ইংরেজবাজার:  মন্ত্রিত্ব থেকে শুভেন্দু অধিকারী ইস্তফা দিতেই, প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই দলের মালদহ জেলার কোর কমিটিতে বৈঠকে ডাকেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। কিন্তু তলব করা জরুরি এই বৈঠকে অনুপস্থিত মালদহ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী তথা রাজ্য সভার সাংসদ মৌসম বেনজির নুর। এমনটাই সূত্রে খবর। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা।

নেত্রীর আত্ম সহায়ক তথা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হেমন্ত শর্মা টেলিফোনে জানিয়েছেন, রাতে জ্বর হয়ে যাওয়ায় বৈঠকে যেতে পারেন নি। এর পিছনে অন্য কারণ নেই। কিন্তু গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা জানানো হয়। হঠাৎই বৈঠকে না যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

জেলার পর্যবেক্ষক থাকাকালীন শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়া। তাই রাজনৈতিক মহল মনে করছে বৈঠকে মৌসমের অনুপস্থিত নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে। পাশাপাশি অসুস্থতার কারণে সাবিত্রী মিত্র বৈঠকে যোগ দেন নি।

অন্যদিকে, শুভেন্দু অধিকারীর নন্দীগ্রামে সভার দিন দিঘা সফরে গিয়ে দলের রোষের মুখে পড়তে হয়েছিল। যদিও প্রবল অস্বস্তির মুখে পড়ে দলের অন্দরে ভুল স্বীকার করে ফের শুরু করেছিলেন কাজ। শুক্রবার দুপুরে মন্ত্রী সভা থেকে শুভেন্দু ইস্তফা দিতেই ‘চুপ’ তাঁর ঘনিষ্ঠ মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌর চন্দ্র মণ্ডল।

এমন কি, ঘরে-বাইরে শুভেন্দু নিয়ে মন্তব্যও এড়িয়ে চলছেন তিনি। তিনি কি দাদার পথে? যদিও গৌরবাবু সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “এটা (শুভেন্দুর ইস্তফা) রাজ্যের বিষয়। এখানে আমি কোনও মন্তব্য করব না।”

শুধু গৌর একাই নয়, তাঁর মতো এখন চুপ করে রয়েছে মালদহে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতা-নেত্রীই। তাঁদের একাংশের দাবি, শুভেন্দুদা দলে থাকাকালীনই তাঁর অরাজনৈতিক সভায় যোগ দিয়ে অনেকেই দলের রোষের মুখে পড়েছেন। পদাধিকারীদের নিরাপত্তা রক্ষী তুলে নেওয়া হয়েছে। তাই দাদা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত চুপ করে থাকার পথেই হাঁটছেন শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত জেলা তৃণমূল নেতাদের একাংশ।

যদিও দল যে কোনও বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করবে না তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। শুভেন্দুর মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরেই মালদহের জেলা শীর্ষ নেতৃত্বকে জরুরি তলব করলেন দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। আর সেই বৈঠকেই অনুপস্থিত মালদহ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী তথা রাজ্য সভার সাংসদ মৌসম বেনজির নুর।

২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মালদহে ভরাডুবির পরেই তৃণমূলের জেলার পর্যবেক্ষক হন শুভেন্দু। তাঁর নেতৃত্বেই লড়াই করে ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহ পুরসভার দখল নেয় তৃণমূল। বিধানসভায় ভরাডুবি হলেও পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল সাফল্য পায় জেলায়।

সেই সঙ্গে জেলায় শুভেন্দুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে অনেকের।শুধু জেলা পরিষদই নয়, শুভেন্দু অনুগামী রয়েছে পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক পদাধিকারীও।

তৃণমূলের একাংশ নেতার দাবি, “শুভেন্দু জেলার পর্যবেক্ষক থাকার সময় প্রতিটি বিধানসভায় জেলার দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সারির নেতাদের পর্যবেক্ষক করে বসিয়েছিলেন।

সেই পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে ফোনে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন শুভেন্দু। তাই ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের পদাধিকারী, কাউন্সিলর, বিধানসভার একাংশ পর্যবেক্ষকের উপরে এখন নজর রাখছে পালটা শাসকদল তৃণমূলও।

স্বামীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বস্ত্র ব্যবসাকে অন্যমাত্রা দিয়েছেন।'প্রশ্ন অনেকে'-এ মুখোমুখি দশভূজা স্বর্ণালী কাঞ্জিলাল I