প্রত্যাশার পারদ চড়লেও ২০২১ সালের মধ্যে আদৌও কি পাওয়া যাবে করোনা টিকা? ধোঁয়াশা কাটাল হু
করোনা যুদ্ধে জয়লাভের একযোগে ঝাপিয়েছে বিশ্বের প্রায় সকল দেশই। বর্তমানে বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিন শেষ ট্রায়ালের দোরগোড়াতেো দাঁড়িয়ে। প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে তাদের সফলতার হারও বেশ ভালো। এ বছরের ডিসেম্বর বা আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে ভ্যাকসিন আবিষ্কারের সম্ভাবনা দেখা গেলেও বিশ্ববাসী কবে পাবে সেই প্রতিষেধক, তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। সম্প্রতি এই বিষয়ে খানিকটা জট কাটালেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক কর্মকর্তা।

২০২১-এর শেষের মধ্যেই মুশকিল আসান ?
সম্প্রতি হু-এর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালন অধিকর্তা ডঃ পুনম ক্ষেত্রপাল সিং জানিয়েছেন, "আগামী কয়েকমাসের মধ্যেই যদি আমরা ভ্যাকসিন পেয়ে যাই, তাহলে ২০২১-এর মধ্যেই বিশ্বের সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে প্রতিষেধক সরবরাহ সম্ভব হবে।" তাঁর মতে, ভ্যাকসিন আবিষ্কারের পাশাপাশি প্রতিষেধকের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল, পরীক্ষানিরীক্ষা, সরকারি ছাড়পত্র এবং পরিকাঠামো খতিয়ে দেখার জন্যেও বেশ কয়েকমাস সময় দরকার।

আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া দেশগুলির জন্য কোভ্যাক্স ফেসিলিটি
এদিকে বিশ্বে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলিকে করোনা মোকাবিলায় সাহায্য করার উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছে 'কোভ্যাক্স ফেসিলিটি'। এমনটাই জানিয়েছে হু। কিন্তু সেই কর্মযজ্ঞের জন্য এ বছরের মধ্যেই দরকার প্রায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার, আগামী বছরে দরকার হতে পারে আরও ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার। পুনম জানিয়েছেন, "গাভি সংস্থার সাহায্য নিয়ে আমরা কোভ্যাক্স-এর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলিতে প্রাথমিক পর্যায়ে ৩% মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষ্যে এগোচ্ছি। প্রায় ১৮৭ টি দেশ কোভ্যাক্স-এর আবেদন করলেও এখনও পর্যন্ত নির্বাচিত হয়েছে ৯২টি দেশ।"

করোনা ভ্যাকসিন প্ৰস্তুতিতে অগ্রণী ভূমিকায় ভারত
প্রতিষেধকের বিষয়ে বলতে গিয়ে ক্ষেত্রপাল এও জানিয়েছেন, করোনা ভ্যাকসিন তৈরি হলে ভারত উৎপাদন প্রক্রিয়ায় অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করবে। উন্নত দেশগুলি যেভাবে ভ্যাকসিনের কোটি কোটি অর্ডার আগে থেকেই দিয়ে রাখছে, তাতে শঙ্কিত প্রত্যেকেই। হু জানিয়েছে, ভ্যাকসিন মানবজাতির স্বার্থে তৈরি হবে আর সরবরাহের ক্ষেত্রেও সমানাধিকার বজায় থাকবে। ক্ষেত্রপাল জানিয়েছেন, বিশ্বের প্রায় ২০০টি উন্নতমানের ভ্যাকসিনের মধ্যে প্রায় ১০টি তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে পৌঁছেছে, ফলে কোন ভ্যাকসিনটি শেষপর্যন্ত সফল হবে তা বলা শক্ত!

ভ্যাকসিন নিয়ে রাজনীতি-ব্যবসাকে প্রশ্রয় নয়
ভ্যাকসিনের দৌড়ে বিশ্বে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে এগিয়ে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকা, সিনোভ্যাক, সিনোফার্ম, ভারত বায়োটেক, মোডার্না, বায়োএনটেক-ফাইজার-এর মত প্রস্তুতকারকরা। ভালো স্থানে রয়েছে রাশিয়ার স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন। ক্ষেত্রপাল জানাচ্ছেন, গাভির মত প্রথমসারির সংস্থাগুলির সাথে একযোগে হু মাঠে নেমেছে যাতে বিশ্বজুড়ে প্রতিষেধক সমবন্টন ও উৎপাদন, মজুত ও সরবরাহেরপরিকাঠামোর উন্নয়ন সম্ভব হয়। ক্ষেত্রপালের মতে, "নিউ নরমালের যুগে সকল দেশ এবং সকল সংস্থাই ব্যবসাপ্রবণ হয়ে পড়ছে, কিন্তু মনে রাখতে হবে মানবসমাজকে বাঁচিয়ে রাখার অঙ্গ এই ভ্যাকসিন। এটা নিয়ে রাজনীতি বা ব্যবসা করা উচিত নয়।"
ভারতে ১২ শতাংশ শিশু ও কিশোর-কিশোরী করোনায় আক্রান্ত, রিপোর্ট ইউনিসেফের