আইএসএলে প্রথমবার পেশাদার ফুটবলের মোড়কে কলকাতা ডার্বি৷ মুখোমুখি এসসি ইস্টবেঙ্গল বনাম এটিকে-মোহনবাগান। ম্যাচের আগাম বিশ্লেষণে কলকাতা ২৪x৭-এ কলম ধরলেন আইএসএলের প্রাক্তন তারকা ফুটবলার রহিম নবি৷
ডার্বি এমন একটা খেলা যে এই ম্যাচ নিয়ে কোনওদিনই কোনও বিশ্লেষণ চলে না। আগামীকাল এসসি ইস্টবেঙ্গল এবং এটিকে-মোহনবাগান আইএসএলের মঞ্চে প্রথম ডার্বি খেলতে নামছে বলে আমুল কিছু বদলে যাবে না। কালকের ম্যাচেও আগাম কোনও প্রেডিকশন ধোপে টিকবে। ডার্বি মানে মাঠে ফুটবলারদের কাছে মাঠের ৯০ মিনিট ফাইট লাইক আ ওয়ার, যাকে যুদ্ধ বলি আমরা।
আগামীকাল এসসি ইস্টবেঙ্গল বনাম এটিকে-মোহনবাগান ম্যাচেও কোনও হিসেব-নিকেশ চলবে না। এখানে ৯০ মিনিট একটাই মন্ত্র চলবে এবং সেটা হল লড়াই লড়াই আর লড়াই। আর সত্যি কথা বলতে ডার্বির মত ম্যাচে যে দলের উইং পাওয়ার যত বেশি সেই দলের কাছে ম্যাচ বের করে নেওয়ার ক্ষমতা তত বেশি।
ফুটবলারদের মধ্যে লড়ার মানসিকতাটাই আসল ব্যাপার। একইসঙ্গে এই ম্যাচে একটা দলের এগারোজনকেই সমান কার্যকরী ফুটবল খেলতে হবে নইলে জয় সম্ভব না। কোনও ফুটবলার দলের ফর্মেশনের সঙ্গে যদি মানিয়ে না নিতে পারে তাহলে দলের পক্ষে তা বিপজ্জনক।
এসসি ইস্টবেঙ্গল আনকোরা একটা দল হওয়ার জন্য অনেকে চিন্তা করছে ডার্বির গুরুত্ব ফুটবলারদের পক্ষে বোঝা সম্ভব হবে কীনা। কিন্তু আমার মনে হয় এই দলে সামাদ রয়েছে, শংকর রয়েছে, দেবজিতের মত ফুটবলাররা রয়েছে যারা নতুন ফুটবলারদের ডার্বির মাহাত্ম্য বোঝাতে পারবে।
তাছাড়া ইস্টবেঙ্গল জার্সির একটা বাড়তি ওজন রয়েছে। সাতটা বছর আমি এই জার্সিটা পরে খেলে এসেছি তো, আমি জানি বিষয়টা। আর একটা ম্যাচ জিতে মাঠে নামার জন্য এটিকে-মোহনবাগানকে যদি কেউ এগিয়ে রাখে তাহলে সেটা যুক্তিযুক্ত হবে না।
যদি দেখা যায় এটিকে-মোহনবাগান কোনওরকম প্রস্তুতি ম্যাচ ছাড়াই প্রথম ম্যাচ খেলেছে। ইস্টবেঙ্গল এখনও কোনও ম্যাচ খেলেনি ঠিকই কিন্তু রবি ফাওলার প্রস্তুতি ম্যাচে সবাইকে দেখে নিয়েছেন।
আবার এটিকে-মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গলকে দেখে নেওয়ার কোনও সুযোগ পায়নি। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের সেই সুযোগটা হয়েছে। রবি ফাওলারের দলের ফুটবলাররা জানে বিপক্ষের কোন ফুটবলার কতটা ভয়ংকর। এটা ইস্টবেঙ্গলের ক্ষেত্রে কিছুটা সুবিধা হতেই পারে।
কিন্তু আন্তোনিও লোপেজ হাবাস আমার মনে হয় রক্ষণ জমাট রেখেই আক্রমণে যাবে। সেক্ষেত্রে সন্দেশ ঝিঙ্গান ইস্টবেঙ্গলের কাছে একটা ফ্যাক্টর হতে পারে। যেহেতু ভারতীয় প্লেয়ারদের অনেকটা বেশি চেনে ও। তবে সন্দেশের চেয়েও ইস্টবেঙ্গলের অনেক বেশি চিন্তার কারণ আমার মনে হচ্ছে তিরিকে। আমি ওর সঙ্গে একটা সময় এটিকে’তে খেলেছি আমি ওর ক্ষমতা জানি। তাই আমার মনে হয় তিরিকে যদি ইস্টবেঙ্গলের ফরোয়ার্ড লাইন শুরু থেকে চাপে রাখে তাহলে তা কাজে আসবে।
কারণ ‘অচেনা প্রতিপক্ষ’, এই বিষয়টুকু ছাড়া এটিকে-মোহনবাগানকে চাপে রাখার কোনও কারণ নেই। আন্তোনিও লোপেজ হাবাস ভারতের জল-হাওয়া সম্পর্কে অনেক বেশি ওয়াকিবহাল। কলকাতায় চতুর্থ বছর কোচিং করাচ্ছেন।
সুতরাং এটিকে-মোহনবাগানকে চাপে ফেলার দায়িত্ব ইস্টবেঙ্গলের কাছেই। আর লাল-হলুদের কোচের হটসিটে রবি ফাওলারের মতো একজন রয়েছেন। তিনি নিজেও বহু ডার্বির অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন ফুটবল জীবনে। পাশাপাশি অ্যান্থনি পিলকিংটন, মাত্তি স্টেইনম্যান, জ্যাক ম্যাঘোমারা তো আছেনই। সবমিলিয়ে আমার কাছে কালকের ম্যাচে কেউ এগিয়ে থাকবে না। ডার্বি বরাবরের মতো ৫০-৫০।