দিদির নাকি দাদার সৈনিক! তৃণমূল নেতাকর্মীরা প্রশ্নের মুখে পড়ে নিজেরাই সন্দিহান
বিজেপি রাজ্যে তাদের ভোটমুখী কর্মকাণ্ড শুরু করে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়িত্ব নিয়ে তাঁদের কাজ শুরু করে দিয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের সামনে যেন শুভেন্দু অধিকারী (subhendu adhikari) কাঁটা। যে দলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই (mamata banerjee) এতদিন সব ছিলেন, সেখানে তৃণমূলের নেতা থেকে কর্মী সবাইকে শুনতে হচ্ছে তাঁরা কি দিদির দলে, নাকি দাদার দলে।

দ্বিধাবিভক্ত তৃণমূল কর্মীরা
পূর্ব মেদিনীপুরে দ্বিধাবিভক্ত তৃণমূল কর্মীরা। তাঁরা কোন দিকে যাবেন, সেব্যাপার কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলের পতাকা নাকি সবসময় হাতের কাছে পাওয়া শুভেন্দু অধিকারী, ধন্দে পড়ে গিয়েছেন তাঁরা। দীর্ঘদিন জোড়া ফুলের সঙ্গে রয়েছেন যাঁরা, তাঁরা বর্তমান পরিস্থিতিতে পড়েছেন অস্বস্তিতে।

দিদির না দাদার, উঠছে প্রশ্ন
শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রিসভার বৈঠকে যোগ না দেওয়া এবং অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে নিজের বক্তব্য জানানো শুরু করায় প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে তৃণমূল কর্মীদের। রাস্তাঘাটে তাঁদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে, তাঁরা দিদির না দাদার। এছাড়াও উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ প্রতিদিনই জায়গায় জায়গায় শুভেন্দু অধিকারীর নামে পোস্টার পড়ছে। তাতেও একই ধরনের প্রশ্নের মুখে পড়ছেন তৃণমূল কর্মীরা।

প্রশ্ন উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গ সর্বত্র
তবে শুধু প্রশ্নটা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরেই শুধু নয়, এই প্রশ্নটা উঠতে শুরু করেছে কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ সর্বত্র। কেননা কোচবিহার দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী পিকের বিরোধিতায় সরব হয়েছে। অন্যদিকে পিকের বিরোধিতায় সরব হয়েছেন ব্যারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত। দিনের পর দিন সেই সংখ্যাটা বাড়ছে। পিকের দল যেভাবে কাজ চালাচ্ছে, তাতে তৃণমূলের একটা বড় অংশ অসন্তুষ্ট বলেই সূত্রের খবর।

শুভেন্দু বাড়তে দিয়েছে তৃণমূলই
সূত্রের আরও খবর, তৃণমূল নেতৃত্ব স্বীকার করে নিয়েছে দলই শুভেন্দু অধিকারী এবং পরিবারের জন্য একের পর এক সুযোগ করে দিয়েছে। তাঁকে বাড়তে দিয়েছে। মাথায় দিদির আশীর্বাদ ছিল বলেই তা সম্ভব হয়েছে বলেও দলের একাংশ মনে করেন।

একপেশে শুভেন্দুর উন্নয়ন
যেভাবে হলদিয়া কিংবা নন্দীগ্রামের উন্নয়ন হয়েছে, সেভাবে তমলুক কিংবা অন্য কোথাও হয়নি। যা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে। সূত্রের খবর অনুযায়ী সেকথাও তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা তুলে ধরেছেন সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সামনে।

আপাতত চুপ থাকার পরামর্শ
তবে সূত্রের খবর অনুযায়ী, তৃণমূলের শীর্ষনেতৃত্বের তরফে বলা হয়েছে, আপাতত চুপচাপ থাকতে হবে কিছুদিন। লাভ লোকসানের প্রতি নজর দিলেও, সর্বোচ্চ নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে। দল বেধে ধৈর্য ধরে থাকতে হবে। তবে সর্বশেষ সিদ্ধান্ত নিতে হবে তৃণমূল কর্মীদেরকেই, তাঁরা কোন দিকে থাকতে চান।

যেখানে প্রতীক সেখানেই সবাই
ঘাসফুল প্রতীকে তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় ১০ বছর প্রায়। আর প্রতীকের সঙ্গে তাঁদের পরিচিতি প্রায় ২২ বছরের। সেই কথাই কর্মীদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব। এই কথাই সবদিকে প্রচার করতে হবে বলেও দলের ঘনিষ্ঠকর্মীদেরকে বলা হয়েছে।

মমতা মিটিং করলে সবাই হাজির
সূত্রের খবর অনুযায়ী, ৪ ঘন্টার নোটিশে নন্দীগ্রামে মিটিং করে সাফল্য পেয়েছে তারা, এটাই মনে করে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব। প্রসঙ্গত নন্দীগ্রাম দিবসে ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বে নন্দীগ্রামে সভা করেছিল তৃণমূল। সেখানে হাজির ছিলেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন। তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করছে, এরপর যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে সভা করেন, তাহলে জেলার পুরো তৃণমূল শিবির সেই সভায় হাজির হবেন বলেই এখনও বিশ্বাস করছে তৃণমূল।