শুভেন্দু-সৌগতদের হাইভোল্টেজ বৈঠকের আগে মেগা শো কী প্রভাব ফেলল! অধিকারী ইস্যুতে বড় বার্তা সৌগতর
দল ড্যামেজ কন্ট্রোলের জন্য তাঁর ওপর ভরসা রেখেছিল। আর সেই পরীক্ষায় কার্যত উত্তীর্ণ তৃণমূলের সাংসদ অধ্যাপক সৌগত রায়। তাঁর ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রুদ্ধশ্বাস শেষ মুহূর্তের বৈঠকে যে নন্দীগ্রামের দাপুটে নেতা শুভেন্দুর মান, কিছুটা হলেও ভঞ্জন হয়েছে, তা ইতিউতি রাজনৈতিক মহলে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে। আর তার প্রকাশও রামনগরের সভা মঞ্চে দাঁড়িয়ে শুভেন্দুই করেছেন। স্লগ ওভারে ম্যাচ গড়াতেই কার্যত শুভেন্দু বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জানান দিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও তাঁর নেত্রী! এই প্রসঙ্গে এবার মুখ খুলেছেন সৌগত।

'মমতাকেই নেত্রী হিসাবে মানেন শুভেন্দু'!
রামনগরের সভায় শুভেন্দুর বক্তব্যের পর খানিকটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে তৃণমূল। রামনগরের এই ১৯ এর মেগা শোয়ের আগে সৌগত ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় রুদ্ধশ্বাস একান্ত বৈঠকে শুভেন্দুর সঙ্গে একাধিক বিষয়ে আলোচনা করেন। এরপরই রামনগরের সভায় শুভেন্দুর বার্তা 'মুখ্যমন্ত্রী আমায় তাড়াননি, আমিও কোথাও যাইনি'। শুভেন্দুর এই বক্তব্যের পর সৌগত রায় জানান, 'মমতাকেই নেত্রী হিসাবে মানেন শুভেন্দু, আর তা তিনি প্রকাশ্যে বলেছেন।'

শুভেন্দুর ক্ষোভ এবং মুখ্যমন্ত্রীর দূত হয়ে মানভঞ্জন
মূলত, ভাইফোঁটার দিন শুভেন্দু অধিকারীর কাছে 'দিদি' মমতার দবত হয়ে গিয়েছিলেন সৌগত রায়রা। সেদিন নিউটাউনের এক বিলাসবহুল হোটেলে দুই পক্ষের বৈঠক হয়। জানা যায়, শুভেন্দু অধিকারী নিজের বহু ক্ষোভের কথাও জানিয়েছেন তাঁদের কাছে। আর তা পার্টি সুপ্রিমোর কাছে পৌঁছে দিয়েছেন সৌগতবাবুরা।

উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় ও শেষে মীমাংসার রাস্তা!
সূত্রের খবর, ভাইফোঁটার দিনের বৈঠকে সুদীপ, সৌগতদের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীরর উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হয়েছে। তবে শেষে মীমাংসার রাস্তা দেখেছে দুই শিবির। সেই বৈঠকে শুভেন্দুকে রামনগরের সভায় মীমাংসার রাস্তা ধরেই বার্তা দেওয়ার অনুরোধ করা হয় বলে খবর। বাকি পরিস্থিতির জন্য দুই সাংসদ দায়িত্ব নেন বলে খবর।

বর্ষীয়ানের কথা রাখলেন 'দাদা'
'শুভেন্দু অধিকারীর বক্তৃতাকে স্বাগত জানাই। আমরা খুব খুশি। যে কথা শুভেন্দু গত সোমবার আমায় বলেছিল, সে কথা রেখেছেন। উনি দল ছাড়ার ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। ' রামনগরের সভায় শুভেন্দুর মেপে বলা দাপুটে বক্তব্যের পর এমনই মন্তব্য উঠে আসে দলের বর্ষীয়ান সাংসদের তরফে। কার্যত বর্ষীয়ানের কথা যে দলের তরু ণ তুর্কী রেখেছেন, তাতেই সন্তুষ্টি প্রকাশ পায় সৌগত রায়ের সুরে। সৌগত রায় এরপরপরই একসঙ্গে চলার বার্তা দিয়েছেন।

পিকে নয় মাত দিলেন প্রবীণ পোড় খাওয়া দুই রাজনীতিবিদ!
প্রসঙ্গত, শুভন্দুর মান ভঞ্জনে মেদিনীপুরের কাঁথিতে অধিকারী বাসভবন 'শান্তি কুঞ্জে' পৌঁছে যান খোদ মমতার ভোটকৌশলী প্রশান্ত কিশোর। শুভেন্দু না থাকায় সেই সময় শিশির-পিকে বৈঠক হয়। তবে সেই বৈঠকে যে মেদিনীপুরের দাপুটে নেতার ইস্যুতে তৃণমূল বরফ গলাতে পারেনি, তা স্পষ্ট হয় ভাইফোঁটায় দুই প্রবীণ সাংসদের সঙ্গে মেদিনীপুরের তরুণ সাংসদের বৈঠকের পর। রাজনৈতিক মহলের অনেকেরই দাবি, যে বরফ পিকে গলাতে পারেননি, সেই বরফ তৃণমূলের দুই প্রবীণ যোদ্ধা গলিয়ে দিয়েছেন। আর সেখানেই সাফল্য সুদীপ , সৌগতদের।

আসন্ন হাইভোল্টেজ বৈঠক ও রাগমনগর শো প্রভাব
রামনগর মেগা শোতে শুভেন্দু অধিকারী কার্যত দলের প্রবীণদের কথা রেখেছেন, এবার সম্ভবত শুভেন্দুর কথা প্রবীণরা কতটা রাখছেন, তা মেপে নেওয়ার পালা অধিকারী ক্যাম্পের! এমনই দাবি সূত্রের। এই প্রেক্ষাপট নিয়ে রামনগরের সভায় শুভেন্দুর ক্ষুরধার বক্তব্য আগামী সপ্তাহে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌগত রায়ের সঙ্গে শুভেন্দুর বৈঠকে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে সৌগত-শুভেন্দু মুখোমুখী বৈঠকও হতে পারে।