীরা আবার আলাদা কার্যলয় খুলছেন। আর এদিন যখন মমতা মেদিনীপুরে সভা করছেন, তখন শুভেন্দু কলকাতায় বলে জানা গিয়েছে বিশেষ সূত্রে।

মেদিনীপুরের মাটিতে মমতার জনসভা অধিকারীরা ছাড়াই!
শুভেন্দু ও অধিকারীদের ছাড়াই এদিন নিঃশব্দেই ইতিহাস গড়ে ফেলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেদিনীপুরের মাটিতে জনসভা অধিকারীরা ছাড়াই সফল, তা এককথায় বলাই যায়। জন সমাগমও ছিল বিপুল। তার মাঝেই মমতা স্পষ্ট করে দিলেন- অধিকারী-বন্দ্যোপাধ্যায় সবাইকে নিয়েই তৃণমূলের সংসার। তবে মমতার সভায় শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ কোনও নেতা আসেননি বলেই জানা গিয়েছে।
মমতা সরকারকে উৎখাতের পণ করেছে বিজেপি, হুঙ্কার তেজস্বীর, পাল্টা গিলেন সৌগত