কে এই তারকিশোর এবং রেণুদেবী যাঁরা বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ সামলাবেন
ইতিমধ্যেই নয়া রেকর্ড গড়ে চতুর্থবারের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিলেন জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমার। কিন্তু ভোটের ময়দানে সাংগঠনিক শক্তি খুইয়ে খাতায় কলমে মুখ্যমন্তীত্ব আদায় করলেও এবার গেরুয়া শিবিরের কৌশলী পদক্ষেপের মোকাবিলা করতে হবে নীতীশকে। কারণ বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রীর পদে বসছেন বিজেপির পরিষদীয় দলনেতা তারকিশোর প্রসাদ ও উপনেতা রেণুদেবী।

নীতীশকে চাপে রাখতেই নতুন ছক বিজেপির
আর আগের এনডিএ আমলের থেকে বর্তমান সরকারে এই রদবদলের জেরে পদ খোয়াতে হয়েছে বিদেপি নেতা সুশীল মোদীকে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভিন্ন রাজনৈতিক দল হলেও মোদী-নীতীশ ঘনিষ্ঠতার কথা সর্বজনবিদিত। তাই জোট সরকারে বিজেপি থাকলেও গত কয়েকবছরে রাজ্যপাঠ সামলাতে বিশেষ বেগ পেতে হয়নি নীতীশ কুমারকে। এমতাবস্থা তারকিশোর প্রসাদ ও রেণুদেবীর হাতে উপমুখ্যমন্ত্রীর দায়ভার তুলে দিয়ে শুরু থেকেই নীতীশকে চাপে রাখতে চাইছে বিজেপি। এমনটাই ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

কে এই তারকিশোর আর রেণুদেবী?
কিন্তু কে এই তারকিশোর আর রেণুদেবী? প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন থেকেই রাষ্ট্রীয় স্বয়ম সেবক সংঘের একাধিক পদের গুরু দায়িত্ব সামলেছেন তারকিশোর প্রসাদ। এমনকী কট্টর হিন্দুত্ববাদী নেতা হিসাবেও ঘনিষ্ঠ মহলে বিশেষ পরিচিতি রয়েছে তার। এদিকে তারকিশোর আর রেণুদেবী দুজনেই বিহারের দুটি বিশেষ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। সহজ কথায় কালওয়ার সমাজের মধ্যেই জন্ম তারকিশোরের। যা আবার বৈশ্য সম্প্রদায়ের একটা অংশ। অন্যদিকে রেণুদেবী আবার বিহারের পিছিয়ে পড়া নোনিয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করেই রাজনীতির ময়দানের নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করেছেন।

একটানা চারবার জয়ের রেকর্ড তারকিশোরের
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিজেপি নেতা সুশীল কুমারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলে ইতিমধ্যেই বিশেষ পরিচিতি রয়েছে তারকিশোরের। এদিকে শেষ বিধানসভা নির্বাচনে কাটিহার কেন্দ্রে আরজেডি নেতা রাম প্রকাশ মাহাতো ১০ হাজারেরও বেশি ভোটে পরাজিত করে করেন তিনি। শুধু তাই নয় ২০১৫ সালের নির্বাচনেও লালুপ্রসাদ ও নীতীশ কুমারের জোড়া প্রচারের মাঝেও এই কেন্দ্র থেকে জয় লাভ করেন তিনি। এমনকী জয় এসেছিল ২০০৫ ও ২০১০ সালের নির্বাচনেও।

চারবার জয়ের রেকর্ড রয়েছে রেণুদেবীর ঝুলিতেও
অন্যদিকে বেটিয়া বিধানসভা আসন থেকেই এবারের নির্বাচনে জয়লাভ করেন বিহারের অপর এক নবনিযুক্ত মুখ্যমন্ত্রী রেণুদেবী। এবারের ভোটে ওই কেন্দ্রেই তিনি কংগ্রেসের মদন মোহন তিওয়ারিকে ১৮,০০০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। এছাড়ও ২০০০, ২০০৫, ২০১০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বেটিয়া কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করেন বিপির এই বর্ষীয়ান নেত্রী। যদিও ২০১৫ সালে আবার কংগ্রেস নেতা মদন মোহনের কাছে হেরে যান তিনি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নীতীশ সরকারের আমলে মন্ত্রীপরিষদের সদস্যও ছিলেন তিনি।

সামলেছেন এবিভিপি-র বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্বও
এদিকে ১৯৭৪ সালে কাটিহারের ডিএস কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন তারকিশোর। সেই সময়েই আরএসএসের শাখা সংগঠন আখিল ভারতীয় ছাত্র পরিষদের (এবিভিপি) এর সদস্যতাও নেন তিনি। আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগদানের আগে এবিভিপি-র বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব সামলান তিনি। এদিকে শুধু রাজননৈতিক ময়দানেই নয় অর্থের দিক দিয়েও রীতিমতো প্রভাবশালী বিহারের এই নবনিযুক্ত উপমুখ্যমন্ত্রী। ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হিসাব অনুযায়ী তারকিশোরের মোট স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ১.৯ কোটি টাকারও বেশি।
বিহারে নীতীশের মন্ত্রিসভার সম্পূর্ণ তালিকা একনজরে, কোন রাজনৈতিক সমীকরণে ভারসাম্য ক্যাবিনেটে