শুভেন্দু কোন মন্ত্রবলে ফের তৃণমূলমুখো! অভিষেকের মাস্টারস্ট্রোকে মমতার টোটকা
যেতে নাহি দিব, স্রেফ নাছোড়বান্দা মনোভাবই শুভেন্দু অধিকারীকে তৃণমূল ছাড়তে দিল না। অভিষেক-পিকেকে নিশানায় বৈঠকের শুরু হলেও শুভেন্দুর হাতে ধরে যে বার্তা দিলেন অভিষেক, সেখানেই সবব বরফ গলে জল হয়ে গেল। তারপর মমতার একটা টোটকাতেই শুভেন্দুর এতদিনের মান-অভিমানের নিবৃত্তি ঘটল বলে দাবি।

অভিষেক-পিকের মুখোমুখি শুভেন্দু বসতেই বরফ গলল
সৌগত রায় প্রথম থেকেই বলে আসছেন, শুভেন্দু তৃণমূল ছাড়তে চান না। তাঁর বিশ্বাস শুভেন্দুর সঙ্গে আবলোচনার দুয়ার এখনও বন্ধ হয়নি। তিনি চেয়েছিলেন যাঁদের বিরুদ্ধে শুভেন্দুর অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গে শুভেন্দুকে বসিয়ে মাস্টারস্ট্রোক দিতে। তিনি সেখানে ১০০ শতাংশ সফল। অভিষেক-পিকের মুখোমুখি শুভেন্দু বসতেই বরফ গলতে শুরু করে।

ফোনে মমতার সঙ্গে কথাই শুভেন্দুর মন ঘোরাল
আসলে যুযুধান দুই পুক্ষ অভিষেক-শুভেন্দুর মুখোমুখি আলোচনায় বসা এবং ফোনে মমতার সঙ্গে কথাই শুভেন্দুর মন ঘোরাল। শুভেন্দুর সঙ্গে বৈঠকে অভিষেক-পিকে ছাড়াও ছিলেন মধ্যস্থতাকারী দুই প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে শুভেন্দু সৌগত বলেন, শুভেন্দু দল ছাড়ছে না, বাকি শুভেন্দুই পরে জানাবে।

পিকে এবং অভিষেক হস্তক্ষেপ করবেন না শুভেন্দুর কাজে
শুভেন্দুর আপত্তি ছিল পিকে-অভিষেকের দল পরিচালনায়। রফাসূত্র মিলেছে সেই পথেই। ঠিক হয়েছে, শুভেন্দু যে পাঁচটি জেলার দায়িত্বে ছিলেন, সেই পাঁচ জেলায় পিকে এবং অভিষেক প্রার্থী নির্বাচনে কোনও হস্তক্ষেপ করবেন না। অর্থাৎ পর্যবেক্ষক পদ তুলে নেওয়ার পর ওই পাঁচ জেলার কর্তৃত্ব শুভেন্দর হাতে ফের ফিরে আসছে।

শুভেন্দুর হাত ধরে অভিষেকের বার্তা, সব অভিমান দূর
এদিন বৈঠকের শুরুতেই শুভেন্দুর হাত ধরে অভিষেক বলেন, সকলে মিলে একসঙ্গে দল চালাবো আমরা। দলের ভালোর জন্য নির্বাচনের আগে নিজেদের মধ্যে লড়াই না করে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলাই উচিত। আমরা সকলেই দলকে ভালোবাসি। দলের জয়টাই এখন মুখ্য। শুভেন্দুও বলেন, আমরা একজনকে দেখেই দল করি। তিনি হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য কারও নির্দেশ বা হস্তক্ষেপ তাঁর পক্ষে মান কঠিন।

অভিষেকের ফোনে শুভেন্দুকে কি বার্তা দিলেন মমতা
এরপরই অভিষেক তাঁর নিজের ফোন থেকে মমতার সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন শুভেন্দুর। সূত্রের খবর, মমতা শুভেন্দুকে বলেন, সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। এখন সকলে মিলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ৭ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে যাচ্ছেন তিনি। শুভেন্দু যেন ওই সভায় আসেন। এখন দেখার শুভেন্দু ওই সভায় উপস্থিত হন কি না।

শুভেন্দু দল ছাড়লে তা পর্টির পক্ষে মঙ্গল হত না
বৈঠক শেষে শুভেন্দুর কোনও বিবৃতি না মিললেও, সৌগত রায় দাবি করেছেন শুভেন্দু তৃণমূলেই থাকছেন। এরপর শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারীও দাবি করেছেন খুব ভালো খবর, দলের পক্ষে মঙ্গল হবে। শুভেন্দু দল ছাড়লে তা পর্টির পক্ষে মঙ্গল হত না। তা উপলব্ধি করেই সৌগত রায় ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়িত্ব দিয়েছিলেন শুভেন্দুকে পার্টিতে ধরে রাখার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই ভরসার দাম দিলেন সৌগত।

শুভেন্দুর সঙ্গে অভিষেক ও পিকের বৈঠক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, শুভেন্দুর সঙ্গে অভিষেক ও পিকের বৈঠক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কেননা পিকে ও অভিষেকের বিরুদ্ধেই মূলত অভিষোগ ছিল শুভেন্দুর। তাঁদের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠক করে শুভেন্দু ইতিবাচক সাড়াই দিয়েছেন বলে তৃণমূলের দাবি। এই বৈঠক শেষে শুভেন্দু বা অভিষেক কিছু না জানালেও, সৌগতর মতো বর্ষীয়ান নেতার দাবি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।