ইসলামাবাদ: একের পর এক প্রমাণ। ভারতের মাটিতে সন্ত্রাস ছড়ানোর বীজ যে পাকিস্তানই বুনে চলেছে, তার অকাট্য প্রমাণ ভারত দিয়ে এসেছে বারবার। এবার ফের প্রমাণ হয়ে গেল ২০০৮ সালে মুম্বই হামলার পিছনে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদের হাত ছিল। মুম্বই হামলার ১২ বছর পূর্তিতে সেই ১০ জন লস্কর-ই-তইবা জঙ্গিদের স্মরণে পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের শাহিওয়ালে বিশেষ সভার আয়োজন করা হল।
এই ১০ জন জঙ্গিই মুম্বই হামলা চালিয়ে ছিল। ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর আরব সাগর দিয়ে বাণিজ্যনগরীতে ঢুকে পড়েছিল দশ সশস্ত্র লস্কর জঙ্গি৷ গোটা শহরকে ঘিরে ফেলে শুরু হয় তাদের তাণ্ডব৷ কালাশনিকভ হাতে মুম্বই শহরে দাপিয়ে বেড়ায় আজমল কাসব সহ দশ লস্কর জঙ্গি৷ এলোপাথাড়ি গুলি আর বিস্ফোরণে ১৮ জন নিরাপত্তাকর্মী সহ মৃত্যু হয় ১৬৬ জন নিরীহ মানুষের৷
গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে লস্কর এই সভার আয়োজন করেছে ওই ১০ জন জঙ্গিকে শ্রদ্ধা জানাতে। বিশেষ প্রার্থনারও আয়োজন করা হয়েছে। যে জঙ্গিদের শ্রদ্ধা জানানো হবে, তার মধ্যে রয়েছে আজমল কাসভও। লস্কর যে মসজিদগুলি নিয়ন্ত্রণ করে, সেখানেই প্রার্থনা সভার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে খবর।
লস্কর প্রধান হাফিজ সইদ বর্তমানে কারাদন্ডে দন্ডিত। ২০১৯-এর জুলাইতে গ্রেফতার করা হয়েছিল ওই জঙ্গিনেতাকে। হাফিজ সইদের মাথার দাম রাষ্ট্রসংঘে ১০ মিলিয়ন ডলার। তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডে আর্থিক সাহায্য করার জন্য ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২৬/১১ মুম্বই হামলার মূল চক্রী হাফিজ সইদকে দু’টি সন্ত্রাসের মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় পাকিস্তানের আদালত। চলতি বছর এই নিয়ে চতুর্থবার দোষী সাব্যস্ত হয় হাফিজ। আদালতের এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে পিটিআই জানায়, লাহোরের সন্ত্রাসবিরোধী আদালত জামাত-উদ-দাওয়ার প্রধান-সহ ৪ জনকে আরও দু’টি মামলায় সাজা দেয়। হাফিজ সইদ ও তার দুই সহযোগী জাফর ইকবাল, ইয়াহা মুজাহিদকে সাড়ে ১০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। হাফিজের শ্যালক আবদুল রেহমান মাক্কিকে দেওয়া হয় ৬ মাসের কারাবাস।
তবে শাস্তি ঘোষণা হওয়ার পরও কাউন্টার-টেররিজম বিভাগের অফিসাররা হাফিজ সইদের সঙ্গে ভিআইপি-র মত ব্যবহার করছে বলে খবর মেলে। এসইউভি গাড়িতে করে ঘুরছে হাফিজ সইদ ও তার সঙ্গী-সাথিরা বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়।