স্টাফ রিপোর্টার, কলকাতা: সোমবার টানা দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষেও শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা কাটল না। ওই বৈঠক নিয়ে মুখ খোলেনি দু-পক্ষই। তবে আজ মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকে এ বিষয়ে মুখ খুলতে পারেন সৌগত রায়। এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
সোমবার রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রীর সঙ্গে আরও একদফা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন সাংসদ সাংসদ সৌগত রায়। তৃণমূল সূত্রের খবর, এই হাইভোল্টেজ বৈঠকে কোনও জট কাটেনি। আগে যেমন তিনি একাধিক জেলায় তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ছিলেন, সেই পদ চেয়েছেন শুভেন্দু।
তাঁকে জানানো হয়েছে এখন তৃণমূলে সেরকম কোনও পদ নেই। ফলে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। এছাড়াও এদিন ফের নিজের অবস্থানে অনড় থেকে দলের পরিচালনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শুভেন্দু। সাংগঠনিক রদবদলেরও দাবি জানিয়েছেন। এর আগে ভাইফোঁটার দিন সৌগত রায়ের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর বৈঠক হয়েছিল, তখনও তিনি এই একই দাবি জানিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
এদিন দুপুরে প্রথমে পিকে-সহ তৃণমূলের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে একদফা বৈঠক সারেন সৌগতবাবু। বৈঠকে হাজির ছিলেন সুব্রত বক্সী, পূর্ণেন্দু বসু এবং দোলা সেন। সেখানে সৌগতবাবু শুভেন্দুর দাবিদাওয়ার জানান বলে খবর। তাঁদের সঙ্গে বৈঠক শেষে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনি।
তবে সেখানে কী কথা হল তা নিয়ে গোপন রাখা হয়েছে। বৈঠক শেষে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় জানান, “একটা আলোচনা চললে তা সম্পর্কে প্রকাশ্যে সব বলা যায় না। মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে সব জানাব।” ফলে এদিন সাংবাদিক বৈঠকের দিকে তাকিয়ে বাংলার রাজনৈতিক মহল।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই শুভেন্দুর সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব বেড়েছে। অরাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে ইঙ্গিতবাহী মন্তব্য করেছেন শুভেন্দু। কিন্ত ভবিষ্যতে কোন পথে হাঁটবেন, তা নিয়ে খোলসা করে কিছু জানাননি।
কয়েকদিন আগে পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরের একটি সভায় শুভেন্দু ধোঁয়াশা রেখেই মন্তব্য করেন, ‘আমি এখনও দলের প্রাথমিক সদস্য। রাজ্য মন্ত্রিসভারও সদস্য। দলের নিয়ন্ত্রকরা আমাকে তাড়াননি। আমিও দল ছাড়িনি। মুখ্যমন্ত্রী আমায় মন্ত্রিসভা থেকে তাড়ািয়ে দেননি। আমিও ছাড়িনি। যে ক’টি পদে আছি, সবকটিতেই আমি নির্বাচিত। মন্ত্রিসভায় থেকে দলের বিরুদ্ধে আমি কথা বলব না।’’
শুভেন্দু আরও বলেছিলেন, ‘দল করতে বিভিন্ন কারণে গেলে বিভেদ আসে। বিভেদ থেকে বিচ্ছেদও আসে। কিন্তু যতক্ষণ মন্ত্রিসভায় আছি বা দলে আছি, ততক্ষণ কোনও রাজনৈতিক কথা বলা যায় না। আমি সেটা বলতে পারি না।’
তৃণমূলের তরফেও ধোঁয়াশা বজায় রাখা হয়েছে। দ্বিমুখী নীতি নিয়ে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দুকে আক্রমণ শানাতে থাকেন। অন্যদিকে নরম বার্তা দিতে থাকেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুখেন্দুশেখর রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদাররা। সেই পরিস্থিতির মধ্যে সোমবার সন্ধ্যায় উত্তর কলকাতার কাছে একটি জায়গায় বৈঠকে বসেন সৌগত রায় এবং শুভেন্দু।