ফিরে দেখা ২০২০: ইতিহাস তৈরি করে ভারতে রাফালের দর্পের পদার্পণ
তখন ভারতের লাদাখ সীমান্তে প্রবল সংঘাতের মেজাজে চিন। ২০২০ সালের মে মাসে লাদাখে চিনা আগ্রাসনের পর অগাস্ট নাগাদ চৈনিক আস্ফালনের মাত্রা আরও বাড়তে শুরু করে। ঠিক এমন এক পরিস্থিতিতে ভারতের বুকে আকাশ কাঁপিয়ে পা রাখে রাফালে যুদ্ধবিমান। একা চিন নয়, পাকিস্তানকেও রক্তচক্ষু দেখিয়ে এই বিমান ভারতে পদার্পণ করে। ফিরে দেখা সেই পর্ব।

২৯ জুলাইয়ের ইতিহাস
প্রায় ৭ হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ২৯ জুলাই আম্বালার বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে পাঁচটি রাফায়েল যুদ্ধবিমান। অবতরণের সঙ্গে সঙ্গেই রাফালগুলিকে দেওয়া হয় ওয়াটার স্যালুট। রাফায়েলের অবতরণের মুহূর্তে সেখানে উপস্থিত ছিলেন বায়ুসেনা প্রধান, সিডিএস বিপিন রাওয়াত সহ বাহিনীর অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্তারা। পাশাপাশি প্রশংসার বন্যায় ভেসে যান এই বিমানগুলি উড়িয়ে আনা পাইলটরা।

পোস্টার বয় ও ইতিহাস
রাফালের ভারতে পা রাখার দিনটি কার্যত ভারতের ইতিহাস তৈরির দিন। মুহূর্তে বায়ুসেনার পোস্টার বয় হয়ে ওঠা রাফালে ভারতে নিয়ে আসার দায়িত্বে ছিলেন গ্রুপের ক্যাপ্টেন হরকিরাত সিং সহ অন্যান্য পাইলটরা। গ্রুপ ক্যাপ্টেনের অধীনে থেকে এই উড়ান পূরণ করেন উইং কমান্ডার এম কে সিং, আর কাতারিয়া, সিধু এবং অরুণ।

এক লম্বা সফর ও দর্পের অধ্যায়
ফ্রান্সের মেরিগনেক-এ ডাসোঁ অ্যাভিয়েশন ফ্যাসিলিটি থেকে পাঁচটি ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স রাফাল যুদ্ধবিমান ভারত উদ্দেশে রওনা দেয়৷ আরব আমিরশাহির আল ধাফরা এয়ারবেসে জ্বালানি ভরার জন্য বিমানগুলি দাঁড়িয়ে থাকে। সেখান থেকে এই রাফায়েলগুলি চালিয়ে নিয়ে আসেন ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলটরা৷ এই পাঁচটি যুদ্ধবিমান পৌঁছায় আম্বালা এয়ারবেসে।

এরপর রাফালে ঘিরে উৎসব
অগাস্টের ১০ তারিখে এরপর বায়ুসেনায় সংযুক্তিকরণ হয় রাফালের। আর সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ফ্রান্সের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফ্লোরেন্স পারলি ভারতে আসেন। লাদাখ পরিস্থিতিতে ফ্রান্সের মন্ত্রীর এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

রাফালে সম্পর্কে তথ্য
এদিকে ২০১৬ সালের ভারত ও ফ্রান্সের চুক্তি অনুযায়ী বর্তমানে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান পাওয়ার কথা রয়েছে ভারতের। তার মধ্যেই প্রথম ৫টি চলে আসে অগাস্টেই। এরপরে অক্টোবর পার করে ধীরে ধীরে বাকি রাফালে জেটও ভারতে নামে দ্বিতীয় ক্ষেপে। অপেক্ষা চলে বাকি ক্ষেপের রাফালের। এই রাফায়েল জেটগুলি বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে সক্ষম। পাশাপাশি এর মধ্যেই এয়ার-টু- এয়ার এবং স্কাল্প ক্রুইজ ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে।

রাফালের ক্ষমতা
অনেকই চিনের 'স্টেলথ এয়ার সুপিরিওরিটি ফাইটার' জে-২০-র সঙ্গে এর তুলনা টানা শুরু হতে থাকে। যদিও সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে রাফাল আসার পরে আকাশ-যুদ্ধের প্রযুক্তিতে চিনকে পিছনে ফেলে দিতে চলেছে ভারতীয় বায়ু-সেনা। পাশাপাশি উৎকর্ষের দিক থেকেও ভারতের অন্যতম প্রধান প্রতিযোগী পাকিস্তান বিমানবাহিনীও কার্যত তুলনাতেই আসবে না। অনেক উঁচু থেকে হামলা চালানো, যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করা, মিসাইল নিক্ষেপ এমনকি পরমাণু হামলা চালানোর ক্ষমতাও রয়েছে রাফালের। পাকিস্তান ও চিনের আগ্রাসন বন্ধ করতে রাফাল ফাইটার জেট বায়ুসেনার অন্যতম অস্ত্র হয়ে উঠবে বলেই মত বায়ুসেনার।
কৃষক বিক্ষোভের উপর পড়তে পারে আইনি কোপ, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা সুপ্রিমকোর্টে