৮৬-এর বিশ্বকাপে ওয়ান ম্যান শো, কাপ হাতে আর্জেন্টিনার দিয়েগো
সেই বিশ্বকাপ ভুলবে না বিশ্ব। সেই আবেগ, ভালোবাসা, লড়াই, রক্ত, ঘাম, চোখের জল ও ভগবানের হাত ধরে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছিলেন ফুটবলের রাজপুত্র। ১৯৮৬-এর সেই পুন্যলগ্নে বিশ্বকাপ জিতেছিল আর্জেন্টিনা। গর্বের হাসি হেসেছিলেন দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা। পৃথিবী প্রত্যক্ষ করেছিল এক ওয়ান ম্যান শো এবং শতাব্দী সেরা গোল।

১৯৮২-এর ব্যর্থতা
১৯৮২-এর বিশ্বকাপে বিস্ময় বালক হিসেবে আর্জেন্টিনা দলে জায়গা পেয়েছিলেন ২২ বছরের দিয়েগো মারাদোনা। সাড়া জাগিয়েও সেবার কার্যত ব্যর্থই হয়েছিলেন ফুটবলের রাজপুত্র। মারিও কেম্পেস, ওসভালদো আরডিলেস, রামোন দিয়াজ, ড্যানিয়েল বেরটোনিদের ভিড়ে কার্যত হারিয়েই গিয়েছিলেন অনভিজ্ঞ আরমান্দো। ওই বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে ছিটকেও গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। হয়তো সেই রাতে ঘুমোতে পারেননি ঈশ্বর। হয়তো ইতিহাস রচনার শুরুটা হয়েছিল সেই ব্যর্থতা থেকেই।

ফকল্যান্ডসের যুদ্ধ
আটলান্টিক মহাসাগরের ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের ক্ষমতা দখল নিয়ে আর্জেন্টিনা এবং ইংল্যান্ডের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিল ১৯৮২ সালেই। দোসরা এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত চলছিল ওই রক্তক্ষয়ী লড়াই। শেষমেশ পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছিল মারাদোনার দেশ। ফকল্যান্ড দ্বীপের দখল নিজেদের হাতে রেখেছিল ইংল্যান্ড। এই পরাজয়ের বদলা নেওয়ার সুযোগ খুঁজতে শুরু করেছিলেন আর্জেন্টিনিয়রা। যুদ্ধক্ষেত্রে না হলেও খেলার মাঠে ব্রিটিশদের সঙ্গে বোঝাপড়ার জন্য মুখিয়ে ছিলেন ফুটবল রাজপুত্রের দেশ।

প্রেক্ষাপট ১৯৮৬
চার বছরে বিশ্বে ঘটে যায় অনেকগুলি পরিবর্তন। তার মধ্যে অন্যতম দিয়েগো মরাদোনার কাঁধে আর্জেন্টিনা দলের নেতৃত্ব। দায়িত্ব যে যোগ্য হাতে অর্পণ করা হয়েছে, তা সেবার প্রমাণ করেছিলেন দিয়েগো। পাঁচটি গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের পাঁচ বার গোল দিতে সাহায্য করেছিলেন কিংবদন্তি। কার্যত একক ক্যারিশমায় দেশকে দ্বিতীয় বারের জন্য বিশ্বকাপ জিতিয়ে ইতিহাস রচনা করেছিলেন মারাদোনা। ফাইনালে পশ্চিম জার্মানিকে ৩-২ গোলে হারিয়েছিল নীল-সাদা দল।

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মধুর বদলা
মেক্সিকোয় হওয়া ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে চিরশত্রু ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টিনার। বদলার প্রেক্ষাপট যেন হাতের মুঠোয় পেয়ে গিয়েছিলেন মারাদোনা। তাই ভগবানের হাতও আশীর্বাদ হয়ে রাজপুত্রের কপালে পরিয়েছিল জয়-টিকা। ওই ম্যাচেই ইংল্যান্ডের আট জন ফুটবলারকে কাটিয়ে গোল দিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়েছিলেন কিংবদন্তি।