বিজেপি বাংলায় আদিবাসী ভোটব্যাঙ্কে বড় ধাক্কা খেতে পারে ঝাড়খন্ডের হেমন্ত সোরেনের এক বড় বাউন্সারে! একনজরে তথ্য
জল মেপে বাংলায় পা ফেলছে বিজেপি। মমতার গড় দখলে একাধিক হিসাব কষে তবেই ময়দানে নেমেছে দেশের এই জাতীয় দল। বাংলায় ভোটব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে আদিবাসী ভোটব্যাঙ্ক একটি বড়ৃ দিক। লোকসভা নির্বাচনের সময়ে এই এই আদিবাসী ভোটব্যাঙ্ক রীতিমতো সম্ভাবনা দেখিয়েছে বিজেপিকে। এমন এক পরিস্থিতিতে বিজেপি বাংলায় এই আদিবাসী ভোটব্যাঙ্ক যখন দখল করতে চাইছে, তখন তার মাঝে কাঁটা হয়ে ওঠার ইঙ্গিত আসছে বাংলার প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খন্ডের সরকারের এক সিদ্ধান্তের হাত ধরে!

বিজেপির বাড়া ভাতে ছাই!
বাংলায় বিজেপি আদিবাসী ভোটব্যঙ্ক যখন দখল করার চেষ্টায়, তখন পার্শ্ববর্তী ঝাড়খন্ডের সরকার , তথা বিজেপির বিরোধীপক্ষে থাকা ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার হেমন্ত সোরেন সরকার বিজেপিকে বড়সড় বিপাকে ফেলেছেন তাঁর এক সিদ্ধান্তেই! ঝাড়খন্ডে ভোটের আগে বিজেপিই আদিবাসীদের এই প্রতিশ্রুতি দেয় যে সেখানে 'সর্না কোড রেজোলিউশন' হবে। যা আদিবাসীদের স্বীকৃতির ক্ষেত্রে বড় বিষয়। কিন্তু বিজেপির আনা সেই প্রতিশ্রুতি এবার সরকারে বসে পূরণ করতে চাইছে ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা। আর বিধানসভায় এই বিল নিয়ে এসে এবার তারা বিজেপিক সম্মতির অপেক্ষায়।

কেন বিপাকে বিজেপি?
সারনা কোড নিয়ে বিজেপির রাস্তা সরু হচ্ছে। কারণ যদি এই সিদ্ধান্তে বিধানসভায় বিজেপি সমর্থন না করে তাহলে আদিবাসী ভোটব্যাঙ্ক দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর যদি তাতে সায় দেয়, তাহলে .ঝাড়খন্ড মুক্ত মোর্চা মানুষকে জানান দেবে যে বিজেপি যা করতে পারেনি, তা সোরেন সরকার করেছে। ফলে দুই দিক থেকেই বিজেপির ক্ষতি।

বাংলার রাজনীতি ও তফশিলী ভোটব্যাঙ্ক
বাংলায় তফশিলী ভোটব্যাঙ্ক মোট ভোটব্যাঙ্কের প্রায় ৬ শতাংশ। মূলত, জলপাইগুড়ি, দিনাজপুর, বর্ধমানের কিছু অংশ, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর , ঝাড়গ্রামের বহু অংশে এই তফশিলী বলয় রয়েছে। যা ২০২১ এ বিজেপিকে বাংলার মসনদে বসানোর জন্য একটি বড় সম্ভাবনা। এদিকে, পশ্চিমবঙ্গ সহ একাধিক রাজ্যের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সংগঠন সরনা কোড নিয়ে সরব বহুদিন ধরে। তাঁদের দাবি তাঁরা আদমসুমারীতে অংশই নেবেন না যদি না সরনা কোড লাগু হয়। ফলে ঝাড়খন্ডের বিধানসভায় বিজেপি কোন স্টান্স নেয় , তার ওপর নির্ভর করছে বাংলায় বিজেপির আদিবাসী ভোটব্যাঙ্ক ভাগ্য।

সরনা কোড কী?
একাধিক আদিবাসী গোষ্ঠীকে আলাদা আলাদা সম্প্রদায় হিসাবে চিহ্নিত করার কথা বলে সরনা কোড। গোটা দেশের ৬ কোটি মানুষ যাঁরা আদিবাসী গোষ্ঠীর অন্তর্ভূক্ত তাঁরা নিজেদের সরনা সম্প্রদায়ভূক্ত বলে জানান। আর এই ধর্মকে ২০১১ সালের আদমসুমারীতে রাখা হয়নি বলে ক্ষোভ উগড়ে দেয় বহু আদিবাসী গোষ্ঠী।

আদিবাসী ভোটব্যাঙ্ক ও তৃণমূল-বিজেপি
উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ , আদিবাসী বলয়ের যে সংস্ত জায়গায় বিজেপির তাবড় নেতারা প্রচারে গিয়েছেন , সেখানেই আদিবাসী গৃহস্থে গিয়ে মধ্যাহ্নভোজ করতে দেখা গিয়েছে অমিত শাহদের। এরপর ২০২১ সালে বাংলায় ধুন্ধুমার প্রচারের প্রথম জায়গা হিসাবেই আদিবাসী বলয়ের বাঁকুড়াকে বেছে নেয় বিজেপি। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ভোটে জঙ্গলমহলের ৫ টি বড় আসন তৃণমূল দখল করতে পেরেছে এই আদিবাসী ভোটব্যাঙ্কের দৌলতে। ২০১৮ সালের বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৪৬ শতাংশ ভোট ঝাড়গ্রাম ,পুরুলিয়া থেকে পায় তৃণমূল। যে নির্বাচনে কার্যত বিজেপি প্রভাব খাটাতে শুরু করে। গ্রামে গ্রামে সঙ্ঘ পরিবারের কাজের জেরে এই ভোটব্যাঙ্ক বিজেপির দিকে ঝুঁকে যায়। এরপর ঝাড়খন্ডের সরনা কোড বিজেপিকে সেই জায়গা থেকে কোথায় দাঁড় করায় , দেখা যাক।
শুভেন্দু কলকাতায় ঘুরছেন মেদিনীপুরে মমতার সভা চলাকালীন! বড়সড় ঘোষণার জল্পনা