আইএসএল ২০২০-২১ : ন্যায্য পেনাল্টি না পাওয়া থেকে ডিফেন্সে খামতি, এসসি ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচ হারের কারণ
ইন্ডিয়ান সুপার লিগ বা আইএসএলে প্রথমবার অংশ নেওয়া এসসি ইস্টবেঙ্গলের কাছে শুরুটা যে দুঃস্বপ্নের থেকে কিছু কম নয়, তা দলের সমর্থকরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ডার্বি হার দিয়ে শুরু। মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে ৩-০ গোলের শোচনীয় পরাজয়ের পর দল নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াবে বলে ভেবেছিলেন এসসি ইস্টবেঙ্গলের ফ্যানরা। বাস্তবে হয়েছে উল্টোটাই। হারের হ্যাটট্রিক করে লজ্জাজনক অধ্যায় রচনা করেছে রবি ফাওলারের দল। নর্থইস্টের বিরুদ্ধে ঠিক কোথায় কোথায় ম্যাচ হারাল লাল-হলুদ, তা দেখে নেওয়া যাক।

ন্যায্য পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত
নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে ম্যাচের প্রথম থেকেই আক্রমণে ঝড় তোলে ইস্টবেঙ্গল। আন্টোনি পিলকিংটন এবং জ্যাকুয়াস মাঘোমার মধ্যে দুর্দান্ত বোঝাপড়া চোখে পড়ে। দুর্দান্ত টার্নিংয়ে বেশ কয়েকবার গোলের কাছেও পৌঁছে যান মাঘোমা। ফলে তাঁকে টার্গেট করে ফেলেন প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার। ম্যাচের ২০ মিনিটে উইদাউট বলে মাঘোমাকে নিজেদের বক্সে ফেলে দেন নর্থইস্ট ইউনাইটেডের আশুতোষ মেহেতা। তবু এসসি ইস্টবেঙ্গলকে নায্য পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত করেন রেফারি। দ্বিতীয়ার্ধেও একই ভুল করেন ম্যাচের নিয়ন্ত্রক।

ডিফেন্সে খামতি
গত দুই ম্যাচে এসসি ইস্টবেঙ্গলের খেলায় যা দেখা যায়নি, সেই মাঝমাঠ এবং আক্রমনভাগে সেই গতি নজরে পড়ে শনিবারের ম্যাচে। গোলের জন্য প্রথম থেকে ঝাঁপাতে গিয়ে দলের রক্ষণভাগের ফাঁক-ফোকরগুলি ভরাট করতে ভুলে যান লাল-হলুদ কোচ রবি ফাওলার। গত ম্যাচের মতো নর্থইস্ট ইউনাটেডের বিরুদ্ধেও আইরিশ ড্যানি ফক্সের অভাব ভীষণভাবে অনুভূত হয়। মুম্বই সিটি এফসি-র মতো শনিবারের ম্যাচেও চাপে পড়ে আবারও ভুল করে ফেলেন লাল-হলুদ ডিফেন্ডার সুরচন্দ্র সিং। নর্থইস্টের বিরুদ্ধে আত্মঘাতী গোলটি আসে তাঁর পা থেকেই। ডিফেন্ডারদের ভুলেই ম্যাচে দ্বিতীয় গোল খায় লাল-হলুদ। প্রতি আক্রমণ নির্ভর রণনীতিতেই বাজিমাত করে নর্থইস্ট।

বিশেষ পরিবর্তন না করা
গত ম্যাচে যে দল নামিয়ে মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে হারতে হয়েছিল এসসি ইস্টবেঙ্গলকে, শনিবার সেই দলে বিশেষ পরিবর্তনের ইচ্ছাপ্রকাশ করেননি কোচ রবি ফাওলারের। গত ম্যাচে দাগ কাটতে ব্যর্থ হওয়া বলবন্ত সিং-কে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে রাখা হয়। যদিও প্রথমার্ধের পর আর মাঠে নামার সুযোগ পাননি পাঞ্জাবের স্ট্রাইকার। পরিবর্তে সিকে বিনিথকে নামানো হয়। এই পরিবর্তন আগেই আশা করেছিলেন লাল-হলুদ ফ্যানরা। অভিজ্ঞ এগুয়েনসন লিংডো-কেও দেরি করে নামানোর মানে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ফ্লপ ডিফেন্ডার সুরচন্দ্র সিং-কে দলে রাখার কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না লাল-হলুদ ফ্যানরা।

সেট পিসের অপব্যবহার
ম্যাচে ৬৪ শতাংশ বলের নিয়ন্ত্রণ থাকে এসসি ইস্টবেঙ্গলের পায়ে। নিজেদের মধ্যে ৪৯৫টি পাস খেলেন আন্টোনি পিলকিংটনরা। সাতটি কর্নার পায় লাল-হলুদ। বেশ কয়েকটি ফ্রি-কিকও পেয়ে যান রবি ফাওলারের ছেলেরা। তবে সেট পিসগুলি কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় এসসি ইস্টবেঙ্গল। নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে ম্যাচ হারের এটিও অন্যতম কারণ।