ধর্মঘটে জনজীবন সচল রাখতে অতিতৎপর মমতার সরকার, শহর জুড়ে মোতায়েন ৪০০০ পুলিশ
একগুচ্ছ ইস্যুতে প্রতিবাদ জানাতেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আজ দেশজুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক পড়েছে। তার মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণের প্রতিবাদ, মূল্যবৃদ্ধি, কেন্দ্রের কৃষি আইন, শ্রম কোড। এই একাধিক ইস্যুকে সামনে রেখেই বৃহস্পতিবার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনগুলি। ধর্মঘটকে সমর্থন করছে আইএনটিইউসি-ও। কলকাতায় অবশ্য জোর করে ধর্মঘট করার চেষ্টা হলে রুখে দাঁড়াবে পুলিশ। সেই সূত্রে শহরে মোতায়েন করা হচ্ছে সাড়ে চার হাজার অতিরিক্ত বাহিনী। প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় থাকবে পিকেটিং।

ধর্মঘটের বিরোধিতা
২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এরাজ্যে ধর্মঘট করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। যেকোনও ধরনের ধর্মঘটের বিরোধিতা করা হয় নবান্নের তরফে। এবারও পরিবহন দফতরের পক্ষ থেকে বাস মালিকদের আবেদন জানানো হয়েছে পথে গাড়ি নামানোর জন্য। পাশাপাশি অতিরিক্ত সরকারি বাস চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সঙ্গে গোটা রাজ্য জুড়ে করা হচ্ছে পুলিশি ব্যবস্থা।

তৃণমূলকে এই ধর্মঘটের সমর্থনের আহ্বান
যদিও বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনের নেতারা তৃণমূলকে এই ধর্মঘটের বিরোধিতা না করে সমর্থন জানানোর আর্জি জানিয়েছেন। এমনিতে ইস্যুগুলো নিয়ে তৃণমূলেরও বিরোধিতা রয়েছে। তবে দাবি আদায়ে ধর্মঘট কোনও পন্থা হতে পারে না বলে মনে করছে তৃণমূল। তারা স্থানীয় স্তরে প্রতিবাদ মিছিল করবে বলে জানিয়ে দিয়েছে। ধর্মঘট সফল করতে শহরে একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়েছে বামপন্থীরা।

সকাল থেকে শুরু বাম কর্মসূচি
এদিন সকালেই দমদমের কাছে কনিকা ঘোষের নেতৃত্বে জমায়েত করবে বামেরা। যাদবপুর ৮বি থেকে সকালে মিছিল করা হবে সুজন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে। ফরোয়ার্ড ব্লকের তরফে সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশনের সামনে জমায়েত করা হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে ধর্মঘটীরা মিছিল করবে এন্টালি মার্কেট থেকে। গোলপার্ক, গড়িয়াহাট, শ্যামবাজার, ধর্মতলা, হাজরাতেও মিছিল করবে বামেরা।

লালবাজারের বার্তা
তবে লালবাজারের তরফের সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ধর্মঘটের নামে কোনও রকম হিংসা বরদাস্ত করা হবে না। জোর করে ধর্মঘট করতে গেলে নেওয়া হবে আইনি পদক্ষেপ। শহরের সবকটি মেট্রো স্টেশনে থাকছে পুলিশ পিকেটিং। শহরের প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় থাকবে অতিরিক্ত পুলিশি নজরদারি। সক্রিয় থাকবে কুইক রেসপন্স টিম। কেউ কোন সমস্যায় পড়লে ১০০ ডায়ালে ফোন করা যাবে।

খোলা সরকারি অফিস
এদিকে ট্রেড ইউনিয়নগুলোর ডাকা ধর্মঘটের মাঝেই এদিন রাজ্যের সমস্ত সরকারি অফিস খোলা থাকবে। কর্মচারীদের অফিসে আসার নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য সরকার। নির্দেশিকা স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বৃহস্পতিবার অফিসে না এলে কাটা যাবে বেতন। এমনকী ছুটিও কাটা যাবে।

ধর্মঘটে সবকিছু সচল রাখতে একাধিক পদক্ষেপ
অন্যদিকে, ধর্মঘটে সবকিছু সচল রাখতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। রাজ্য পরিবহণ দফতরের উদ্যোগে আগামীকাল পথে থাকবে অতিরিক্ত মাত্রায় সরকারি বাস। অন্যান্য দিনের মতো বেসরকারি বাস ও অটো রাস্তায় নামানোর জন্য নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। সে কারণে বাস ও অটোরিকশার জন্য বিমার আশ্বাস দিয়েছে রাজ্য সরকার।
বাংলার আগেই 'অনুপ্রবেশকারী' ইস্যুতে শান বিজেপির! একুশের অনুশীলনে গেরুয়া শিবির