পশ্চিমবঙ্গে 'কাঁটা' মিম জোট চায় তৃণমূলের সঙ্গে! সৌগতের মন্তব্যের পাল্টা জবাব
বিহারে তেজস্বীদের মহাজোটে অংশ নিতে না পেরে তাদের যাত্রা ভঙ্গ করেছে মিম (aimim)। এবার তারা পশ্চিমবঙ্গের শাসকের জোটে অংশ নিয়ে চায়। রাজ্যে মুসলিমদের অবহেলা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ আসাদুদ্দিনের। যদিও তৃণমূল (trinamool congress) তাদেরকে পাত্তা দিতে রাজি নয়।

বিহারের ভোটে মিমের সাফল্য
বিহারের ভোটে নিজেরা বড় কোনও সাফল্য না পেলেও, ভোট কেটে বিজেপি তথা এনডিএ-র সাফল্যের পথকে সুগম করে দিয়েছে মিম। ভোটের আগে মহাজোটে ঢুকতে চেয়ে তেজস্বীর কাছে ১০ টি আসন দাবি করেছিল আসাদুদ্দিনের দল মিম। কিন্তু তাতে মত ছিলনা তেজস্বীদের। ফলে ২০ টি আসনে প্রার্থী দেয় মিম। জিতেছে মাত্র ৫ টি আসনে। বিহারে মিমের প্রাপ্ত ভোটে হার ১.২৪ শতাংশ।

রাজ্যে ছয় জেলায় সংগঠন
মিম দাবি করেছে, গত কয়েক বছর ধরে বাংলার বিভিন্ন জেলায় তারা সংগঠনকে জোরদার করেছে। সেই জেলায় সংখ্যাটাও কম নয়। রাজ্যের ২৩ টি জেলার মধ্যে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ৬ জেলা। তার মধ্যে রয়েছে উত্তরবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর, মালদহ। অন্যদিকে দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে রয়েছে মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হাওড়া। ইতিমধ্যেই মিমের তরফে জানানো হয়েছে, তারা এই জেলাগুলিতে প্রার্থী দিতে চায়।
রাজ্যে মুর্শিদাবাদ, মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বীরভূমে মুসলিমদের সংখ্যা, মোট জনসংখ্যার যথাক্রমে ৬৬.২৮%, ৫১. ২৭%, ৪৯.৯২%, ৩৫.৫৭% এবং ৩৭.০৬%। অন্যদিকে গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির সাফল্য পাওয়া দার্জিলিং, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ায় মুসলিমদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ১০%-এর কম।

রাজ্যে ১২০ আসনে ভাগ্য নির্ধারণ করেন মুসলিমরা
২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী রাজ্যে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ২৭.০১ শতাঁশ। আর ২৯৪ টি আসনের মধ্যে ১২০ টি আসনের ভাগ্য নির্ধারণ করে থাকেন মুসলিমরা। এই তথ্য ইতিমধ্যেই রাজ্যের সবকটি রাজনৈতিক দলের কাছেই রয়েছে।

তৃণমূলের সঙ্গে জোটের রাস্তা খোলা
এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে মিম-এর মুখপাত্র জানিয়েছেন, রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে জোটের রাস্তা খোলা। কারণ তারা বিজেপি বিরোধী। তবে এব্যাপারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। না হলে তারা বিহারের মতো একাই লড়াই করবেন বলে জানিয়েছেন মিমের মুখপাত্র। তবে ওই জেলাগুলিতে কত আসনে তারা লড়াই করবেন, তা সর্বোচ্চ নেতৃত্ব ঠিক করবেন।

মিমকে নিয়ে তৃণমূল
দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় জানিয়েছে, মিম মুসলিম ভোটকে ভাগ করে বিজেপিকে সাফল্য এনে দেওয়ার জন্য কাজ করছে। তিনি বলেছেন, ওয়াইসি খুব ভাল সাংসদ। বিভিন্ন ইসলামিক ইস্যু তুলে ধরেন। তবে বাংলায় তারা কিছু করতে পারবেন না। তিনি মিমকে হায়দরাবাদ ভিত্তিক উর্দুতে কথা বলা মুসলিমদের দল বলেও মন্তব্য করেছেন। বাংলার মুসলিমরা উর্দুতে কথা বলেন না।

জবাব মিমের
যদিও সৌগত রায়ের এই কথার জবাব দিয়েছে মিম। প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং রাহুল গান্ধী যদি বাংলায় কথা বলতে পারেন এবং বাংলায় আসন জিততে পারেন, তাহলে তারা নন কেন। কেননা বাংলায় তাদের নেতারা তো বাংলায় কথা বলেন। তারাই তো প্রচার করবেন।

বিজেপির অবস্থান
অন্যদিকে বিজেপি বলছে, এটা ভুল যে তৃণমূলই শুধুমাত্র সংখ্যালঘু ভোট পেয়ে থাকে। আর বিজেপি হিন্দু ভোট পেয়ে থাকে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটেই তা প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে। এব্যাপারে দক্ষিণ মালদহ আসনের চিত্রও তারা তুলে ধরেছে। যে কেন্দ্রে ৬৪ শতাংশ ভোটার মুসলিম। সেখানে বিজেপির হিন্দু প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী পেয়েছেন ৪০ শতাংশ ভোট। তিনি কংগ্রেস প্রার্থীর কাছে ৮ হাজার ভোটে পরাজিত হয়েছেন। একইসভাবে জঙ্গিপুর কেন্দ্রে, যেখানে মুসলিম ভোটার ৮২% সেখানে বিজেপির মুসলিম প্রার্থী মেহফুজা খাতুন পেয়েছেন ৩১৭, ০০০ ভোট। কিন্তু তিনি তৃণমূলের কাছে হেরে গিয়েছেন। এই নির্বাচনে মিম কোথায় ছিল প্রশ্ন করেছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের তরফে দাবি করা হয়েছে, ২০২১-এর নির্বাচনে যদি মিম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও, তাহলেও বিজেপি ৫ থেকে ১০ শতাংশ মুসলিম ভোট পাবে।