ম্যানগ্রোভ অরণ্যে পরিযায়ী পাখির ঝাঁক, হেনরি আইল্যান্ডে হারাতে চায় মন
শহুরে যান্ত্রিকতায় হাঁপিয়ে ওঠা মানব-মন যখন চোখের আরাম ও হৃদয়ের আনন্দ খুঁজে বেড়ান, বেশি দূরে নয়, বাড়ির কাছ থেকেই ঘুরে আসা যায় নিরিবিলি হেনরি আইল্যান্ড। সুন্দরবন জাতীয় উদ্যানের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত এই দ্বীপে পাবেন আদিগন্ত সমুদ্র, মৎস্য প্রকল্পের কানঘেঁষা ম্যানগ্রোভ অরণ্য অপার নীরবতা। শীতকালে পরিযায়ী পাখির ঝাঁক দেখতে হেনরি আইল্যান্ডে ভিড় জমান বহু পর্যটক।

অবস্থিতি
সুন্দরবনের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত হেনরি আইল্যান্ড দক্ষিণ ২৪ পরগনার আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। দ্বীপটি জমজমাট বকখালি থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরের উপকূলের শোভা বর্ধনকারী স্থান বলা চলে। বকখালির মতো জনবহুল না হওয়ায় নিরিবিলিতে দুই দিন কাটিয়ে দেওয়া যায় অনায়াসে।

কীভাবে যাবেন
কলকাতা থেকে প্রায় ১৪০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত হেনরি আইল্যান্ড। ধর্মতলা থেকে বাসে কিংবা প্রাইভেট গাড়িতে ডায়মন্ডহারবার রোড ধরে এগিয়ে বাঁ-দিকে ঘুরে জেলিঘাট স্টপে পৌঁছে গেলেই কেল্লাফতে। সেখান থেকে ইঁটের রাস্তা কিছুটা এগিয়ে যেখানে গিয়ে নজর থামে, সেটাই হেনরি আইল্যান্ড। পথিমধ্যে হাতানিয়া-দোহানিয়া নদী পেরোনোর অভিজ্ঞতাও অসাধারণ।

কী কী দেখবেন
১) বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী হেনরি আইল্যান্ডে নিরিবিলি, শান্ত এবং একাকী সমুদ্র সৈকত পর্যটকদের টানে। ভোরে সেখান থেকে সূর্যোদয় দেখার অভিজ্ঞতাও মনোরম। সঙ্গী হয় লাল কাঁকড়ার পাল, শামুক, ঝিনুক।
২) ম্যানগ্রোভ অরণ্য : ইঁটের রাস্তা কিছুটা এগিয়ে একটি অস্থায়ী, ভঙ্গুর বাঁশের সেতুতে গিয়ে মেশে। ঠিক সেখান থেকেই শুরু হয় ম্যানগ্রোভের বন। কাদায় মাখামাখি শ্বাসমূল, সুন্দরী, গেঁও, গরানের গন্ধ ও শীতল হাওয়ায় রোমাঞ্চিত হয় মন।
৩) মৎস্য প্রকল্প : ম্যানগ্রোভের বন ছাড়াও হেনরি আইল্যান্ড জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মাছ চাষের ভেড়ি স্বতন্ত্র শোভা বর্ধন করে।
৪) হেনরি আইল্যান্ডের ম্যানগ্রোভ বনে শীতকালে পরিযায়ী পাখিরা গিয়ে ভিড় করে। তাদের কলরবে মুখরিত হয় আশপাশ। ওয়াচ টাওয়ার থেকে নানা রঙের পাখি এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখার মজা অন্যরকম।

কোথায় থাকবেন
রাজ্য প্রশাসনের উদ্যোগে হেনরি আইল্যান্ডে বেশ কয়েকটি সুন্দর রিসর্ট তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। দ্বীপে রয়েছে বেশ কয়েকটি হোটেলও। অনেকে আবার বকখালিতে নোঙর বেঁধে একদিনের জন্য ঘুরে আসেন হেনরি দ্বীপ।
ছবি সৌ:ইউটিউব
মুকুট-সদৃশ লোলেগাঁও-তে বিরাজমান জঙ্গল, পাহাড়, বন্যপ্রাণ ও নীরবতা