স্টাফ রিপোর্টার, কলকাতা: দলের ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন মদন মিত্র। সেইসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘প্যাক আপ’ লিখে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। আর তারপরই পরিবহণ দফতরের একটি কমিটিতে চেয়ারম্যান করা হল তাঁকে।
পরিবহণ কর্মীদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা ও কল্যাণমূলক প্রকল্পের দেখভাল করার জন্য প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের নেতৃত্বে নতুন কমিটি গড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার নবান্ন থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী পরিবহণ দফতরের কর্মীরা স্বাস্থ্যসাথী-সহ অন্যান্য সরকারি প্রকল্পের সুযোগসুবিধা পাচ্ছেন কিনা তা খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটিরই চেয়ারম্যান করা হয়েছে মদন মিত্রকে। এছাড়াও কমিটিতে রয়েছেন ট্রান্সপোর্ট ডিরেক্টরেটের ডেপুটি ডিরেক্টর, এসটিএ’র ডেপুটি সেক্রেটরি, এছাড়া পরিবহণ সংস্থার কমিটিগুলির সদস্যরাও রয়েছেন।
শুভেন্দু অধিকারী ইস্তফা দেওয়ার পরে পরিবহণ দফতর নিজের হাতেই রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু প্রকল্প ধরে ধরে দফতরের পরিস্থিতি তদারকি করা মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে সম্ভব নয়। সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী হিসেবে মদন মিত্রর এই বিষয়ে অভিজ্ঞতা রয়েছে, কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগও তিনি করতে পারবেন।
সদ্যই মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দলবদলের জল্পনায় সরগরম রাজনৈতিক মহল। শীলভদ্র দত্ত, জটু লাহিড়ীর মত কয়েকজন দলের বিরুদ্ধে বেসুরো। ইতিমধ্যেই কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহির গোস্বামী বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।
ভোটকৌশলী প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করছেন তাঁরা। তার ফলে অস্বস্তিতে ঘাসফুল শিবির। আর এই প্রেক্ষাপটে প্যাক আপ লিখে ফেসবুকে পোস্ট করেন মদন মিত্র। এরপর সোমবার মুখ খোলেন তিনি। একাধিক ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন মদন মিত্র।
সম্প্রতি ফেসবুকে চায়ের কাপ হাতে ছবি পোস্ট করেন মদন মিত্র। ছবির ক্যাপশনে লেখা টাইম ফর প্যাক আপ। সেই পোস্টের পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়ে যায় জল্পনা।
সোমবারই প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে সরাসরিই ক্ষোভ উগরে দেন মদন মিত্র। তিনি বলেন, “পিকে দলের স্ট্রাটেজি ঠিক করবে, আমি কামারহাটির মানুষকে কেমন করে কাছে পাব, সেটা পিকে আমায় শেখাবে?”
তাৎপর্যপূর্ণভাবেই মদনের মুখে উঠে আসে লিফট প্রসঙ্গও। তিনি বলেন, “ক্যাপসুল লিফট আমার বাড়িতে নেই…কথায় কথায়, কলকাতা থেকে মালদা-মুর্শিদাবাদ যাই না। চপারে করে কলকাতা ছাড়ার ভাগ্য আমার নেই।”তৃণমূলকে বিঁধে তিনি বলেন, “দলে এখন মেক আপ তোলার কাজ চলছে!”
একসময় তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের একদম সামনের সারিতে ছিলেন। কিন্তু, সারদাকাণ্ডে গ্রেফতারি, বিধানসভা ভোটে হারের পর কিছুটা পিছনের সারিতে চলে যান মদন মিত্র। আর তাতেই দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ে তাঁর। বিধানসভা নির্বাচনের আগে মদন মিত্রের মত দক্ষ সংগঠকের ক্ষোভ প্রশমিত করার চেষ্টা যে দল করছে, তা স্পষ্ট তাঁর সরকারি পদ পাওয়ায়।