লখনউ : আদালতের রায় একদিকে রেখে, লাভ জিহাদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা উত্তরপ্রদেশ সরকারের। মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশ সরকারের ক্যাবিনেট লাভ জিহাদের বিরুদ্ধে কড়া বিল পাশ করল। রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্ধার্থ নাথ সিং জানান জোর করে ধর্মান্তকরণ ও বিয়ে করার মত ঘটনা ঘটলে, বা বিয়ের জন্য ধর্মান্তকরণের ঘটনা ঘটলে কড়া ব্যবস্থা নেবে উত্তরপ্রদেশ সরকার।
রাজ্য সরকার জানিয়েছে এই ধরণের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তির অপরাধ প্রমাণিত হলে ৫ বছরের কারাদন্ড ও মোটা অঙ্কের জরিমানা ধার্য করা হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তির এক থেকে পাঁচ বছরের জেল ও ১৫ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে বলে বিলে জানানো হয়েছে।
নাবালিকা ও তফশিলি উপজাতি ভুক্তদের ক্ষেত্রে জোর করে ধর্মান্তকরণ হলে তিন থেকে ১০ বছরের জেল ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করা হবে বলে জানানো হয়েছে। লাভ জিহাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে উত্তরপ্রদেশ সরকার, এমন ইঙ্গিত মিলেছিল। রাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এই অর্ডিন্যান্স নিয়ে আসার আগে প্রায় ১০০টি কেস খতিয়ে দেখে বিচার করা হয়েছে। তারপরেই চূডা়ন্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য।
গোটা বিষয়কে দুর্ভাগ্যজনক বলে ব্যাখ্যা করেছে কংগ্রেস। তাঁদের দাবি লাভ জিহাদ শব্দটি বিজেপির তৈরি করা। ব্যক্তি স্বাধীনতার ওপর রাজনীতিকরণ করে স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবের প্রকাশ এই অর্ডিন্যান্স। তবে বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় জানান, লাভ জিহাদের সংজ্ঞা বুঝতে হবে। তারপরে বিরোধীদের কথা বিচার করতে হবে। বিয়ের নামে ধর্মান্তকরণ মেনে নেওয়া যায় না। এটা ঠেকাতেই কড়া বিল এনেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।
এদিকে, এলাহাবাদ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে পছন্দমত জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার সব প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের রয়েছে। এজন্য ধর্ম কোনও ফ্যাক্টর বা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।
ব্যক্তিগত অধিকারের আওতায় এই রায় দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। হাইকোর্ট এর আগে জানিয়েছিল শুধুমাত্র বিবাহ সম্পন্ন করার জন্য ধর্ম পরিবর্তন করা কাম্য নয়। এই ধরণের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। বিচারপতি পঙ্কজ নকভি ও বিবেক আগরওয়ালের ডিভিশন বেঞ্চ এদিন জানিয়েছে, বিবাহের ক্ষেত্রে বা জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে কখনই ধর্ম বাধা হবে না, তেমনই ধর্ম পরিবর্তন করে বিয়ে করাটাও আইনসঙ্গত নয়।
এদিন ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, যেখানে আইন দুই সমলিঙ্গের মানুষকে একসাথে থাকার, জীবন কাটানোর অনুমতি দিচ্ছে, সেই দেশে শুধুমাত্র ধর্মের বিভেদের জন্য বিয়ে আটকে দেওয়া হবে, তা মেনে নেওয়া যায় না। কোনও যৌক্তিকতা নেই এই ধরণের আচরণের।