শুভেন্দুর জন্য নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করলেন 'দাদার অনুগামীরা'ই! তবে কি তৃণমূল ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরু
কোনও সময় ঘনিষ্ঠ বৃত্তে থাকা নেতাদের সরকারি নিরাপত্তা প্রত্যাহার আবার কোনও সময় আল্টিমেটাম, কোনও কিছুই যে তাঁকে দমাতে পারবে না, তা নিয়ে বার্তা দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী (subhendu adhikari)। ফলে কোনও আঘাত হিসেবে প্রথমেই যা আসতে পারে, তাঁর নিরাপত্তা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত। যেটা আঁচ করেই দাদার অনুগামীদের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা বন্দোবস্ত করা হল শুভেন্দু অধিকারীর জন্য। জঙ্গলমহলে দাদার অনুগামীরা ইতিমধ্যে কাজও শুরু করে দিয়েছেন।
অধীরকে ভাইফোঁটা দিয়ে পুত্রহারা মায়ের বার্তা, ২০২১-এ মুখ্যমন্ত্রী দেখতে চাই

জঙ্গলমহলে শুভেন্দুর জন্য নিরাপত্তা দল
সূত্রের খবর অনুযায়ী, জঙ্গলমহলে ইতিমধ্যেই ৮০ জন তরুণ, যুবককে নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর জন্য বিশেষ নিরাপত্তা দল গঠন করেছে দাদার অনুগামীরা। কালীপুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুভেন্দু অধিকারী যখন ঝাড়গ্রামের বিনপুর এবং গোপীবল্লভপুরে গিয়েছিলেন, সেই সময় থেকেই কাজ শুরু করেছে এই দলটি। যাত্রাপথে নজরদারির পাশাপাশি এলাকায় শুভেন্দু অধিকারী গেলে, তাঁকে ব্যারিকেড করে থাকছেন এইসব অনুগামীরা। এঁদের কেউ পরছেন শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দেওয়া টিশার্ট, কেউ কেউ আবার সাধারণ পোশাকে থেকে নজরদারি করছেন। শনিবার শুভেন্দু অধিকারী যখন ঝাড়গ্রামে গিয়েছিলেন, তখন বেশ কয়েকটি গাড়িতে নজরদারি চালিয়েছেন, দাদার অনুগামীরা।

সরকারের বরাদ্দ করা নিরাপত্তা নেন না শুভেন্দু
এর আগে শুভেন্দু অধিকারীর জন্য বুলেট প্রুফ গাড়ি বরাদ্দ করা হলেন, তিনি তা নেননি। সাধারণভাবে জঙ্গলমহলে গেলে তাঁর কনভয়ে সবমিলিয়ে পাঁচটি গাড়ি থাকে।
রাজ্যে এই মুহুর্তে জেডপ্লাস পর্যায়ের নিরাপত্তা দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি ভাইপো তথা ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, দলের পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোরকেও একই ধরনের নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে এই মূহুর্তে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, জনগণের টাকায় প্রশান্ত কিশোরকে কেন এই ধরনের নিরাপত্তা।

শুভেন্দু ঘনিষ্ঠদের নিরাপত্তা প্রত্যাহার
মুর্শিদাবাদ জেলার সভাপতি মোশারফ হোসেন শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। দলীয় নেতার স্মরণসভায় জেলা পরিষদের ৪৫ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। দলীয় পতাকাহীন সেই স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারীও। সেদিনের সেই সভার পরেই জেলা সভাধিপতি দুজন সরকারি নিরাপত্তা রক্ষী পেতেন তা প্রত্যাহার করে নেয় প্রশাসন। সভাধিপতি জানতে পারেন, তার দুজন নিরাপত্তা কর্মীকে জেলা পুলিস লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। পাল্টা সভাধিপতি জানান, তিনি কোন চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না।
অন্যদিকে, ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রাম দিবসে গোকুলনগরে সভায় হাজিরার পরেই শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত, আবু তাহের এবং মেঘনাদ পালের নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহার করে নেয় প্রশাসন। দুই নেতাই নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহারকে দুর্ভাগ্যজনক বলে বর্ণনা করেছিলেন।

তৃণমূলের তরফে সাতদিনের হুঁশিয়ারি
অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে একের পর এক অরাজনৈতিক কর্মসূচির ঘোষণা। আর সেই সব অনুষ্ঠান থেকে নাম না করে দলকে বার্তা। যাতে বেজায় মুশকিলে পড়েছে তৃণমূল। রামনগরে কালীপুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে শুভেন্দু অধিকারী ঘোষণা করেন, পরবর্তী অরাজনৈতিক কর্মী হবে ১৯ নভেম্বর সমবায় সপ্তাহ উপলক্ষে। সেখানে তিনি বলেন, যা বলতে হয়, তা করতে নেই। আর যা করতে হয়, তা বলতে নেই। এরপরেই জেলায় শুভেন্দু অধিকারীর বিরোধী হিসেবে পরিচিত অখিল গিরি বলেন, তৃণমূলের তরফে শুভেন্দু অধিকারীকে সাতদিনের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। এরপরেই এক অনুষ্ঠানে শুভেন্দু অধিকারীকে বলতে শোনা যায়, তাঁকে আটকানোর ক্ষমতা কারও নেই। সাধারণ মানুষের আশীর্বাদ, প্রার্থনাকে সঙ্গে করে তিনি এগিয়ে যাবেন।