'হ্যান্ড অফ গড' থেকে মাদকাসক্তি, কেন ইতিহাসে বিতর্কিত 'কিং সাইজ' মারাদোনা!
মাত্র ৬০ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন ফুটবলের রাজপুত্র। দিয়েগো মারাদোনার অকাল মৃত্যু যে শূন্যতা তৈরি করল, তা যে পূরণ হওয়ার নয়, অকপটে মেনে নিচ্ছে ফুটবল মহল। অথচ কেরিয়ারের বিভিন্ন সময়ে সেই মহানায়ককেই শুনতে হয়েছে কত না কথা! পোশাকে সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে কত না উপমা, শ্লেষোক্তি। তবু কিংবদন্তি থেকে গিয়েছিলেন রাজারই মতো। বিতর্ককে মুঠোয় ভরে বুক চিতিয়ে বেঁচে এবং বাঁচিয়ে দিয়ে গিয়েছেন সহস্রকে। 'লিভ লাইক কিং সাইজ' মারাদোনার প্রয়াণ মনে করিয়ে দেয় সেসব বিতর্কিত অধ্যায়।

লিওনেল মেসির সমালোচনা
বিশ্বকাপ সহ তিনটি আন্তর্জাতিক মানের টুর্নামেন্টের ফাইনাল হেরে হতাশ হয়ে জাতীয় দলের জার্সিকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি। যদি কিছু মাস পর নিজের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করেছিলেন এলএম টেন। যা মনঃপুত হয়নি দিয়োগো মারাদোনার। মেসিকে সমালোচনায় বিদ্ধ করেছিলেন কিংবদন্তি। তা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল।

মারাদোনার কু-ইঙ্গিত
২০১৮ সালের বিশ্বকাপের রাউন্ড অফ ১৬-এ খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে নাইজেরিয়াকে হারাতেই হত আর্জেন্টিনার। গুরুত্বপূর্ণ ওই ম্যাচে দুই দলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল। ২-১ গোলে ম্যাচ জিতেছিল আর্জেন্টিনা। গোল করেছিলেন লিওনেল মেসি। ম্যাচ শেষে স্টেডিয়ামে বসে জয়ের আনন্দে কু-ইঙ্গিত করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন দিয়েগো মারাদোনা। তাঁর ছবি ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়।

মারাদোনার লাথি
মাঠে এবং মাঠের বাইরে মেজাজ হারিয়েছেন বর্ণময় দিয়েগো মারাদোনা, এমন ঘটনা নেহাত কম নয়। মাথা গরম করেই এক বিতর্কিত ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছিলেন ফুটবলের রাজপুত্র। দুবাইয়ে আল ওয়াসল ক্লাবের অনুষ্ঠানে এক ফ্যান লাথি মেরে বসেছিলেন দিয়েগো।

সাংবাদিকের গালে থাপ্পড়
বান্ধবীকে নিয়ে যাচ্ছিলেন দিয়েগো মারাদোনা। ভিড়ের ঠেলাঠেলি এবং সাংবাদিকদের প্রশ্নবানে জর্জরিত হয়ে মাথা গরম করে ফেলেছিলেন ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক। এক সাংবাদিককে কষিয়ে থাপ্পড় মেরেছিলেন কিংবদন্তি।

মেসির ব্যক্তিত্ব নিয়ে সওয়াল
এক অনুষ্ঠানে ফুটবল সম্রাট পেলের মুখোমুখি হয়েছিলেন রাজপুত্র মারাদোনা। সেখানে পূর্বসূরিকে দিয়েগো বলেছিলেন, লিওনেল মেসি মানুষ হিসেবে ভাল হলেও, তাঁর কোনও ব্যক্তিত্ব নেই। সেই ঘটনা বিতর্ক তৈরি করেছিল।

হ্যান্ড অফ গড
১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল আর্জেন্টিনা। জয়ী দলের হয়ে দুটি গোল করেছিলেন অধিনায়ক দিয়েগো মারাদোনা। তাঁর মধ্যে একটি শতাব্দীর সেরা গোলের মর্যাদা পেলেও অন্যটি স্পষ্ট হাতে লেগে তেকাঠির জালে জড়িয়ে যাওয়া নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। যা এখনও অব্যাহত।

মাদকাসক্তি ও ডোপিং
১৯৯১ সালে ইতালির নাপোলি ক্লাবে খেলার সময় দিয়েগো মারাদোনার শরীরে নিষিদ্ধ কোকেনের উপস্থিতি মিলেছিল। তাঁকে ১৫ মাসের জন্য ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপে কিংবদন্তির বিরুদ্ধে ডোপিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হলে, তাঁকে টুর্নামেন্ট থেকে নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করা হয়। ১৯৯৮ সালে সাংবাদিককে গুলি করার অভিযোগে জেলবন্দি হয়েছিলেন মারাদোনা।