সরকারি পদ থেকে ইস্তফা শুভেন্দু অধিকারীর, তৃণমূলের সঙ্গে বিরোধ কোথায় গিয়ে দাঁড়াল?
শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বিড়ম্বনা বাড়ল বই কমল না। এবার হুগলি নদী ব্রিজ কমিশনারের পথ থেকে সরে দাঁড়ালেন শুভেন্দু অধিকারী। যার ফলে তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে ফের একবার তুমুল জল্পনা শুরু হল।

শুভেন্দুকে নিয়ে চলেছে জল্পনা
গত কয়েক মাস ধরেই তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর দলবদল নিয়ে তুমুল জল্পনা চলছে রাজ্য রাজনীতিতে। তিনি বিজেপিতে যাবেন নাকি নতুন দল করবেন তা নিয়ে নানা জায়গায়, আলোচনার টেবিলে, সংবাদমাধ্যমে জোর আলোচনা চলেছে।

শুভেন্দুর নানা জায়গায় সভা
বেশ কিছুদিন ধরেই শুভেন্দু অধিকারী নিজের দলের ব্যানার ছাড়াই বিভিন্ন জেলায় সভা করছিলেন। যার ফলে জল্পনা আরও বেড়ে গিয়েছিল। তবে কয়েকদিন আগে রামনগরের সভায় শুভেন্দু যে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তাতে মনে হয়েছিল আপাতভাবে তিনি তৃণমূলে থাকছেন।

তৃণমূলকে বার্তা
রামনগরে সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, আমি একটি দলের সঙ্গে রয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী আমাকে তাড়াননি এবং আমিও ছেড়ে যাইনি। এই কথা বলার সঙ্গে বেশ কয়েকটি ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন শুভেন্দু। তবে সার্বিকভাবে মনে হয়েছিল তিনি আপাতত তৃণমূলেই থাকছেন।

শুভেন্দুকে নিয়ে আলোচনা
শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দলের মনোমালিন্য নিয়ে দলের কয়েকজন হেভিওয়েট নেতা আলোচনার টেবিলে বসেছেন। শুভেন্দু নাকি তাদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দল করতে তার কোনও আপত্তি নেই। তবে যেভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রশান্ত কিশোর দল চালাচ্ছেন তা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না।

শুভেন্দুর রাগের কারণ
অর্থাৎ শুভেন্দু মোটামুটি স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন এই মুহূর্তে যেভাবে তৃণমূল কংগ্রেস চলছে তাতে তার পক্ষে দল করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। যদিও মধ্যস্থতার জন্য হাজির হওয়া সৌগত রায়ের মতো তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য ছিল যে শুভেন্দু তৃণমূলের রয়েছেন। তারা সকলে একসঙ্গে লড়াই করবেন। যদি কোনও বিষয়ে কোনও মতপার্থক্য থাকে, তা আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করে নেওয়া হবে।

মমতার পাল্টা
তবে বুধবার বাঁকুড়ার সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না করে দলের বিক্ষুব্ধ নেতাদের যেভাবে কড়া বার্তা দিয়েছেন তারপর থেকেই জল্পনা আরও বেড়ে গিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি জানেন কারা গোপনে অন্য দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। কারা কীভাবে দল বিরোধী কাজ করার চেষ্টা করছেন এই সবকিছুই তিনি সময় এলে বুঝে নেবেন বলেও কার্যত হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী দলের নেতাদের ছাগলের তৃতীয় সন্তানের সঙ্গেও তুলনা করেন।

শুভেন্দুর ইস্তফা
এরপরই এদিন জানা গিয়েছে হুগলি নদী ব্রিজ কমিশনের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এই ঘটনা কিসের ইঙ্গিত তা নিয়ে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। তাহলে কি তৃণমূলে শুভেন্দু অধিকারীর দিন শেষ হয়ে এল? তাহলে কি সৌগত রায়রা পারলেন না শুভেন্দুকে বুঝিয়ে রাজি করাতে? নাকি মুখ্যমন্ত্রীর কড়া আক্রমণে শেষ অবধি এটা স্পষ্ট করে দিল যে দলের ঊর্ধ্বে তিনি কাউকেই প্রশ্রয় দেবেন না। আপাতত কি ঘটনা হবে তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা অব্যাহত থাকল। এদিন শুভেন্দুর জায়গায় চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।