কৃষি বিল নিয়ে উত্তাল কৃষকদের দিল্লি অভিযান, রণক্ষেত্র পাঞ্জাব–হরিয়ানা সীমান্ত
কৃষকদের দিল্লি অভিযানকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল পাঞ্জাব–হরিয়ানা সীমান্ত। কেন্দ্রের তিনটি কৃষক বিল ও নতুন শ্রমিক কোড নিয়ে দেশের হাজার হাজার কৃষক এই প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন। কৃষক নেতা ও ট্রেড ইউনিয়ন নেতারা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন যে এই বিক্ষোভ এখানেই শেষ হবে না।

জল কামান ও কাঁদানে গ্যাসের প্রয়োগ পুলিশের
বৃহস্পতিবার সারাদিন বিক্ষোভরত কৃষকদের সঙ্গে পুলিশদের সংঘর্ষের সাক্ষী থেকেছে গোটা দেশ। কৃষকদের থামাতে পুলিশরা জল কামান ও কাঁদানে গ্যাসের প্রয়োগ করেন। কৃষক ও প্রশাসকের মধ্যে অধিকাংশ সংঘর্ষ দেখা গিয়েছে হরিয়ানা ও পাঞ্জাব এলাকায়। প্রসঙ্গত, নতুন তিনটি কৃষি আইনের প্রতিবাদে গত প্রায় দু'মাস ধরে দিল্লি অভিযানের পরিকল্পনা করছিল দেশের বিভিন্ন কৃষক সংগঠন ৷ উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, রাজস্থান, উত্তরাখণ্ড, কেরল এবং পাঞ্জাব, এই ছয় রাজ্য থেকে কৃষকরা দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সারা ভারত কিষাণ সংঘর্ষ সমন্বয় কমিটির জাতীয় আহ্বায়ক ভিএম সিং বলেন, ‘এর মাধ্যমে শুরু করে এটা বলতে চাই যে এটা শুধুমাত্র পাঞ্জাব ও হরিয়ানার সমস্যা নয়।' দেশের প্রায় ২৫০টি কৃষক সংগঠন এই সমিতির অন্তর্গত রয়েছে। ভিএম সিং বলেন, ‘এটা এমনই একটি সমস্যা যা গোটা দেশের কৃষকদের প্রভাবিত করে। এমএসপি শুধুমাত্র দুই রাজ্যের কৃষকদের সমস্যা নয়। এটি দেশের ১৪ কোটি ক্ষমতাশীল কৃষক সম্প্রদায়ের প্রশ্ন, দেশের যে সমস্ত শীর্ষ নেতৃত্বর রয়েছেন যাঁরা এর বিরুদ্ধে তাঁরা শুধু একমুঠো সমর্থন আমাদের দিন।'

সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ
সিং জানিয়েছেন যে, দিল্লিতে কোভিড-১৯-এর তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার কারণে তিনি নিজে ব্যক্তিগতভাবে বহু বিক্ষোভরত কৃষকদের সেখানে যেতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের উদ্বেগের কারণ বুঝতে পারছি। কিন্তু কেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কৃষকদের কথা শুনতে রাজি নন। আমাদের টেবিলে বসে এবং একে অপরের উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করার মতো পরিস্থিতি পর্যাপ্ত অনুকূল হওয়ার আগে পর্যন্ত এই কৃষি বিলগুলি স্থগিত রাখা যেতে পারে। সরকার এত অনড় কেন?' প্রসঙ্গত, বুধবার রাতে প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যেও দু' বার জল কামানের ব্যবহার করা হয় বিক্ষোভকারীদের হঠিয়ে দেওয়ার জন্য ৷ কিন্তু তার পরেও রণে ভঙ্গ দেননি কৃষকরা ৷ এ দিন সকালে ফের দিল্লির দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা ৷

দেশজুড়ে বিক্ষোভ
১০টি ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা কৃষকদের ‘দিল্লি চলো' মার্চকে সমর্থন করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন যে এই বিক্ষোভ কেবল উত্তর ভারতেই দেখা দেয়নি, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানেও একই ধরনের বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন কৃষকরা। এমনকী কেরল, পুদুচেরি, ওড়িশা ও তেলঙ্গানা ও তামিলনাড়ুর মতো দক্ষিণের রাজ্যেও এই প্রতিবাদ দেখা গিয়েছে।
কৃষকদের এই প্রতিবাদ মিছিল রুখতে আগেভাগেই সতর্ক ছিল হরিয়ানা সরকার

সিল করে দেওয়া হয় দিল্লি–হরিয়ানা সীমান্ত
পাঞ্জাব-হরিয়ানা সরকার দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্ত সিল করে দেয়, যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷ তৈরি করা হয় ব্যারিকেড ৷ কৃষকরা দিল্লির দিকে এগোতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কিছু পোস্টের মাধ্যমে কৃষকদের এ প্রতিবাদকে সমর্থন করেন বহু রাজনৈতিক দলের নেতারাও।
দলে জায়গা নেই, তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাই, ফেসবুক পোস্টে জল্পনা বাড়ালেন তৃণমূল বিধায়ক