মার্কিন গণতন্ত্রের উপর বিশাল প্রশ্নচিহ্ন, একনায়কতন্ত্রের পথে হাঁটা লাগিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প?
ভোটে হারার পর থেকেই মার্কিন নির্বাচনে জালিয়াতির তত্ত্ব খাড়া করে এসেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে সেই দাবি মানেনি সিংহভাগ মানুষ। শুধু মাত্র ট্রাম্পের অন্ধ ভক্ত হিসাবে পরিচিত কয়েকজন এই তত্ত্ব নিয়ে গলা ফাটাচ্ছেন। এছাড়া ট্রাম্পের সমর্থকদের কয়েকজন রাস্তায় নেমেছেন। যদিও শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন কোনও ব্যক্তি ট্রাম্পের এই ষড়যন্ত্রের দাবি মেনে নেননি। আর যা পরিস্থিতি, তাতে ষড়যন্ত্রের দাবি না মানলেই বিপত্তি মার্কিন মুলুকে।

ক্রিস ক্রেবসকে বরখাস্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট
এহেন পরিস্থিতিতে জানা গিয়েছে যে মার্কিন নির্বাচন সুরক্ষা সংক্রান্ত কর্মকর্তা ক্রিস ক্রেবসকে বরখাস্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই খবর ট্রাম্প নিজেই টুইট করে জানান। তিনি লেখেন, 'সাইবার সিকিওরিটি এবং সিকিওরিটি এজেন্সির কর্মকর্তার পদ থেকে ক্রিস ক্রেবসকে এই মুহূর্তেই সরানো হল।'

ট্রাম্পের আনা জালিয়াতির দাবি বাতিল করেছিলেন ক্রেবস
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের আনা জালিয়াতির তত্ত্ব এর আগে বাতিল করে দিয়েছিলেন ক্রিস ক্রেবস। তারপরেই ক্রেবসকে কার্যকর, সাইবার সিকিওরিটি এবং সিকিওরিটি এজেন্সির কর্মকর্তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প। ট্রাম্প বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে অত্যন্ত ভুল বিবৃতি দিয়েছেন ক্রিস ক্রেবস।

ট্রাম্পের দাবি, ভোট গণনায় প্রচুর ত্রুটি রয়েছে
ট্রাম্পের দাবি, 'ভোট গণনায় প্রচুর ত্রুটি রয়েছে। জালিয়াতি হয়েছে। মৃত মানুষের ভোটও পড়েছে। ভোট পর্যবেক্ষকদের গণনাকেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এমনকী ট্রাম্পের পক্ষে পড় ভোট গিয়েছে বাইডেনের খাতায়। ভোটগ্রহণে বিলম্ব হয়েছে।' তবে ট্রাম্পের এহেন অবান্তর দাবি মানছেন না তাঁর দল এবং প্রশাসনেরই একাংশ। কয়েকদিন আগেই মতবিরোধ হওয়ার জন্যে প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এসপারকেও এভাবে হঠাৎ করে সরিয়ে দিয়েছিলেন ট্রাম্প।

ইতিহাসের 'সবচেয়ে সুরক্ষিত' নির্বাচন
এদিকে এর আগে মার্কিন নির্বাচনী কর্মকর্তারা দাবি করেছিলেন, এই নির্বাচন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে 'সবচেয়ে সুরক্ষিত' নির্বাচন। এদিকে সাইবার সিকিওরিটি এবং সিকিওরিটি এজেন্সি থেকে এর আগের সপ্তাহেই পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল সহকারী পরিচালক ব্রায়ান ওয়ারকে। এবং সেই ঘটনার কয়েকদিনের মাথায় সরানো হল ক্রিস ক্রেবসকে।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন ক্রেবস
আসলে ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে থাকা সাইবার সিকিওরিটি এবং সিকিওরিটি এজেন্সি ট্রাম্পের জালিয়াতি নিয়ে তত্ত্ব খণ্ডন করে চলছিল বিগত কয়েক দিন ধরে। নির্বাচন নিয়ে গুজব নিয়ন্ত্রণ করতে নেমেই প্রেসিডেন্টের রোষের কোপে পড়েন ক্রেবস। এদিকে নিজের পদ থেকে অপসারিত হয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন ক্রেবস।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কী বলেন ক্রেবস
ক্রেবস এক টুইটে লেখেন, 'ট্রাম্প দাবি করেছিলেন যে, অনেকগুলো রাজ্যে তার ভোট জো বাইডেনের নামে পাল্টে দিয়েছে। তা পুরোপুরি মিথ্য। নির্বাচনী পদ্ধতি জালিয়াতির যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা ভুয়ো। নির্বাচনী নিরাপত্তা কর্মকর্তা একমত হয়েছেন যে, আমাদের জানা মতে কোন ঘটনাতেই এরকম অভিযোগের ভিত্তি নেই এবং প্রযুক্তিগতভাবেও সেটা সম্ভব নয়।'

ট্রাম্পকে নিয়ে চিন্তিত বহু বিশেষজ্ঞ
তবে নাছোড়বান্দা ট্রাম্প এখনও হার স্বীকার তো দূরের কথা, ক্ষমতা হস্তান্তরেরও কোনও ইঙ্গিত দিচ্ছেন না। কেয়কদিন আগেই নিজের পছন্দ মতো মানুষদের পেন্টাগনের বিশেষ পদে বসান। যা পরিস্থিতি, তাতে বিশেষজ্ঞদের ভয়, গণতন্ত্রকে জলাঞ্জলি দিয়ে ট্রাম্প একনায়কতন্ত্র বা অরাজকতার পথে না হাঁটেন। ইতিমধ্যেই রাস্তায় নেমে ট্রাম্পের সমর্থকরা যে গোলমাল শুরু করেছে, তাতে চিন্তিত বহু বিশেষজ্ঞ।
বিহারে ভরাডুবির পর উত্তরপ্রদেশে মিলছে না জোটসঙ্গী, যোগীর বিরুদ্ধে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর অগ্নিপরীক্ষা