বয়স্কদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সফল অক্সফোর্ডের করোনা ভ্যাকসিন
অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড–১৯ ভ্যাকসিন প্রার্থী দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালেই বয়স্কদের মধ্যে জোরদার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। জনসংখ্যার এমন একটি অংশকে সুরক্ষিত করার সম্ভাব্য কার্যকারিতা নির্দশন করেছে এই ভ্যাকসিন, যাদের মধ্যে করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে।

এই ভ্যাকসিন নিরাপদ
ল্যানসেট মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণার প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধানে দেখা গিয়েছে, সিএইচএডিওএক্স এনকোভ-২০১৯, ভ্যাকসিন প্রার্থীর প্রযুক্তিগত নাম, যা তৈরি করেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ও ব্রিটিশ-সুইডিশ ফার্মা জায়েন্ট অ্যাস্ট্রাজেনেকা, দেখা গিয়েছে যে এই ভ্যাকসিন নিরাপদ, সহনশীল এবং এই ভ্যাকসিন দেওয়ার পর সব বয়সের মধ্যেই একই ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠেছে।

বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সফল
অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রুপের গবেষক ডাঃ মাহেশি রামাস্বামী বলেন, ‘কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার গ্রুপ হল বয়স্করা, কারণ তাঁদের বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি থাকে, তবে আমরা জানি তাঁদের মধ্যে দুর্বল ভ্যাকসিনের প্রতিক্রিয়া থাকে।' তিনি এও বলেন, ‘আমরা এটা দেখে খুশি হযেছি যে আমাদের ভ্যাকসিন বয়স্কদের ওপর শুধু সহনশীল নয়, বরং তা একই ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলছে তাঁদের মধ্যে যেটি তরুণ স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে দেখা গিয়েছিল। এবার পরবর্তী পদক্ষেপে এটা দেখতে হবে যে এই ভ্যাকসিন মারণ ভাইরাস থেকে প্রতিরোধ করতে কতটা সফল হতে পারছে।'

ভারতে হবে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল
প্রাথমিক এই অনুসন্ধান ভারতের জন্য উল্লেখযোগ্য, এই ভ্যাকসিন প্রার্থীর তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল হবে ভারতে, যার উদ্যোগ নেবে পুনের ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সিরাম ইনস্টিটিউট ও আইসিএমআর। সিরাম ইতিমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ উৎপাদন হিসাবে ভ্যাকসিন প্রার্থীর ৪ কোটি ডোজ উৎপাদন করেছে এবং তা সংরক্ষণ করে রাখার জন্য দেশের ড্রাগ নিয়ামকের থেকে লাইসেন্স নিয়েছে। এই ডোজ ভারতের আভ্যন্তরীণে প্রয়োজন অনুযায়ী তা বড় অংশে সরবরাহ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের এই খোঁজ নতুন আশা দেখিয়েছে দেশের বয়স্ক জনসংখ্যার মধ্যে, যাঁদের করোনা ঝুঁকি রয়েছে।

শেষ পর্যায়ের ট্রায়ালের ফলের অপেক্ষায় গবেষকরা
তবে পাকাপাকি সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগে আগামী কয়েক সপ্তাহে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অন্তিম পর্যায়ের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছেন গবেষকরা। ওই ফলের উপরেই নির্ভর করবে, ফাইজার ইনকর্পোরেটিভ ও মডার্না ইনকর্পোরেটিভ-এর তৈরি ভ্যাকসিনের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় কতটা এগিয়ে যেতে পারে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি প্রতিষেধক।
গোটা বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আদতে প্রায় ৬ গুণ বেশি, চাঞ্চল্যকর দাবি নয়া গবেষণায়