এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলটদের 'বিদ্রোহ', বিলগ্নিকরণের আগেই ম্যানেজমেন্ট বনাম কর্মী তরজা
এয়ার ইন্ডিয়াকে কিনতে ইচ্ছাপত্র জমা দেবেন কর্মীরা। নিয়ম অনুযায়ী, কর্মীরা সংস্থার দায়িত্ব নিতে চাইলে, ন্যূনতম ২০০ জনকে নিয়ে কনসর্টিয়াম বা গোষ্ঠী গড়তে হয়। তবে এবার ম্যানেজমেন্টের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে এই প্রক্রিয়ায় অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল সংস্থার পাইলট সংগঠন। এই পরিস্থিতিতে এয়ার ইন্ডিয়ার বিলগ্নীকরণের বিরুদ্ধে সরব হল সেই সংস্থার পাইলটদের সংগঠন। এদিকে করোনার হামলা শুরু হওয়ার পর থেকেই এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলটদের ৭০ শতাংশ বেতন কমানো হয়েছে। এর বিরোধিতা করেছেন পাইলটদের সংগঠন।

৭০ শতাংশ বেতন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে পাইলটদের
সংগঠনের তরফে মন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানানো হয়েছে যে, এয়ার ইন্ডিয়া, এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস এবং অ্যালায়েন্স এয়ারের পাইলটদের ৭০ শতাংশ বেতন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ, সংস্থার শীর্ষে থাকা কর্তাদের বেতন মাত্র ১০ শতাংশ কমানো হয়েছে।

বেতন হ্রাসের ধাক্কা মেনেই কাজ করে গিয়েছে পাইলটদের
সংগঠনের এক প্রবীণ নেতার বক্তব্য, 'বেতন হ্রাসের ধাক্কা কাঁধে নিয়েই এই পাইলটেরা দিনের পর দিন কাজ করে গিয়েছেন এবং অনেকে কোভিডে আক্রান্তও হয়েছেন। তার পরেও এ ধরনের আচরণের কোনও ব্যাখ্যা নেই। সে জন্যই আমরা প্রতিবাদ করছি।' এছাড়া পাইলট সংগঠনের তরফে বেতন কমানো সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি মেনে না নেওয়ার আবেদন রেখেছে সদস্যদের কাছে।

বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু
প্রসঙ্গত, বিমান সংস্থাটির প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকার দেনা রয়েছে এবং সরকার এ'বছর জানুয়ারিতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে এর বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু করে। ২০১৮-১৯ সালে এয়ার ইন্ডিয়ার মোট লোকসান হয় প্রায় ৮,৫০০ কোটি টাকা। কেন্দ্রের বক্তব্য, প্রতিবছর ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকার ইক্যুইটি দেওয়া সম্ভব নয় এবং এয়ার ইন্ডিয়ায় ব্যয় কমানো জরুরি।

কেন্দ্রের তরফে সাহায্য করা সম্ভব নয়
কেন্দ্র জানায়, এয়ার ইন্ডিয়া সরকারের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা চাইলেও এটি সম্ভব নয় কারণ করোনা পরিস্থিতিতে সমাজের দুর্বল অংশগুলিকে ত্রাণ দেওয়ার মতো অন্যান্য চাহিদাও পূরণ করতে হবে কেন্দ্রকে। প্যানডেমিক চলাকালীন ভারত ও অন্যান্য দেশে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞার জেরে বিমান সংস্থাগুলি উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত হয়েছে।

বিশাল অঙ্কের ঋণে ডুবে রয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া
বিশাল অঙ্কের ঋণে ডুবে রয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। এই পরিস্থিতিতে সরকারের কাছে এই অবস্থায় দু'টি রাস্তাই খোলা রয়েছে, হয় এয়ার ইন্ডিয়ার বেসরকারিকরণ, নতুবা উড়ান সংস্থাটিকে পুরোপুরিভাবে বন্ধ করে দেওয়া। তবে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় সরব পাইলটদের সংগঠন। এর আগে সংস্থার ম্যানেজমেন্টের তরফে এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মীদের থেকে ১ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার আবেদন করা হয়েছিল। তবে পাইলটদের সংগঠন সেটাও করতে চাইছে না।

বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি
এয়ার ইন্ডিয়ার বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলিও। তবে কেন্দ্রের বক্তব্য, ৬০ হাজার কোটি টাকার ঋণের বোঝা রয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার ঘাড়ে। এই অবস্থায় বেসরকারিকরণ করা বা না করাটা বিষয় নয়, বিষয়টি হল বেসরকারিকরণ করা অথবা উড়ান সংস্থাটিকে পুরোপুরিভাবে বন্ধ করে দেওয়া। প্রসঙ্গত, কেন্দ্র এয়ার ইন্ডিয়ার একশো শতাংশ মালিকানা বিক্রি করার পরিকল্পনা করেছে। সম্প্রতি উদ্ভুত করোনা পরিস্থিতির কারণে, নিলামের অন্তিমসীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।
দূরত্ব বাড়ছে তৃণমূল-সাধন পাণ্ডের! 'দুয়ারে সরকারের' অলিন্দে আরও চওড়া ঘাসফুল শিবিরের ফাটল